দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত - খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

এই পোস্টে দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় নিয়ে আলোচনা করা হবে। খেজুর নিঃসন্দেহে পুষ্টিকর একটি ফল। প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যে কোন পুষ্টিকর খাবার থেকে আপনি তখনই উপকার পাবেন যখন আপনি তা পরিমিত পরিমাণে সঠিক সময়ে খাবেন। তাই এখন আমরা এই পোস্টে  দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত - খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় নিয়ে আলোচনা করব।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত - খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

যেকোন বয়সের মানুষের পছন্দের ড্রাই ফ্রুটস খেজুর। খেজুরের উপকারিতা জেনে আমরা রীতি মতো বিস্মিত হই। অনেকে খেজুরের উপকারিতা দ্রুত ভোগ করতে দৈনিক ১০/১২ খেজুর খেয়ে থাকি। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্য সম্মত নয়। চলুন তাহলে আর দেরি না করে  দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত - খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিতঃ- খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে এই লিংকে চাপ দিন। খেজুর খেলে কি কি উপকার হয় তা আমরা কম-বেশি সকলে জানি। রমজান মাসে সেহরির সময়, ইফতারির সময় আমরা খেজুর খেয়ে থাকি। রমজান মাস বাদেও অন্যান্য যে কোন সময় খেজুর খাওয়া যায়। খেজুর খেলে দেহে শক্তি বাড়ে, প্রোটিনের ভালো উৎস, হজম শক্তিতে ত্বরাণ্বিত করে, যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং কোলেস্টেরল দূর করে। এত এত উপকার থাকার পরও অতিরিক্ত খেজুর খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ- থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

এখন নিশ্চয় প্রশ্ন আসতে পারে দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত ? একজন সুস্থ সবল ব্যাক্তি দৈনিক ৪/৫ টা খেজুর খেতে পারে। এই খেজুর আপনি সরাসরি খেতে পারেন, আবার খেজুর পানিতে ভিজিয়ে বা ভিজানো খেজুর জুস করে বা দুধের মধ্যে খেজুর ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। চিনি বা মিষ্টির বিকল্প হতে পারে খেজুর। ৪/৫ টি খেজুর থেকে ২৭৭ ক্যালরি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত খেজুর খেলে এটা শরীরে ক্যালরি পরিমাণ বৃদ্ধি করে এতে ওজন বেড়ে যেতে পারে। খেজুরে গ্লুকোজ থাকায় অতিরিক্ত খেলে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। খেজুরে পটাসিয়াম থাকায় অতিরিক্ত খেলে শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।

ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে কি হয়

ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে কি হয়ঃ- রাতে ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে নিদ্রাহীনতা দূর হয়, গর্ভবর্তী মহিলাদের প্রসব বেদনা নিয়ন্ত্রণে আসে, হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আনে, পেশী শক্তি ‍বৃদ্ধি পায়, জয়েন্টের ব্যথা দূর হয়, আয়রনের চাহিদা পূরণ করে রক্তস্বল্পতা দূর করে, প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস করে, হার্টের অসুখ নিরাময় করে, দেহে অক্সিজেন সরবরাহ বজায় রাখে, দেহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।

খুরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খুরমা খেজুর খাওয়ার নিয়মঃ- খুরমা খেজুর ধুয়ে সরাসরি খেতে পারেন। যদি আপনি চান খেজুর ভিজিয়ে খেতে তাহলে রাতে ঘুমানোর আগে ৪/৫ টি খেজুর ধুয়ে ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে ঘুম থেকে উঠে খেজুর ও পানি পান করুন। দুধের মধ্যে খোরমা খেজুরে ভিজিয়ে রেখে ঐ একই নিয়মে খান। এভাবে কিছু দিন খেলে আপনি নিজের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে পারবেন।

শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ- শুকনো খেজুর থেকে যে সকল উপকার পাওয়া যায় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-

  • রক্তের চাহিদা পূরণ করে। খেজুরের আয়রন উপাদান দেহে রক্ত উৎপাদন করতে সহায়তা করে।
  • খেজুরে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকায় তা হাড় গঠন করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
  • যাদের টয়লেট কষা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভূগছেন তারা শুকনো খেজুর খান।
  • ইহা খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। শুকনো খেজুর ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  • চোখের স্বাস্থের জন্য শুকনো খেজুর খুবই কার্যকর। এটা চোখের রেটিনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
  • এর পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম উপাদান হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। ইহা দেহে প্রেসারের মাত্রা স্থির রাখে।
  • এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নানান ধরণের শারীরিক রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • ব্রেনের স্বাস্থের জন্য শুকনো খেজুর উপকারি। ইহা স্মৃতি-শক্তি ধরে রাখে।
  • শুকনো খেজুর দেহে গ্লুকোজের চাহিদা পূরণ করে।

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়ঃ- খেজুর কখন খেলে সব থেকে ভালো হয় এ নিয়ে আমাদের বহু চিন্তা। খেজুর রাতে ঘুমানোর আগে খাবে, সকালে ভরা পেটে নাকি খালি পেটে খাবে, বিকালের নাস্তা হিসেবে খেজুর খাওয়া যাবে তো এই নিয়ে হাজারো জল্পনা। বস্তুত খেজুর ক্যালরিতে ভরপুর, ফাইবার সমৃদ্ধ, পুষ্টি গুণাগুণের অন্যতম উৎস, বহু রোগের প্রতিষেধক হিসেবে আমরা খেজুর খেয়ে থাকি।

ব্যায়ামের পূর্বেঃ- যারা শরীর চর্চা করেন, স্বাভাবিক ভাবে শরীর চর্চা করার ফলে আমরা শারীরিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এজন্য শরীর চর্চা করার ৩০ মিনিট পূর্বে ৩ টি এবং শরীর চর্চা করার পর ২টি খেজুর খান। এতে করে আপনার হারানো এনার্জি পুনরায় ফিরে পাবেন।

রাতে ঘুমানোর আগেঃ- অনেকে রাতের বেলা ভাত খায় না। হালকা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে পছন্দ করে। তাদের জন্য হালকা খাবার হিসেবে খেজুর অন্যতম। খেজুর খেলে ক্ষুধার চাপ লাগে না এতে করে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

আরো পড়ুনঃ- পাথরকুচি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

সেহরির সময়ঃ- সেহরির সময় ৪/৫ টা খেজুর খেয়ে ১ গ্লাস পানি খেলে সারাদিনে আপনার ক্ষুধার চাপ লাগবে না, শরীর ক্লান্ত হবে না। আপনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকবেন।

সকালে খালি পেটেঃ- খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আমরা এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস, হার্ট ও লিভার সুস্থ রাখতে সকালে খেজুর খান উপকার মিলবে।

ব্রেক ফাস্ট এবং লাঞ্চের মাঝের সময়ঃ- এই সময় খেজুর খেলে তার উপকারিতা গুলো ভোগ করতে পারবেন।

সন্ধ্যার সময়ঃ- রোজার সময়ে দেহে গ্লুকোজের ঘাটতি পড়ে। তাই গ্লুকোজের ঘাটতি মেটাতে শুরুতে আমরা খেজুর দিয়ে ইফতার করি।

খেজুর খাওয়ার অনুপযুক্ত সময়ঃ- ভারী খাবার খাওয়ার পর পরই খেজুর খাবেন না এতে করে বদহজমের প্রবণতা দেখা দিতে পারে। অ্যালার্জি, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম ও সেন্সিটিভিটির সমস্যা থাকলে খেজুর এড়িয়ে চলুন। ডায়াবেটিসের রোগীরা কতটুকু খেজুর খাবে ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন। ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে খেজুর এড়িয়ে চলুন।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে কি হয়, খুরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম, শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম তথ্য বহুল পোস্ট আরও আমাদের এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনাদের সুবির্ধাতে আমরা যে কোন বিষয়ের উপর পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। চেষ্টা করি বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য। আজ আর নয়, পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন টপিকস নিয়ে সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে বিদায় নিচ্ছি। একক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url