মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় - মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার

এই পোস্টে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়, মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার কোন গুলো সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। অনেকে এমন রয়েছে যারা সামান্য কথা তে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যায়। মস্তিস্ক যখন গরম হয়ে যায়, ব্রেইন যখন কোন কিছু লোড নিতে পারে না তখনই মানুষ উত্তেজিত হয়ে যায়। সুতারাং আপনি যদি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় - মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় - মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার

মেজাজে পরিবর্তন বা মুড সুইং এর বেশি শিকান হন নারীরা। সারা-দিনের কাজের চাপ, টেনশন, পারিবারিক ঝামেলার কারণে মানুষের মেজাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমন অবস্থায় মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যাভাসের কারণেও মেজাজের বিশেষ পরিবর্তন হয়। চলুন তাহলে আর দেরি না করে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় - মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার  সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর খাবার

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর খাবারঃ- শরীরের গুরুত্বর্পূ অঙ্গ হলো ব্রেইন। ব্রেইন পুরো শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্থ ব্রেইন দ্বারা সুস্থ মানুষকে বোঝায়, অসুস্থ ব্রেইন দ্বারা পাগল বা উন্মাদ মানুষকে বুঝায়। শরীর ও মন সুস্থ রাখতে ব্রেইন বা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়া জরুরি। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেমনঃ- ডিম, ফুলকপি, ব্রুকলি, বাদাম, মাছের তেল, ডার্ক চকলেট, গ্রিন টি, অ্যাভোকাডো, কমলা এই খাবার গুলো মস্তিষ্কের জন্য উপকারি। যে খাবার গুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি সেই খাবার গুলো খাদ্য-তালিকায় রাখতে হবে। আর যে খাবার গুলো খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় সেই খাবার গুলো পরিহার করতে হবে। আপনারা গুগলে সার্চ করে মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর খাবার গুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলোঃ-

চিনিঃ- চা, কফি খায় না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। চা বা কফির সাথে কম-বেশী আমরা চিনি খেয়ে থাকি। তাছাড়া মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে চিনির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খেলে এটা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। চিনি যে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে তাই নয় চিনির ফ্রুকটোজ মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস করে দেয়। ফলে মানুষ যে কোন কিছু অল্পতেই ভুলে যায়।

কোল্ড ড্রিংকসঃ- খাবার খাওয়ার পর পরই অথবা গরমে একটু স্বস্থি পেতে আমরা কোল্ড ড্রিংকস পান করি। আপনি কি জানেন এই কোল্ড ড্রিংকস আপনার ব্রেইনের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে ? গবেষণায় দেখা গিয়েছে কোল্ড ড্রিংকস জাতীয় পানীয় পান করার ফলে ব্রেইন স্ট্রোকের আশংকা বেড়ে যাচ্ছে। তাই কোল্ড ড্রিংকস অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে পান করতে পারেন।

ভাজা বা পোড়া জাতীয় খাবারঃ- বিকালের নাস্তা ভাজা বা পোড়া ছাড়া চলেই না। ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার খেতে চাই না এমন লোক নাই বললেই চলে। কাবাব, চিকেন চাপ, গ্রিল, বার্গার, ফাস্ট ফুড এই জাতীয় খাবার গুলো যতই জনপ্রিয় হোক না কেন এগুলো ব্রেইনের স্বাস্থের জন্য উপযোগী নয়। এই খাবার গুলোতে প্রচুর ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে যা মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই খাবার গুলো মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস করে দেয়।

জাঙ্ক ফুডঃ- এখন খাবার মানেই জাঙ্ক ফুড। স্বাস্থ্যকর খাবারের চেয়ে মানুষ এখন মুখরোচক খাবারের দিকে বেশী ঝুঁকছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো জাঙ্ক ফুড।  চিপস, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিজ্জা এগুলো জাঙ্ক ফুডের মধ্যে অন্যতম। এক নাগাড়ে অনেক দিন এই খাবার গুলো খেলে স্মরণ শক্তি হ্রাস পেতে বেশী সময় লাগবে না। তাই এ জাতীয় খাবার গুলো খাওয়া কমিয়ে দেন আজই।

অতিরিক্ত লবণঃ- লবণ বেশীও খাওয়া যায় না আবার কমও খাওয়া যায় না। লবণ ছাড়া তরকারীও স্বাদ হয় না। লবণে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় সোডিয়াম। অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য দৈনিক ২.৫ গ্রামের বেশী লবণ খাওয়া উচিত নয়।

সাদা আটা, সাদা রুটি, সাদা পাস্তাঃ- এই খাবার গুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর মাত্রা বেশি। ইহা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এই খাবার গুলো মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। মাসিক চলছে এমন নারীদের জন্য এই খাবার গুলো বিষন্নতা বাড়িয়ে দেয়। এই খাবার গুলোর পরিবর্তে লাল চাল, লাল আটা খান। এটা কাজে দিবে।

প্রক্রিয়াজাত খাবারঃ- বাজারে এখন প্রক্রিয়া জাত খাবারে চাহিদা বেশি। প্রক্রিয়া জাত মাছ, মাংস, চিকেন, সমুচা, নাগেটস এগুলো বাজারে পাওয়া যায়। মেহমান এলে আমরা এই গুলো রান্না করে পরিবেশন করি। এই খাবার গুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

টুনা মাছঃ- অতিরিক্ত টুনা মাছ খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। স্মরণ শক্তি হ্রাস পায়  এমনকি ডিমেনশিয়া হয়ে যেতে পারে।

সয়া বড়িঃ- এখানে উচ্চ মাত্রায় লবণ থাকে এবং সোডিয়ামের মাত্রা বেশি যা থেকে হাইপার-টেনশন হতে পারে। এতে মস্তিষ্কের রক্তচাপ কমে গিয়ে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।

ধূমপান, অ্যালকোহল বা নেশাজাতীয় দ্রব্যঃ- এই গুলো সেবন করলে মস্তিষ্কের কোষ গুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে করে ব্রেইনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এজন্য ব্রেইনের সুস্থতার জন্য এই নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন পরিহার করতে হবে।

কমলার জুসঃ- অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে করে আপনার সঠিক সিধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা কমে যেতে পারে।

ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডঃ- এই প্রক্রিয়াজাত তেল যা তুলা বীজ, সূর্যমুখী, সয়াবিন এবং সাফলোয়ার বীজ থেকে নিষ্কাশিত হয় যা খেলে মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।

ডায়েট সোডাঃ- গরমে শরীর কে ঠান্ডা রাখতে আমরা ডায়েট সোডা খেয়ে থাকি। এই ডায়েট সোডা খেলে ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

লাল মাংসঃ- এগুলো শরীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে অতিরিক্ত মাত্রায় একটানা লাল মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত হয়। কারণ এখানে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে সক্ষম।

মাখনঃ- খেতে সুস্বাদু হলেও প্রতিদিন মাখন খাওয়া একেবারে উচিত নয়। প্রতিদিন মাখন খেলে তা মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়াম

মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়ামঃ- শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ও মনের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। নিয়মিত শরীর চর্চা করলে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বাড়ে, মস্তিষ্কের কোষগুলো বিকশিত হয়, সৃজনশীল বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, চিন্তাভাবনার জায়গুলো সহজ হয়, সহজে যেকোন বিষয়ের উপর সিধান্ত নেয়া যায়। আপনারা গুগলে সার্চ করে মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। যে ব্যায়াম গুলো করলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকবেঃ-

  • জোরে হাঁটা
  • দৌড়ানো
  • দড়ি লাফানো
  • সাইকেল চালানো
  • নাচের কার্ডিও ক্লাস 
  • অ্যারোবিকস 
  • নৃত্য
  • যোগ ব্যায়াম
  • ধ্যান
  • তাই চি
  • খেলাধুলা যেমনঃ- ক্রিকেট, ফুটবল, হকি সহ অন্যান্য যে খেলাধুলা করলে শরীর থেকে ঘাম ঝরে।

মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাসঃ-

  • বই পড়া 
  • লেখালেখি 
  • ছবি আঁকা 
  • ছবি তোলা 
  • দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরতে যাওয়া
  • বাগান করা
  • নিজের পছন্দের কাজ বেশি করে করা
  • বাড়িতে কোন প্রাণী পোষা যেমনঃ- পাখি, বিড়াল, মাছ চাষ, ছাদ বাগান
  • সময়ের কাজ সময়ে করা, এতে করে ব্রেইনের উপর চাপ কম পড়ে
  • পড়া পড়ার পর পুনরায় স্মরণ করার চেষ্টা করা
  • মনে মনে অঙ্ক করা
  • ডায়েরি লেখা
  • ছন্দ মেলানো
  • রুবিকস কিউব
  • সুডোকু
  • জিগস পাজল,
  • ক্রসওয়ার্ড পাজল
  • দাবা খেলা
  • অপরিচিত বই পড়া, অপরিচিত জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বাড়ানো
  • নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করা যেমনঃ- রান্না শেখা, অদৃশ্য কোন কিছু আয়ত্ত করার চেষ্টা করা, আঞ্চলিক বা ভিন্ন দেশের ভাষা শেখা, কারিগরি কোন কাজ শেখা যেখানে মাথা খাটাতে হয়।

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর বদঅভ্যাস

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর বদঅভ্যাসঃ- মানুষের পুরো শরীর মস্তিষ্কের উপর সরাসরি নির্ভরশীল। ব্রেইন যেভাবে সংকেত দেয় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সেভাবে কাজ করে। কিছু কিছু বদঅভ্যাস যা আমরা লালন করে থাকি। এই বদঅভ্যাস গুলোর কারণে আমাদের অকেজো হয়ে পড়ে। যার ফলে কাজে-কর্মে সৃজনশীল জ্ঞান, বুদ্ধিভিত্তিক জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না। বর্তমান সময় প্রযুক্তির যুগ, এ সময় যেকোন বয়সের মানুষ মোবাইলের প্রতি একটু বেশি আসক্ত। আর এ কারণেই আমাদের ব্রেইন  কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে। মস্তিষ্কের জন্য এমন কিছু ক্ষতিকর বদঅভ্যাস আছে যা আমাদের অজানা। চলুন এখন আমরা সেগুলো জানবঃ-    

অপর্যাপ্ত ঘুমঃ- ব্রেইন সচল রাখতে ঘুম অপরিহার্য। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তির দৈনিক ৬-৮ ঘন্টা ঘুম দরকার। দিনের যেকোন সময়ের ঘুমের চেয়ে রাতের ঘুম উত্তম। কিন্তু আজকাল দেখা যায় রাতের বেলা ঘুমের সময় মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। যার কারণে সময় মতো ঘুম হয় না। যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর। 

ঘুমের মাধ্যমে ব্রেইন বিশ্রাম নেয়, নতুন কোষ তৈরি করে, ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে। ঘুমের অভাবে কোন কিছু মনে থাকে না, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যাও ধরা পড়ে। এজন্য ঘুমের পূর্বে ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করুন, রুমের লাইট বন্ধ করুন, সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

সকালের নাস্তায় অবহেলাঃ- নিয়ম হলো সকালের খাবার পেট ভরে খাওয়া, কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমরা সকালে খেতে হয় বিলম্ব করি না হয় এক নিয়মে অবহেলা করি। সারা রাত না খাওয়ার পর সকালের নাস্তা খেতে যখন আমরা অবহেলা করি, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে তার প্রভাব মস্তিষ্কে গিয়ে পড়ে। এতে ব্রেইনের কোষ গুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে।

পর্যাপ্ত পানি পান না করাঃ- ব্রেইন কে সতেজ, প্রাণবন্ত রাখতে পানি অপরিহার্য।  আমাদের ব্রেইনের ৭৫ শতাংশ পানি। যদি পানি স্বল্পতা দেখা যায় তার প্রভাব ব্রেইনে গিয়ে পড়ে। এতে করে ব্রেইনের টিস্যু গুলো সংকুচিত হয়ে যায়। কোষ গুলো কার্যকারিতা হারায় যথা সময়ে সিধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। এজন্য কিছুক্ষণ পর পর পানি খাওয়া দরকার।

অতিরিক্ত চাপঃ- কাজের চাপ, পারিবারিক টেনশন নানান কারণে যখন আমরা মেন্টালি ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এর প্রভাব মস্তিষ্কে গিয়ে পড়ে। এতে করে মস্তিষ্কের কোষ গুলো মারা যায়। অসুস্থ অবস্থায় অনেকে বিশ্রাম না নিয়ে জোর দিয়ে কাজ করে এতে করে নেতিবাচক প্রভাব ব্রেইনে গিয়ে পড়ে। তাই এসময় বিশ্রাম নেওয়াটা সব থেকে ভালো।

অলস সময় পার করাঃ- অনেকে ঘরে শুয়ে-বসে দিন কাটায় আবার ‍ছুটির দিন আসলে সারাদিন শুয়ে-বসে অলস সময় পার করে। কায়িক পরিশ্রম না করার কারণে হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এতে করে ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ব্রেইনকে সুস্থ রাখতে এই ক্ষতিকর অভ্যাস গুলো আজই ত্যাগ করুন।

বই না পড়াঃ- শরীর ঠিক রাখতে যেমন ব্যায়াম করার দরকার হয় অনুরুপ ভাবে মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে ব্যায়াম অপরিহার্য। মস্তিষ্কের ব্যায়ামের জন্য বইয়ের কোন বিকল্প নেই। আগের প্রজন্ম ছোট খাটো যে কোন বিষয় মুখে মুখে হিসেব করে ফেলতো কিন্তু আজই ক্যালকুলেটর ছাড়া হিসাব করা যায় না। তথ্য-প্রযুক্তির জামানায় মানুষ এখন গুগলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অজানা জিনিস গুগলে সার্চ করে মুহুর্তের মধ্যে পেয়ে যাচ্ছে। এতে করে মানুষের বই পড়ার প্রবণতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ফলে মানুষের চিন্তা-শক্তি, স্মৃতি-শক্তি হ্রাস পাচ্ছে।

কানে হেডফোন ব্যবহার করে গান শোনাঃ- যেসব জায়গায় সাউন্ড বেশি সেসব এলাকায় বসবাসরত মানুষদের শ্রবণ শক্তি হ্রাস পায়। আপনি যদি কানে হেডফোন দিয়ে মিউজিক শোনেন এতে করে আপনার শ্রবণ শক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একবার যদি শ্রবণ শক্তি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পুনরায় চিকিৎসার মাধ্যমে তা সমাধান করা যায় না। এর নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি ব্রেইনের উপর গিয়ে পড়ে। তাই কানে হেডফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

একাকীত্ব জীবনঃ- সারাক্ষণ একা একা থাকা, কারো সাথে না মিশা এতে করে নেতিবাচক প্রভাব ব্রেইনের উপর পড়ে। মানুষের সাথে কথা-বলা, আড্ডা দেয়া, হাসি-খুশি থাকা এগুলো ব্রেইনের স্বাস্থের জন্য অপরিহার্য। যখন আপনি একাকী থাকবেন তখন হতাশা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা আপনার উপর ভর করবে এর ফলে ডিমেনশিয়া, আলঝেইমার্স রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওযার আশংকা রয়েছে।

নেতিবাচক চিন্তাঃ- প্রচলিত কিছু নেতিবাচক মতবাদ আছে যেমনঃ- আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার এরকম নেতিবাচক মতবাদের কারণে হতাশা, চাপ, উদ্বিগ্ন দেখা যায় এতে করে মানুষ এক পর্যায়ে আত্ন-হত্যার পথ বেছে নেয়। নেতিবাচক চিন্তার কারণে ব্রেইনে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইলয়েড জমে ফলে ডিমেনশিয়া ও আলেঝেইমার্স রোগের আশংকা বেড়ে যায়। তাই নেতিবাচক চিন্তা আসলে থামিয়ে দিন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।

অন্ধকারে সময় কাটানোঃ- ব্রেইনের জন্য সূর্যের আলোর সংস্পর্শ পাওয়া জরুরি। দীর্ঘক্ষণ অন্ধকার ঘরে সময় কাটানোর ফলে মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক চাপ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে হতাশা, উদ্বিগ্ন ভর করে। যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর।

খাদ্যাভ্যাসঃ- বাসায় সুস্বাদু তরকারি রান্না হলে বা বিয়ের বাড়িতে গেলে পেট ভর্তি করে খায়। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ধমনী গুলোতে কোলেস্টেরল জমে যায় এর কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ভিন্ন ঘটে। জাঙ্ক ফুড, ভাজা পোড়া, চিনি যুক্ত খাবার, কোমল পানীয় এগুলো বেশি খাওয়া যায় না। এর ফলে ডিমেনশিয়ার মতো রোগ হতে পারে। ধূমপান, মদ্যপান এগুলো ব্রেইনের স্নায়ু সংকুচিত করে দেয়। ফলে স্মৃতি-শক্তি লোপ পায়।

অতিরিক্ত স্কিন টাইমঃ- দীর্ঘক্ষণ ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে মস্তিষ্কের আকার এবং বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়। অনেক সময় মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরা, মস্তিষ্কের টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এজন্য একনাগারের দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কমিয়ে দেওয়ার লাগবে। 

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কৌশল


স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কৌশলঃ- অনেকে আছে এমন যারা অল্পতেই যেকোন পড়া, কথা বা যেকোন জিনিস ভুলে যায় তাদের জন্য আসলে কোন কিছু দীর্ঘসময় ধরে মনে রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। আপনি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অথচ আপনি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না। একে আমরা ভুলে যাওয়া রোগ বলি।  এজন্য স্মরণ-শক্তি বাড়াতে মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা খুবই জরুরি। এখন আমরা স্মরণ-শক্তি বৃদ্ধির কৌশল জানবঃ-

ব্যায়াম করাঃ- ব্যায়াম করলে যে শুধু পেশি মজবুত হয় এমনটা নয়, ব্যায়ামের প্রভাব মস্তিষ্কে গিয়ে পড়ে। ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌছায়, এতে ব্রেইনের কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ব্রেইনের সক্ষমতা বাড়ে। ভারী ব্যায়াম করতে না পারলে সাধারণ ব্যায়াম যেমনঃ- হাঁটা চলা করা করতে থাকুন। ইহা ব্রেইনের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারি।

মেডিটেশনঃ- স্মৃতি-শক্তি বাড়াতে মেডিটেশন এর বিকল্প নেই। মেডিটেশন ধৈর্য্য সহকারে করতে হয়। বেশিরভাগ মানুষ কয়েকদিন মেডিটেশন করার পর ছেড়ে দেয় এতে কোন উপকার পাওয়া যায় না। তাই ফলাফল পেতে রোজ নিয়ম করে মেডিটেশন করুন। এতে উপকার মিলবে।

নামাজ পড়া, নিয়মিত বই পড়াঃ- সময় মতো নামাজ আদায় করলে মনে এক ধরণের আধ্যাত্নিক শান্তি উপভোগ করা যায়। যা ব্রেইনকে চাঙ্গা রাখতে সহায়তা করে। মস্তিষ্কের ব্যায়ামের জন্য বই পড়া আবশ্যক। বই পড়লে চিন্তা-শক্তি বাড়ে, সৃজনশীল জায়গুলো বিকশিত হয়, উপস্থিত বুদ্ধির পরিসর বৃদ্ধি পায়। এজন্য রোজ নিয়ম করে ধীরে ধীরে বই পড়ুন। ইহা আপনার মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করবে।

পর্যাপ্ত ঘুমঃ- সারাদিন পরিশ্রম করার ফলে আমাদের ব্রেইন ক্লান্ত হয়ে যায়। ঘুমের মধ্য দিয়ে ব্রেইনের কোষ গুলো নতুন করে ডেভেলপ হয়। মস্তিষ্কের বিশ্রামের জন্য রাতের ঘুম আবশ্যক। ঘুম আমাদের ব্রেইনকে ঠান্ডা রাখে, সতেজ রাখে, স্মৃতিশক্তি ত্বরাণ্বিত করে।

খাদ্যাভ্যাসঃ- শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে গতিশীল করতে খাদ্য আবশ্যক। প্রতিদিন ডায়েটে একমুঠো বাদাম রাখলে তা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। দুধ, মাখন, মাছের তেল, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ‍গুলো খাদ্য তালিকায় বেশি করে রাখুন। নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন। চিনি জাতীয় খাবার গুলো কম পরিমাণ খান।

নতুন কিছু করাঃ- জীবন ধারায় কিছু পরিবর্তন আনা। একই নিয়মে জীবন যাপনের কারণে ব্রেইন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। নিত্য-নতুন বিষয় গুলো আয়ত্ত করা যেমনঃ- নতুন ছবি আঁকা, বাগান করা, রান্না করা, কোথাও ঘুরতে যাওয়া, মাঝে মাঝে পুরনো বন্ধুদের সাথে আড্ডা, গল্প গুজব করা এতে করে ব্রেইন প্রাণবন্ত হয়। ফলে ব্রেইন যেকোন কিছু সহজে স্মরণ রাখতে পারে।

মনে রাখার টেকনিকঃ- পড়াশোনা করার আদর্শ সময় হলো ভোর বেলা। সারা-রাত ঘুমানোর ফলে ব্রেইন কর্মক্ষম হয়ে উঠে যেকোন কিছু পড়লে সহজে মনে রাখা যায়। প্রয়োজনে হ্যান্ড নোট করুন। ডায়েরি তৈরি করুন। এতে মনে রাখা আরও সহজ হবে।

চিত্রায়িত করাঃ- আপনি যা পড়েছেন বা শুনছেন তা কল্পনার জগত চিত্রায়িত করুন। এতে করে সহজে তা চট করে মনে পড়ে যাবে। এজন্য দেখবেন যে ক্লাস গুলো প্র‌্যাকটিক্যাল হয়ে থাকে সে পড়া গুলো মনে রাখা সহজ হয়।

ঘুমানো আগেঃ- যারা পড়া মনে রাখতে পারেন না তারা রাতে ঘুমানোর আগে হালকা করে পড়া রিভিশন দিয়ে নিন। এতে করে ঐ পড়াটা সহজে আপনার ব্রেইন ধারণ করে নিবে। সকালে উঠে ঐ একই বার পড়া আবার রিভিশন দিয়ে নিন। এতে করে পড়া ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।

ফোকাসঃ- একই সাথে একই সময়ে আমরা একাধিক কাজ করি। এই পদ্ধতি খুব একটা লাভজনক নয়। অনেকে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ফোন চালায় এমনটা না করাই ভালো। পড়ার সময় পড়ার উপর মনোযোগ দিন, ফোন চালানোর জন্য নিদিৃষ্ট একটি সময় বাছাই করুন। ঐ সময় শুধু ফোন চালাবেন। অর্থ্যাৎ একই সাথে একাধিক কাজে মনোযোগ না দিয়ে কেবল একটি মাত্র কাজে মনোযোগ দিন।

মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুনঃ- যান্ত্রিক এই সভ্যতার যুগে চাইলে মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায় না। অফিসে কাজের চাপ, বাসায় পরিবারের চাপ সব মিলিয়ে একজন ব্যাক্তির জীবন যাযাবর হয়ে যায়। এই মানসিক চাপের কারণে আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা লোপ পাচ্ছে। যারা টেনশন মুক্ত থাকে তারা অন্যান্য যেকোন ব্যাক্তির তুলনায় যেকোন বিষয় সহজে স্মরণে রাখতে পারে। মানুষের কথায় কান না দিয়ে নিজেই নিজের পছন্দ মতো জীবন গড়ে তুলুন। এতে আপনি অনেক আনন্দিত হবেন।

সময় মতো কাজ করাঃ- সময় মতো কাজ না করলে সেটা মানসিকভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করে। এজন্য সময় মতো কাজ করুন, যারা শিক্ষার্থী তারা সময় মতো পড়াশোনা করুন। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারলে আপনি মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকবেন।

নিজের ভাষায় অনুবাদ করাঃ- এমন কিছু জটিল তথ্য থাকে যা সহজে মনে রাখা যায় না। ঐ সকল জটিল তথ্য গুলো নিজের ভাষায় অনুবাদ করুন। ফলে তা সহজে মনে রাখা যাবে।

ইন্টারনেট কম ব্যবহারঃ- যেকোন তথ্য বা পড়া অনুসন্ধানের জন্য আমরা গুগলে ‍গিয়ে সার্চ করি।  এতে করে বই পড়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়। বই পড়ার অভ্যাস যদি না থাকে তাহলে স্মরণ শক্তি আপনা-আপনি লোপ পায়। এজন্য ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল না হয়ে বই পড়ার অভ্যাস করুন।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধঃ- আপনি যদি ঘরোয়া উপায়ে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনাকে খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু বাজে স্বভাব পরিবর্তন করতে হবে। স্মৃতি-শক্তি লোপ পাওয়ার নানান কারণ রয়েছে যেমনঃ- ঘুমের অসুবিধা, মানসিক চাপ, অপুষ্টি, শারীরিক রোগ ইত্যাদি। কিছু টিপস দেওয়া হলো এগুলো মেনে চলুন আশা করি অবশ্যই উপকৃত হবেন।

যে সকল খাবার খেলে স্মৃতি-শক্তি বাড়েঃ-

  • কাঠবাদাম
  • মধু
  • দারুচিনি
  • ডার্ক চকলেট
  • তৈলাক্ত মাছ
  • ব্লুবেরি
  • ওটস
  • আখরোট
  • কাজু বাদাম
  • পেস্তা বাদাম
  • কুমড়োর বীজ
  • সূর্যমুখীর বীজ
  • তিল বীজ
  • গ্রিন টি
  • ওমেগা–থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
  • বিভিন্ন মৌসুমী ফল, শাকসবজি

যে সকল অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবেঃ-

  • রাতা জাগা বন্ধ করুন
  • দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • চিনি জাতীয় খাবার, ধূমপান, ভাজা পোড়া, কোল্ড ডি্রংকস, অতিরিক্ত লবণ, সাদা আটা, সাদা রুটি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, টুনা মাছ, সয়া বড়ি পরিহার করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। সহজ ব্যায়াম হাঁটা-চলা করা।
  • নামাজ পড়ুুন, বই পড়ুন, ছবি আঁকুন
  • উপরের প্যারায় বর্ণিত মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়াম গুলো করতে থাকুন।
  • সকালের নাস্তা দ্রুত করুন।
  • বেশি করে পানি পান করুন।
  • অতিরিক্ত চাপ নিবেন না।
  • অলস ভাবে বসে না থেকে নিজেকে কোন না কোন কাজে ব্যস্ত রাখুন।
  • নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন।
  • একা একা চলাফেরা করা, একা থাকা বন্ধ করুন। সামাজিক হওয়ার চেষ্টা করুন।

মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার

মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবারঃ- এমন মানুষ আছে যারা অল্পতেই রেগে যায় আবার এমনও আছে যারা সহজে রাগান্বিত হয় না। কিছু খাবার যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর খেলে মেজাজ খিট-খিটে হয়ে যায়। এজন্য আমাদের খাবার গ্রহণের পূর্বে স্বাস্থ্যকর খাবার বাছাই করা দরকার। যা খেলে ব্রেইন সতেজ থাকবে। নিচে কিছু খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো যেগুলো খেলে আপনার ব্রেইন ঠান্ডা থাকবেঃ-

  • জিংক সমৃদ্ধ খাবার
  • ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
  • ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
  • মটরশুঁটি
  • ওমগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার
  • ডালিম বা আনার
  • চা, কফি
  • ডিম
  • দুধ
  • কমলা লেবু
  • পালংশাক
  • কলা
  • ব্রকলি
  • হলুদ
  • ওটসমিল
  • পাউরুটি
  • অ্যাভোকাডো
  • ডার্ক-চকলেট
  • হলুদ,সবুজ জাতীয় শাক-সবজি ফলমূল
  • বেরি জাতীয় ফল যেমনঃ- ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি
  • বাদাম যেমনঃ- কাঠবাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট, কাজু বাদাম, চিনাবাদাম ইত্যাদি
  • বীজ যেমনঃ- কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, তিল বীজ ইত্যাদি।
  • চর্বিযুক্ত মাছ যেমনঃ- স্যামন, সার্ডিনস, তেলাপিয়া ইত্যাদি

মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়

মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়ঃ- প্রতিকূল পরিবেশে ব্রেইনকে ঠান্ডা রাখতে আমাদের বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলতে হবে। যদি আমরা আমাদের মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে না পারি তাহলে অনেক সহজ কাজ আমাদের কাছে কঠিন লাগবে। উদাহারণঃ- যদি আপনার ম্যাথ পরীক্ষা হয় তাহলে আপনার শিক্ষক আপনাকে প্রথমে সহজ ম্যাথ করার পরামর্শ দিবে। যদি পরীক্ষা জটিল ম্যাথ দিয়ে শুরু করেন আর যদি ভূল হয় তাহলে ঐ পরীক্ষাটা কঠিন হয়ে যাবে। এজন্য মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে আমাদের যেমন কিছু ট্রিকস মেনে চলতে হয় অনুরুপভাবে দৈনন্দিন জীবনের কিছু অভ্যাস মেনে চলতে হয় তাহলে আশানুরুপ রেজাল্ট পাওয়া যায়।

  • অতিরিক্ত কথা না বলা
  • নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করা
  • ইন্টারনেটে আসক্ত না হওয়া, ইউটিউব-ফেসবুক কম ব্যবহার করা।
  • কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেজে শান্ত রাখার চেষ্টা করা
  • বেশি বেশি পানি পান করা
  • রোজ শরীর চর্চা করা
  • উপরে বর্ণিত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গুলো বেশি করে খাওয়া 
  • কাজে ফাঁকে বিরতি নিন
  • নতুন চ্যালেঞ্জ কে স্বাগত জানান
  • বেশি বেশি বই পড়ুন
  • টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখুন
  • উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করুন
  • কিছুক্ষণ চোখ বুজে থাকুন
  • পক্ষে-বিপক্ষে সব কিছু হাসি-মুখে গ্রহণ করুন
  • নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখুন
  • যে ভালো কাজ আপনি পছন্দ করেন ঐ কাজ বেশি করে করুন
  • মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ঐ সকল খাবার পরিহার করুন, যা প্রথম প্যারায় বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে

উপসংহার

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই পোস্টে মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর খাবার, মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়াম, মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর বদঅভ্যাস, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কৌশল, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ, মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার খাবার ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট আরও পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url