সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেতে সুস্বাদু, লোভনীয় মিষ্টি ফল খেজুর। খেজুর দেখলেই খেতে মনে চায়। এই পোস্টে  সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা,  খেজুর খাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব। প্রতিদিন সকালে ২টি করে খেজুর খেলে অনেক রোগ থেকে দূর থাকবেন। এই প্রাকৃতিক ফল আপনাকে শারীরিক, মানসিকভাবে সুস্থ রাখবে। তাই  সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর খাওয়ার নিয়ম আমাদের জানা দরকার।

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুরে প্রচুর শক্তি রয়েছে। শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিলে সকালে খেজুর খান। এতে করে গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হবে। তাছাড়া খেজুরে রয়েছে একের অধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন তাহলে আর দেরি না করে  সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর খাওয়ার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ- খেজুর এমন একটি ফল যা সারা বছর খাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা বেশি। খেজুরের ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার, আয়রন, প্রোটিন, সালফার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই উপাদান গুলো আপনার দেহ গঠনে ভূমিকা রাখবে। সকালে খেজুর খেলে যে সকল উপকার পেতে পারেনঃ-

প্রোটিন আমাদের পেশী গঠনে সহায়তা করে। এই খেজুর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়।

কোলেস্টেরল দূর করতে খেজুর খান। খেজুর খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে।

রোজ সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে এটা আপনার হার্টকে সুস্থ রাখবে। হ্রদপিন্ড কর্মক্ষম রাখবে। ইহা খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে আপনার হার্টকে সুস্থ রাখবে।

চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখুন। খেজুর ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এর অন্যতম উৎস। ইহা রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

যাদের হার্ট দুর্বল তাদের জন্য খেজুর ওষুধের মত। তাই হার্টের রোগীরা খেজুর খান। এতে উপকার মিলবে।

হাড়ের ক্ষয় রোধ, শরীরের হাড় কে শক্তিশালী মজবুত করতে খেজুর খান। কেননা, খেজুরের ক্যালসিয়াম উপাদান হাড় গঠনে বিশেষ ভাবে কার্যকরী।

খেজুরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান যেকোন ধরণের ভয়াবহ রোগ যেমনঃ- ক্যান্সার, টিউমার, আলসার থেকে রক্ষা করে। ইহা দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে যে কোন ধরণের রোগ থেকে সহজে মুক্তি মেলে।

খেজুর ক্ষুধার চাপ অনেকটা কমিয়ে দেয়। ফলে সহজে ওজন হ্রাস করা যায়।

খাদ্য হজম না হওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। খেজুরের ফাইবার উপাদান হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

খেজুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে রক্তশূন্যতা দূর করে। কেননা, খেজুর মিনারেলস, আয়রন এর ভরপুর উৎস।

যারা শারীরিক ভাবে দূর্বল, কাজ করতে পারেন না তারা রোজ সকালে খালি পেটে ২টি করে খেজুর খান। এটা আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে।

যাদের স্মরণ শক্তি কম, পড়া ভুলে যান তারা রোজ ৪/৫ টি করে খেজুর খাবেন। এতে করে স্মরণ শক্তি বাড়বে।

পটাসিয়ামের অন্যতম উৎস খেজুর। এটা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।

খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর খাওয়ার নিয়মঃ- খেজুর কিভাবে খেতে হয় তা আমরা সকলে জানি। অনেক খেজুর আছে যা শক্ত/চিমড়া চিবিয়ে খেতে একটু কষ্ট হয়। তারা রাতে ঘুমানোর আগে  ৪/৫টি খেজুর ধুয়ে নিন। এর পর ১ গ্লাস পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেজুর ও ভিজানো পানি খান। তাছাড়া আপনি চাইলে খেজুর ও খেজুর ভিজানো পানি ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস করে খেতে পারেন। দুধের মধ্যে ৪/৫টি খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে ঐ দুধ ও ভিজানো খেজুর খান। এতে উপকার মিলবে।

রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ- আপনারা রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা জানতে চেয়ে গুগলে সার্চ করেছেন। রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো জানলে আপনি ঘুমানোর আগে খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখবেন। রাতে খেজুর খাওয়া সত্যিই উপকারী। রাতে খেজুরের উপকারিতা গুলো হলোঃ-

যাদের ঘুম হয় না, অনিন্দ্রা সমস্যা ভূগছেন তারা রাতে খেজুর খান। এতে করে ঘুমের সমস্যা দূর হবে।

যারা যৌন সমস্যায় ভূগছেন, সহবাস করতে গেলে অল্পতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন তারা রাতে খেজুর খান।

খেজুর পুরুষ ও মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সমাধান  করে। ইহা প্রোস্টেট গ্রন্থির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এটা পুরুষের বীর্যের ঘনত্ব বাড়ায়। শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে। পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ইহা গর্ভবর্তী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারি। ইহা নবজাতক, গর্ভবর্তী মহিলাদের স্বাস্থ্য গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ইহা ভ্রণের বিকাশ ঘটায়।

উচ্চ রক্তচাপ, খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে হার্টের অসুখ নিরাময় করে।

ইহা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে।

ইহা পেশী শক্তি বৃদ্ধি করে, জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ- ১ গ্লাস দুধের মধ্যে ৪/৫ টা খেজুর ভিজিয়ে খেতে পারলে নিঃসন্দেহে তা স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারি হয়। দুধ ও খেজুর উভয় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থের জন্য দরকার। দুধ ও খেজুর এক সাথে খেলে যে সকল উপকার পাওয়া যায়ঃ-

খুব দ্রুত রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি দূর করতে দুধ ও খেজুর এক সাথে খান। এতে করে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

প্রেগনেন্ট মহিলাদের খাবারের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হয়। গর্ভবর্তী মহিলাদের নিজের এবং নবজাতকের স্বাস্থ্যের বিকাশে দুধ ও খেজুর খাদ্য তালিকায় রাখুন।

অল্প বয়সে অনেকের ত্বকে বার্ধ্যকের ছাপ পড়ে যায়। দুধ, খেজুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর অন্যতম উৎস। তাই ত্বকের বার্ধ্যকের ছাপ দূর করতে দুধে ভিজানো খেজুর খান।

প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দুধ ও খেজুর খেতে পারলে এর সুফল মিলবে।

মাথা ঘোরা, ঘুম ঘুম ভাব, শারীরিক দুর্বলতা, ক্লান্তি দূর করতে দুধ ও খেজুর এক সাথে খান। এতে উপকার মিলবে।

ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে দুধ ও খেজুর এক সাথে খান। এতে করে ত্বকের দাগ-ছোপ, ব্রণ, ত্বকের বার্ধক্য দূর হবে। অন্যদিকে অল্প বয়সে চোখে ঝাপসা পড়া, রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

দুধ ও খেজুর এক সাথে খেলে এটা আপনাকে হঠাৎ স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে মুক্তি দেবে।

যদি আপনার গ্যাস, অম্বল, বদহজমের সমস্যা থাকে তাহলে দুধ ও খেজুর খাবেন। এতে করে পেটের যাবতীয় সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

দুধ ও খেজুর ব্রেনের স্বাস্থের জন্য খুবই ভালো। তাই স্মরণ শক্তি বাড়াতে দুধ ও খেজুর খান।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা স্বাস্থ্যবিষয়ক পোস্ট খেজুর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর খাওয়ার নিয়ম, রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা মুগ্ধ হয়েছেন। এই রকম স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট আরও পেতে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের ওয়েব সাইটে প্রতিদিন স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট পাবলিশ করা হয়। আজ এ পর্যন্ত, আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url