কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 - কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা: আপডেট
আপনারা যারা কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য এই পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে। সাথে কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোক পাত করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ কাজের খোঁজে কানাডা সফর করে। কানাডা সরকারি ভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়ে থাকে। এখন আমরা কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 - কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানব।
কানাডা বড় বড় কোম্পানি গুলো প্রতিবছর কাজের জন্য সার্কুলার ছাড়ে। সেখানে সার্কুলার অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদন করলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 - কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024
- কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা
- সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৪
- কানাডা যেতে কত বয়স লাগে
- কানাডা যাওয়ার খরচ কত ২০২৪ | কানাডা যাওয়ার খরচ কত ২০২৩ | কানাডায় যেতে কত টাকা লাগে
- কানাডা ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত- জরুরি প্রশ্নের উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024
প্রায় প্রতিবছর লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী কানাডায় অভিবাসী হিসেবে আসে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কানাডায় আসার পর সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর স্থায়ীভাবে সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করে। অনেকের চিন্তা ভাবনা এরকম যে কাজের ভিসায় কানাডায় যাওয়ার পর সেখান থেকে কাজ খুঁজে নিতে হয়, বিষয়টি মোটেও এমন নয়। কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ছাড়ে সেখানকার (কানাডা) শ্রম বাজারে কাজের চাহিদার উপর। এখানে নিয়মটা হলোঃ- কানাডার কোন কোম্পানি যখন কাজের সার্কুলার ছাড়ে তখন নিদিৃষ্ট সংখ্যক জনবল পাওয়া না গেলে সেক্ষত্রে ঐ কোম্পানি কানাডা সরকারের কাছে আবেদন করে বাহিরের দেশ জনবল আনার জন্য।
আরো পড়ুনঃ- কাতারে কোন কাজের চাহিদা বেশি - কাতার ভিসা প্রসেসিং
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে মানুষ কানাডা আসতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এই ধরণের চাকরির বিজ্ঞপ্তি www.indeed.com এই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে CV দেখাতে হয়, যদি পছন্দ হয় তাহলে আপনাকে ইন্টারভিউ জন্য ডাকবে, এই ইন্টারভিউ অনলাইনে হয়ে থাকে। যদি তারা আপনাকে যোগ্য মনে করে তাহলে এ কোম্পানি Labor Market Impact Assessment (LMIA) জন্য কানাডা সরকারের নিকট আবেদন করবে।
এরপর কানাডা সরকার যাচাই-বাচাই করবে এবং দেখবে ঐ কোম্পানি সঠিক জনবল নিচ্ছে কিনা নাকি কানাডা লোক নিয়ে আসার জন্য ঐ কোম্পানি ব্যবসা শুরু করছে। সব কিছু যাচাই-বাচাই করার পর গ্রহণযোগ্য মনে হলে কানাডা সরকার Labor Market Impact Assessment (LMIA) ইস্যু করবে। LMIA ইস্যুর পর আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত ১/২ বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়া হয়। কয়েক বছর কানাডায় কাজ করার পর আপনি স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যে সকল চাকরিতে LMIA ইস্যু করা হয়
- বিভিন্ন ওল্ড হোমে সাপোর্ট ওয়ার্কার
- হেভি ট্রাক ড্রাইভার
- ইন্ডিয়ান বা চায়নিজ রেস্তোরাঁয় শেফ
- বিক্রয় কর্মী
- নির্মাণ শ্রমিক
- ক্লিনার
- কৃষি কাজ
- ডেলিভারী ম্যান
- ড্রাইভিং
- হোটেল বা রেষ্টুরেন্ট জব
- ইলেকেট্রিশিয়ান
- কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারসহ বেশ কিছু টেকনিক্যাল
- বিভিন্ন টেকনিক্যাল কাজের জন্য
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন
সরকারি ভাবে আবেদন করতে হলেঃ- বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও যুব উন্নয়ন কেন্দ্র যোগাযোগ করতে হবে।
বেসরকারিভাবে আবেদন করতে হলেঃ- বাংলাদেশ ও কানাডা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ভিসা অফিসে গিয়ে ফরম সংগ্রহ করে তা পূরণ করে জমা দিতে হবে।
এক্ষেত্রে LMIA নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। এই নাম্বারটি কানাডা সরকার প্রদান করে থাকে। ভিসা আবেদনের জন্য ফরম ফিলাপের কাজটি অনলাইনে করতে হয়। যদি আপনি না পারেন তাহলে একজন অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সহায়তা নিবেন। কানাডা ভিসা আবেদন অনলাইন লিংকঃ- www.canada.ca.
অনলাইনে কানাডা ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করবেন যেভাবেঃ-
১) প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট canada.ca/en/immigration এখানে প্রবেশ করুন।
২) এর পর Menu অপশন থেকে Immigration and citizenship সিলেক্ট করুন। এরপর My Application ক্লিক করুন।
৩) এর পর Sign in to your IRCC account ক্লিক করে করে একটি একাউন্ট তৈরি করুন।
৪) রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন অপশনে ক্লিক করলে আপনার জি-মেইলে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠাবে সেটা বসিয়ে দিলে আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।
৫) এর পর Find an application form এ ক্লিক করে ভিসা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এর পর যা ডকুমেন্ট চাইবে তা দিবেন। এক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সহায়তা নিলে ভালো হয়।
৬) এর পর ফি পরিশোধ করতে হবে। ফি পরিশোধ করা হলে আপনার আবেদন সম্পন্ন হবে।
কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা
কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরি ও আপনি কোন উদ্দেশ্যে কানাডা যেতে চান সেটার উপর নির্ভর করে। তবে কিছু কিছু আবশ্যিক বিষয় রয়েছে যেগুলো সব ভিসা ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে একই রকম। তবে বেশির ভাগ মানুষ কানাডা সফর করে ভ্রমণ, পড়াশোনা, জবের উদ্দেশ্য।
কানাডা যেতে সব ভিসার ক্ষেত্রে যে ডকুমেন্টস থাকা বাধ্যতামূলক
- পুলিশ ভ্যারিফিকেশন/ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- বৈধ পাসপোর্ট
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
এগুলো ছাড়াও যদি আরও অন্যান্য তথ্যের দরকার হয় তাহলে সেগুলো দিতে হবে।
ভিসা ক্যটাগরি অনুযায়ী যে যে যোগ্যতা/ডকুমেন্টস থাকা দরকার
স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রেঃ-
- IELTS স্কোর সর্বনিম্ন ৬
- কানাডার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া লেটার পত্র
- স্টুডেন্ট আইডেন্টিটি প্রমাণের জন্য প্রয়াজনীয় ডকুমেন্টস
টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রেঃ-
- অতীতে কোন দেশে সফর করেছেন তার প্রমাণ পত্র
- হোটেল বুকিংস ডকুমেন্টস
- সর্বনিম্ন ব্যাংকের ব্যালন্স ১০ লক্ষ টাকা
ওয়ার্ক-পারমিট ভিসার ক্ষেত্রেঃ-
- LMIA নাম্বার
- কোন কোম্পানি জব পেয়েছেন তার ডকুমেন্টস
- বয়স ৪৫ বছরের কম হতে হবে।
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৪
আপনি যদি সরকারিভাবে স্বপ্নের দেশ কানাডা যেতে চান ? তাহলে এই পর্বটি আপনার জন্য। আমাদের দেশ থেকে সাধারণত স্টুডেন্ট, টুরিস্ট, ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কানাডায় সফর করা হয়।
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার জন্য যা লাগবেঃ- জাতীয় পরিচয় পত্র, মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট, IELTS স্কোর ৬ হওয়া লাগবে। উপরের প্যারায় কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ঐ প্যারাটি পড়ে নিন। তাছাড়া অনলাইনে কানাডা ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করবেন যেভাবে এই প্যারাটি পড়ে নিন। এই ভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আপনি সরকারি ভাবে কানাডা যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
কানাডা হাই কমিশনে যোগাযোগের ঠিকানাঃ- জাতিসংঘ সড়ক, বারিধারা, ঢাকা -১২১২, বাংলাদেশ।
কানাডা যেতে কত বয়স লাগে
কানাডা যেতে কত বয়স লাগেঃ- যদি আপনি স্বপ্নের দেশ কানাডা সফর করতে চান তাহলে বয়স বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কাজের জন্য কানাডা গেলে ভিসা অনুযায়ী বা জাতীয় পরিচয় পত্র অনুয়ায়ী বয়স আপনার ২১ হতে হবে। আর পড়াশোনা ভিসায় গেলে বয়স ১৮ বছর হওয়া লাগবে।
কানাডা যাওয়ার খরচ কত ২০২৪ | কানাডা যাওয়ার খরচ কত ২০২৩ | কানাডায় যেতে কত টাকা লাগে
কানাডা সরকারিভাবে গেলে ৭ থেকে ৯ লক্ষ টাকা লাগে বেসরকারিভাবে গেলে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ সহ ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
কানাডা ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত
কানাডা ড্রাইভিং ভিসা বেতন কতঃ- কানাডা ড্রাইভিং ভিসা বেতন গেলে ৫০০০ থেকে ৮০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। সেজন্য আপনাকে দেশ থেকে ড্রাইভিং শিখে যেতে হবে। ড্রাইভিং সার্টিফিকেট থাকতে হবে। ড্রাইভিং ভিসা ছাড়লে আবেদন করতে হবে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত- জরুরি প্রশ্নের উত্তর
১) কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত
উত্তরঃ- সরকারিভাবে ওয়ার্ক-পারমিট ভিসার খরচ ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা।
২) কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত টাকা
উত্তরঃ- এজেন্সির মাধ্যমে অর্থ্যাৎ বেসরকারিভাবে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ১০ থেকে ১২ লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
৩) কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বেতন কত
উত্তরঃ- যোগ্যতা, কাজের ধরণ অনুযায়ী এর বেতন নির্ধারণ হয়ে থাকে। সাধারণ কাজ যেমনঃ- ড্রাইভার, শেফ, ওয়েটার, টেকনিশিয়ানদের বেতন ৭০ থেকে ৯০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে যারা যোগ্যতা সম্পন্ন কাজ করে তাদের বেতন ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৪) কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
উত্তরঃ- ভিসা তৈরি, বিমান ভাড়া, আরও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ সহ সব মিলিয়ে কানাডা যেতে হলে নূন্যতম ১৫-১৭ লক্ষ টাকা হ্যান্ড-ক্যাশ রাখতে হবে।
৫) কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে কি কি লাগে
উত্তরঃ- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আপনি যে কাজে পারদর্শী তার সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ পত্র, নূন্যতম ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট, অনলাইন আবেদন ফরম, ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট, জব অফার লেটার, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, LMIA কপি, মেডিকেল রিপোর্ট, ভিসার আবেদন ফিস এর ডকুমেন্ট ইত্যাদি।
লেখকের মন্তব্য
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024 নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভিসা খরচ এগুলো কিন্তু যেকোন সময় পরিবর্তন ( কম/বেশি) হতে পারে। দালাল কিংবা অসাধু এজেন্সি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা, এরাই সিন্ডিকেট করে ভিসা খরচ বাড়িয়ে দেয়।
এই রকম তথ্যবহুল পোস্ট আরও পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। কেননা, আমাদের সাইটে এই ধরণের প্রতিনিয়ত পোস্ট পাবলিশ করা হয়। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি, এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url