ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম - ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায়

এই পোস্টে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম - ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কেন ফ্রিজ পরিষ্কার করতে হবে ? ফ্রিজ অপরিষ্কার থাকলে যেমন খাবার নষ্ট হয়ে যায় অনুরুপভাবে ফ্রিজও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এজন্য সঠিক উপায়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম জানা দরকার। ফ্রিজ খুললে অনেক সময় একটা বিশ্রী রকমের গন্ধ নাকে লাগে। তাই যে সকল ফ্রিজ দিয়ে গন্ধ বের হয় ঐ সকল ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করাও নিরাপদ নয়। তাই সঠিক উপায়ে ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় আপনাকে জানতে হবে।

ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম - ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায়

এই ব্যস্তময় জীবনে ফ্রিজ ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনা করা যায় না। আমরা শুধু কাঁচামাল নয়, যাদের রোজ রোজ রান্না করা সম্ভব নয় তারাও খাবার সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ ব্যবহার করে থাকি। দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্রিজ পরিষ্কার না করলে ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম - ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম

ফ্রিজ বন্ধ রাখার নিয়ম

ফ্রিজের প্লাগ যদি খুলে না তাহলে ফ্রিজ বন্ধ হয়ে যাবে। যদি সুইচ থাকে তাহলে সুইচ বন্ধ করে দিলে ফ্রিজ বন্ধ হয়ে যাবে। ফ্রিজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। আমরা মনে করি ফ্রিজের কারণে বেশি বিদ্যুৎ বিল আসে এ কারণে অনেকে রাতে ইচ্ছে করেই ফ্রিজ বন্ধ করে রাখে। যা ভূল পদক্ষেপ। ফ্রিজ বন্ধ রাখলে এটা কেবল ২/৩ ঘন্টা খাবার ঠান্ডা রাখতে সক্ষম। দীর্ঘ সময় ফ্রিজ বন্ধ রাখার কারণে ফ্রিজে থাকা রান্না করা খাবার, কাঁচা সবজি, মাছ, মাংস, দুধ এগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

ফ্রিজের কাজ হলো খাবার সতেজ রাখা। কেউ যদি চিন্তা করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য ফ্রিজ বন্ধ রাখা যেতে পারে তাহলে ঠিক হবে না। ফ্রিজ বন্ধ রাখার কারণে ভিতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ফলে ছত্রাক জন্ম নেয়। এই খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ফ্রিজ বন্ধ কারণে যতটুকু বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এর বিপরীতে পুনরায় ফ্রিজ চালু করলে কম্প্রেসারটি একই তাপমাত্রায় ফ্রিজকে ঠান্ডা করতে সময় নিবে। ফলে যতটুকু বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে অতটুকু আবার খরচ হয়ে গেল।

ওয়ালটন ফ্রিজ চালানোর নিয়ম

এখন ঘরে ঘরে ফ্রিজ। সবাই ফ্রিজ ব্যবহার করে। অথচ অনেকে আছি আমরা যারা এই ফ্রিজ চালানোর সঠিক নিয়ম জানি না। ফ্রিজ চালানোর সঠিক নিয়ম না জানার কারণে ফ্রিজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আপনার ফ্রিজকে ভালো এবং নিরাপদ রাখতে ফ্রিজ চালানোর নিয়ম জেনে নিনঃ-

১) ফ্রিজ গ্যাসের চুলা, ওয়াটার হিটার, ওভেন থেকে দূরে রাখুন। আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে এমন স্থানে ফ্রিজ রাখুন।

২) ফ্রিজের দরজা খোলা-বাধা করবেন না।

৩) ফ্রিজে তরল জাতীয় খাবার ( দুধ,জুস ) আলাদাভাবে সংরক্ষণ করুন। সবজি, মাছ-মাংস এ জাতীয় খাবার গুলো আলাদা আলাদা সংরক্ষণ করুন।

৪) ফ্রিজে রান্না করা খাবার সবার উপরে রাখুন এবং কাঁচা খাবার গুলো সবার নিচে রাখুন।

৫) যে খাবার গুলো দীর্ঘ সময়ে জন্য সংরক্ষণ করা হবে ঐ খাবার গুলো ফ্রিজারে সংরক্ষণ করুন।

৬) ফ্রিজে রাখা খাবার গুলো ঢেকে রাখবেন। নতুবা ফ্রিজের কৃত্রিম ঠান্ডা এবং খাবারের গন্ধ একত্রিত হয়ে ফ্রিজ থেকে দুর্গন্ধ বের হবে।

৭) কাঁচা মাছ, মাংস এগুলো ফুডগ্রেড প্লাস্টিকের ব্যাগে বায়ুরোধ করে সংরক্ষণ করুন।

৮) রান্না করা খাবার বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন।

৯) রান্না করা গরম খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হলে আগে রান্না করা খাবার ঠান্ডা করবেন তারপর ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন।

১০) ফ্রিজে জোরপূর্বক অতিরিক্ত খাবার রাখবেন না। এতে ফ্রিজের ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।

ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় | ফ্রিজের পচা গন্ধ দূর করার উপায় | ফ্রিজ দুর্গন্ধনাশক

আমরা যারা প্রতিদিন খাবার রান্না করতে পারি না কেবল তারাই উপলব্ধি করতে পারে ফ্রিজ কতটা মূল্যবান তাদের জন্য। যখন ফ্রিজ এতটাই মূল্যবান তখন এর যত্ন নেওয়া আবশ্যক। দুর্গন্ধযুক্ত ফ্রিজে খাবার রাখলে খাবারও দুর্গন্ধ হয়ে যায়। ফ্রিজ পরিষ্কার থাকার পরও অনেক সময় ফ্রিজ দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়। তাই এই পর্বে আমরা ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় সমূহ জানবঃ-

নিয়ম-১ঃ- ১ কাপ পানিতে ভিনেগার, লেবুর রস মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর ফ্রিজ খুললে দেখবেন ফ্রিজের গন্ধ একেবারে চলে গেছে।

নিয়ম-২ঃ- ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য ভরসা রাখুন বেকিং সোডার উপর। ১ টি পাত্রে বেকিং সোডা ভরে ফ্রিজের এক কোণে রাখুন। পরীক্ষা করে দেখবেন ফ্রিজে আগে যে দুর্গন্ধ ছিল এখন সেই দুর্গন্ধ আর নেই।

নিয়ম -৩ঃ- ফ্রিজের অপ্রত্যাশিত গন্ধ দূর করার জন্য ভরসা রাখুন কফির উপর। ১টি পাত্রে কফির গুড়ো ভরে এক কোণে রাখুন। একদিন পরে দেখুন ফ্রিজে আগে দুর্গন্ধ ছিল এখন আর নেই।

নিয়ম-৪ঃ- কফি, লেবু, কারিপাতা, নিমপাতা এই গুলোর যে উপাদান গুলো রয়েছে তা ফ্রিজের দুর্গন্ধ শোষণ করতে পারে। কারিপাতা, নিমপাতা এগুলো ফ্রিজে থাকলে পোকা-মাকড়ের বিস্তার রোধ করা যায়।

নিয়ম-৫ঃ- একটি তুলার বল এসেন্সিয়াল অয়েলে ডুবিয়ে ফ্রিজের প্রতি শেলফ বা থাকে রাখুন। এতে আপনার ফ্রিজে বিশ্রী গন্ধ থাকবে না।

নিয়ম-৬ঃ- গরম পানি + বেকিং সোডা মিশ্রিত পানি সাথে কাপড় ভিজিয়ে ফ্রিজ মুছুন। এতে করে গন্ধ হবে না।

টিপসঃ- কিছু ঘরো টিপস মেনে আপনি চাইলে এই ফ্রিজের গন্ধ দূর করতে পারেনঃ-

১) ফ্রিজের দুর্গন্ধ দেখা দিলে ফ্রিজের তাপমাত্রা কমিয়ে তাৎক্ষণিক প্রমাণ পাওয়া যায়। তাপমাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন আপনার ঘরের আর্দ্রতা কতটুকু। সেই বিষয় মাথায় রেখে আপনি ফ্রিজের তাপমাত্রা কমাবেন।

২) দীর্ঘসময় যাবত ফ্রিজে রাখা খাবারের গন্ধ এবং ফ্রিজের আর্দ্রতা একসাথে হয়ে একটি বিশ্রী গন্ধ তৈরি হয়। এজন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফ্রিজ বন্ধ করে ফ্রিজে রাখা খাবার গুলো বের করে নিন। কিছুক্ষণ ফ্রিজের দরজা খোলা রাখুন। এতে করে ‍দুর্গন্ধ যুক্ত বাতাস বের হয়ে যাবে। এরপর সুন্দর করে ভালোভাবে ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিন।

৩) অনেকদিনে ধরে খাবার ফ্রিজে রাখবেন না। মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বর্জন করুন। নিয়ম করে প্রতিদিন ফ্রিজের খাবার গুলো তদারকি করুন।

৪) ফ্রিজের খাবার গুলো এয়ারটাইট কন্টেইনারে রাখুন বা এমন পাত্রে রাখুন যে পাত্রে বায়ু প্রবেশ করতে পারে না। এই টিপসটি মেনে চললে ফ্রিজ গন্ধ হবে না।

৫) ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রীর মধ্যে রাখুন। অন্যথায় ফ্রিজের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু জন্ম নিবে এবং বিশ্রী গন্ধ তৈরি করবে।

৬) বছরে ৩ থেকে ৪ বার পুরো ফ্রিজ পরিষ্কার করবেন।

ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম

মাছ, মাংস সংরক্ষণের জন্য ডিপ ফ্রিজের কোন বিকল্প নেই। কুরবানী ঈদের সময় ডিপ ফ্রিজের উপর ব্যাপক চাপ পড়ে। তাই ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। আপনি নিজেই খুব সহজে এই ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারেন।

১) প্রথমে ফ্রিজের সুইচ অফ করুন।

২) ফ্রিজের খাবার ‍গুলো অপসারণ করুন।

২) এরপর স্প্রে বোতলে কুসুম গরম পানি নিয়ে বরফে স্প্রে করুন। এরপর রুমের ফ্যান ছেড়ে দিন। তাহলে দ্রুত বরফ গলে যাবে।

৩) কোন ভাবেই বল-প্রয়োগ করে বরফ তোলার চেষ্টা করবেন না। এতে ফ্রিজের ক্ষতি হবে।

৪) ফ্রিজ জীবাণুমুক্ত করার জন্য গরম পানির সাথে ভিনেগার মিশিয়ে স্প্রে করুন। এরপর ভালো করে পরিষ্কার করুন যাতে কোন ময়লা জমে না থাকে।

৫) এরপর হালকা কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ফ্রিজ মুছুন। খেয়াল রাখবেন কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। প্রয়োজনে শুকনো কাপড় দিয়ে আবার মুছে নিবেন।

৬) ফ্রিজের ‍সুইচ অন করে দেখুন। ফ্রিজ আগের মতো কাজ করছে কিনা।

ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম

ফ্রিজ টেকসই রাখতে এবং ফ্রিজের খাবার দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে ফ্রিজ পরিষ্কার করা দরকার। নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোর মধ্যে ফ্রিজ অন্যতম। একটানা দীর্ঘ-সময় ধরে ফ্রিজ ব্যবহারের ফলে ফ্রিজে দুর্গন্ধ হতে পারে। এই দুর্গন্ধ রোধে এবং ফ্রিজ যাতে টেকসই হয় সেজন্য ফ্রিজ পরিষ্কার করা দরকার। আপনারা সঠিক উপায়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম জানতে চেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই পর্বে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম আলোচনা করব।

ফ্রিজ বন্ধ করুনঃ- ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে ফ্রিজের সুইচ বন্ধ করুন এবং ফ্রিজের পিছনে থাকা কয়েল নরম ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করুন। ফ্রিজের সুইচ বন্ধ না করলে ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শারীরিক কোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফ্রিজ খালি করুনঃ- আপনার ফ্রিজের থাকে এবং ড্রয়ারে যতরকমের খাদ্য-সামগ্রী, মালামাল রয়েছে সব বের করুন। সম্ভব হলে ফ্রিজের থাক এবং ড্রয়ার এগুলোও ফ্রিজ থেকে বের করে নিন। এর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। যাতে ফ্রিজ সাধারণ তাপমাত্রা ফিরে আসে।

ফ্রিজ পরিষ্কারের প্রক্রিয়াঃ- ফ্রিজ পরিষ্কার করা খুবই সহজ। নিম্নলিখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে খুব সহজে দ্রুত আপনি ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারেন।

১) ফ্রিজের সব মালামাল নামিয়ে ফেলার পর ফ্রিজ থেকে বরফ সরিয়ে ফেলতে হবে। ফ্রিজের সুইচ-অফ করে রাখলে এই বরফ গলে পানি হয়ে যায়।

২) হালকা কুসুম গরম পানি + ভিনেগার বা বেকিং সোডা সুন্দর করে মিশ্রন করুন। এরপর স্পঞ্জ দিয়ে সুন্দর করে ফ্রিজ পরিষ্কার করুন। আপনার সুবিধার্তে স্পঞ্জ এর পাশাপাশি অব্যবহৃত টুথব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। এমনভাবে পরিষ্কার করুন ফ্রিজে যাতে ময়লা লেগে না থাকে।

৩) আপনি চাইলে গরম পানিতে গুড়া সাবান মিশিয়ে ফ্রিজের শেলফ বা ড্রয়ার গুলো ভিজিয়ে রাখতে পারেন। কিছুক্ষন পর স্পঞ্জ দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করুন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে শেলফ এবং ড্রয়ার গুলো ধুয়ে পানি ঝরতে দিন।

৪) ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বেকিং সোডা ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। এতে করে ফ্রিজের দুর্গন্ধ সহজে দূর হবে।

৫) হাত দিয়ে ফ্রিজ খোলার ফলে ফ্রিজের বাইরের অংশে দাগ লেগে যায়। এজন্য ফ্রিজের হাতলে কভার ব্যবহার করতে হবে। আপনি গ্লাস ক্লিনার বা হালকা কুসুম গরম পানি + ভিনেগার মেশানো পানি তোয়ালে ভিজিয়ে ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

৬) ফ্রিজের ভিতর বাইর পরিষ্কার করা হয়ে গেলে একটা পরিষ্কার কাপড় হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে মুছুন। খেয়াল রাখবেন ফ্রিজের কোথাও যেন পানি জমে না থাকে।

৭) সব কাজ কমপ্লিট হওয়ার পর ফ্রিজের সুইচ অন করে দেখুন ফ্রিজ আগের মতো চলছে কিনা।

ফ্রিজ পরিষ্কারের কিছু জরুরি টিপসঃ-

১) ফ্রিজের দুর্গন্ধের জন্য বেশিরভাগ সময় ডিপ ফ্রিজকে দায়ী করা হয়। কেননা, ডিপ ফ্রিজে অতিরিক্ত বরফ জমে। তাই ড্রিপ ফ্রিজ খুব ভালভাবে পরিষ্কার করবেন।

২) ফ্রিজ পরিষ্কারের সময় মাইক্রো-ফাইবারযুক্ত কাপড় ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

৩) দীর্ঘ-দিন ফ্রিজে খাবার রাখার ফলে দুর্গন্ধ বের হয়। এজন্য দুর্গন্ধ প্রতিরোধে ফ্রিজের ভেতর ছোট বাটিতে অল্প পরিমাণে চুন এবং ফ্রিজে কয়েক টুকরো লেবু রাখুন।

৪) ফ্রিজ পরিষ্কারের পর, ধোয়া-মোছার কাজ শেষ হয়ে গেলে ড্রয়ার এবং শেলফ গুলো ফ্রিজে সাজিয়ে নিন এবং খাবার গুলো ফ্রিজে সাজিয়ে রাখুন।

৫) ফ্রিজ কখনোও দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে রাখবেন না। ফ্রিজ আলতো ভাবে খুলুন এবং বন্ধ করুন। জোরে ফ্রিজ খোলা ও বন্ধ করলে ফ্রিজের দরজার রাবার সিল নষ্ট হয়ে যাবে। ফ্রিজের উপর ভারী জিনিস রাখবেন না।

৬) বছরে ৩/৪ বার ফ্রিজ পরিষ্কার করার করুন। এতে ফ্রিজ ভালো থাকবে।

৭) ফ্রিজে কোনভাবে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করবেন না।

৮) ওভেন, ওয়াটার হিটার, গ্যাসের চুলার আশে-পাশে ফ্রিজ রাখবেন না। কারণ গরমের মধ্যে ফ্রিজে বেশি বরফ জমে।

ফ্রিজের সমস্যা ও সমাধান

যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফ্রিজে যদি সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত সমাধান করা দরকার। ফ্রিজ ঠান্ডা না হলে ফ্রিজে রাখার খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন কারণে ফ্রিজে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফ্রিজে একটু সমস্যা হলেই আমরা টেকনেশিয়ানের কাছে যায়। ফ্রিজে ছোট-খাটো সমস্যা গুলো আপনি চাইলে নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এতে আপনার বাড়তি খরচ বেঁচে যাবে।

সার্কিট ব্রেকার পরীক্ষা করুনঃ- ফ্রিজে প্লাগ লাগানো আছে অথচ পাওয়ার পাচ্ছে না এরকম হলে সার্কিট ব্রেকার পরীক্ষা করুন। সার্কিট ব্রেকার ঠিক থাকলে পাওয়ার আউটলেট চেক করুন। প্রয়োজনে টেকনিশিয়ানের পরামর্শ নিন।

গ্যাসকেট চেক করুনঃ- পুরনো ফ্রিজে গ্যাসকেটের সমস্যা হয়। এখন গ্যাসকেটের প্রবলেম হয়েছে তা বুঝার উপায় কী ? ফ্রিজের দরজা বন্ধের সময় ফাঁকে একটি কাগজ ভাজ করে দিন। এই কাগজটি টান দিয়ে বের করা গেলে বুঝবেন গ্যাসকেটে প্রবলেম আছে। এটা বদলাতে হবে।

রেফ্রিজারেটরের ভেন্ট পরীক্ষাঃ- ফ্রিজে বায়ুপ্রবাহে সমস্যা হলে ভেন্ট পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ভেন্টে সমস্যা থাকলে ফ্রিজের তাপমাত্রা বাড়তে পারে এবং আর্দ্রতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরকম প্রবলেম গুলো দেখা দিলে টেকনিশিয়ানের পরামর্শ নিন।

ফ্রিজ ডিফ্রস্টে দিনঃ- ফ্রিজে বরফ জমে থাকার কারণে ভেন্ট ব্লকেজ হয়। সময়মতো ফ্রিজ ডিফ্রস্ট না করার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তাই ঘুমানোর আগে ফ্রিজ ডিফ্রস্ট করে রাখলে সকালে সম্পূর্ণ বরফ গলে যাবে। এবং ফ্রিজ আগের মতো ঠান্ডা হবে।

খুব বেশি জিনিস রাখবেন নাঃ- অতিরিক্ত জিনিস ফ্রিজে রাখার কারণে ফ্রিজ ঠান্ডা হতে সময় নেয়। তাই ঠাসা-ঠাসি করে খাবার না রেখে ফ্রিজে যতটুকু ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ততটুকু খাবার রাখুন। ফ্রিজের তাপমাত্রার রেগুলেটর পরিবর্তন, ইভাপোরেটর ফ্যান ভাঙার, কনডেন্সার কয়েলে ময়লা জমা কারণেও ফ্রিজ ঠান্ডা হয় না।

ফ্রিজে জোরে জোরে শব্দ করলেঃ-  ফ্রিজ দেয়াল থেকে ১০ সেন্টিমিটার দূরে রাখুন। ডিপফ্রিজে বরফ জমেছে কিনা তা খেয়াল করুন। ফ্রিজের ক্যাপাসিটর বেশি শক্তি খরচ করলে এই ধরণের শব্দ হয়ে থাকে।

ফ্রিজ ঠান্ডা না হলেঃ- অনেকের ফ্রিজ ঠান্ডা হয় না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ফ্রিজের ক্যাপাসিটরে ময়লা জমেছে কিনা তা দেখুন। ময়লা থাকলে ময়লা পরিষ্কার করুন। ফ্রিজের দরজা চেক করুন। যদি ঠিকমতো দরজা বন্ধ না হয় তাহলে বুঝতে হবে এয়ারটাইট লুস।

ফ্রিজের দরজা বন্ধ না হলেঃ- সাধারণত সীল ডিফেক্ট হলে ফ্রিজের দরজা ঠিক মতো লাগে না। ফ্রিজ পরিষ্কার করার পর অনেক সময় এ সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। তারপর যদি না হয় তাহলে দরজা পরিবর্তন করুন। খরচের বিষয় মাথায় রেখে নতুন ফ্রিজ ক্রয় করা যায় কিনা ভেবে দেখুন।

ফ্রিজে পানি জমে থাকলেঃ- ফ্রিজের ভেতরে পানি যাতায়াতের জন্য নলের ভিতর একটি ছিদ্র রয়েছে। যদি কোন কারণে এই নল ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ফ্রিজে পানি জমে যাবে। এজন্য ইহা পরিষ্কার করার জন্য চিকন ব্রাশ ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে টেকনিশিয়ানে পরামর্শ নিন।

লেখকের মন্তব্য

যত গুলো নিত্য-প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত জিনিস রয়েছে তার মধ্যে ফ্রিজ অন্যতম। ফ্রিজ একবার নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত করা যায় ঠিকই কিন্তু পূর্বের ন্যায় সার্ভিস নাও দিতে পারে। এজন্য নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসের যত্ন নেওয়া আবশ্যক।

এই পোস্টে আমরা ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম, ফ্রিজের গন্ধ দূর করার উপায় সহ আরও অন্যান্য বিষয়ে আলোকপাত করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম তথ্যবহুল পোস্ট আরও পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করার অনুরোধ রইল। এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url