থানকুনি পাতার ১৫টি উপকারিতা ও ৫টি অপকারিতা বিস্তারিত জানুন [ ২০২৪ ]
থানকুনি হচ্ছে লতানো ভেষজ উদ্ভিদ। বহু রোগের চিকিৎসায় এই থানকুনি পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। থানকুনি পাতার মধ্যে এমন কিছু স্বাস্থ্য গুণাগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। অনেকে থানকুনি পাতা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকে। কিন্তু থানকুনি পাতা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা অনেকেই জানে না। এই পোস্টে থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সুতারাং থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
এই পাতা খেতে হালকা তেতো স্বাদের। ডোবা, নালা, জলাশয়, পুকুর পাড়ে থানকুনি পাতা জন্মে। বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে এই থানকুনি পাতা অহরহ দেখা যায়। এই থানকুনি পাতা সরাসরি আপনি খেতে পারেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | থানকুনি পাতার উপকারিতা | থানকুনি পাতার অপকারিতা
- যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা
- থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয়
- চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
- থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয় | থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়
- পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
- থানকুনি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম
- থানকুনি পাতার ব্যবহার
- লেখকের মন্তব্য
থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | থানকুনি পাতার উপকারিতা | থানকুনি পাতার অপকারিতা
থানকুনি পাতা সবজি হিসেবে, ওষধ হিসেবে, রুপচর্চার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। থানকুনি পাতা খেলে শরীরের নানান রকমের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। যেকোন শারীরিক জটিলতার জন্য সরাসরি ঔষধের এর উপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রাকৃতিক ভেষজ লতানো উদ্ভিদ থানকুনি পাতা ব্যবহার করুন। অনেকে থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই যার কারণে গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করা হয় না। এখন আমরা থানকুনি পাতার উপকারিতা গুলো জানব।
থানকুনি পাতার ১৫টি উপকারিতা
দ্রুত ক্ষত নিরাময়ঃ- থানকুনি পাতায় অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা দ্রুত ক্ষয় নিরাময়ে সাহায্যে করে। শরীরের কোন স্থানে কেটে গেলে থানকুনি পাতা পেস্ট করে লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
হজমের সমস্যা দূরঃ- পানি + থানকুনি পাতা + এক চিমটি লবণ নিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করুন। এই পানি নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। তাছাড়া শরীরকে সুস্থ রাখতে থানকুনি পাতা ভীষণ উপকারি।
পেটের আলসার নিরাময়ঃ- থানকুনি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা পেটের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। প্রথমে, তাজা পরিষ্কার থানকুনি পাতা নিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করুন। এরপর তা ছেঁকে নিন। এরপর সিদ্ধ থানকুনি পাতার পানির সাথে মধু যোগ করে খান। এতে পেটের আলসার, মূত্রনালী সংক্রমণ দ্রুত দূর হয়ে যাবে।
বাতের সমস্যা দূরঃ- অনেকের দীর্ঘদিন ধরে বাতের সমস্যার জর্জরিত, তাদের জন্য থানকুনি পাতা খুবই উপকারী। এটি শরীরের প্রদাহ দূর করে। নিয়মিত ২/১ টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে বাতের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
গলা ব্যথা, কাশি, জ্বর নিরাময়ঃ- থানকুনি পাতার রস + মধু একসঙ্গে খেলে কাশি নিরাময় হয়। তুলসী, গোল মরিচ, থানকুনি একসঙ্গে খেলে দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অনেকের প্রচন্ড গলা ব্যাথা, কাশি একসঙ্গে হয়। থানকুনি পাতার রস, চিনি মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথা কাশি দূর হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরঃ- যাদের টয়লেট কষা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন তারা থানকুনি পাতা খেলে উপকার পাবেন। নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে ব্যাকটেরিয়া, জীবাণু দেহে বাসা বাঁধে। তাই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য থানকুনি পাতার রস, মধু একসঙ্গে খান।
ঘুমের সমস্যা দূরঃ- শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে ঘুম আবশ্যক। ঘুমের সমস্যা দূর করতে থানকুনি পাতার রস, মধু প্রতিদিন খান। এতে দ্রুত ঘুমের সমস্যা দূর হবে।
চুল পড়া রোধঃ- চুল মাথা থেকে উঠে গেলে থানকুনি পাতার সাহায্য নিন। থানকুনি পাতা পেস্ট করে মাথায় লাগালে চুল পড়া রোধ হয়।
দ্রুত রক্তে জমাট বাঁধেঃ- খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ থানকুনি পাতা দ্রুত রক্তে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
রক্ত বিশুদ্ধ করেঃ- নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন নিশ্চিত হয়। এত শারীরিক নানান ধরনের জটিলতা থেকে মুক্তি মিলে।
আমাশয় নিরাময়ঃ- যাদের ঘনঘন আমাশয় হয় তারা থানকুনি পাতা খান। এতে আমাশয়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
মানসিক অবসাদ দূরঃ- যারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন তারা থানকুনি পাতার খান। এটা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিঃ- থানকুনি পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। ইহা ব্রেন সেলে চমৎকার কাজ করে, স্মৃতি শক্তির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নেঃ- থানকুনি পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর উচ্চমানের অ্যামাইনো অ্যাসিড ত্বককে সতেজ প্রাণবন্ত রাখে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকে ব্রণের উপস্থিতি কমায়। থানকুনি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে, ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, ত্বকের বলিরেখা দূর করে। থানকুনির অ্যামিনো এসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্যাটে অ্যাসিড ত্বকের পুষ্টি যোগায়। ত্বক রাখে আর্দ্র, কোমল। ত্বকের বয়সের ছাপ রোধ করে।
থানকুনি পাতার ৫টি অপকারিতা
থানকুনির পাতার বহু উপকারিতা রয়েছে তবে সামান্য কিছু এর ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। সে ক্ষতিকর দিকগুলো আমাদের জানা দরকার। যাতে আমরা সতর্ক থাকতে পারি। থানকুনি পাতার অপকারিতা গুলো হলোঃ-
- অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অপারেশনের রোগীরা থানকুনি পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- যাদের লিভারের জটিলতা রয়েছে তারা থানকুনি পাতা এড়িয়ে চলুন।
- অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে মাথা ঘোরতে পারে।
- থানকুনি পাতা খেলে যেমন পেটের সমস্যা নিরাময় হয় অন্যদিকে অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে পেটের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এজন্য প্রয়োজন মাফিক খান।
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতাঃ- থানকুনি পাতা প্রাকৃতিক ভেষজ। অল্প বয়সেই অনেকে বৃদ্ধ মতো হয়ে যায়, অনেকের যৌন সক্ষমতা দূর্বল তাদের জন্য থানকুনি পাতা খুবই উপকারি। আমাদের চারপাশে প্রচুর প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো থানকুনি পাতা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমরা থানকুনি পাতার ব্যবহার না জানার কারণে, থানকুনি পাতা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা না জানার কারণে আমরা এই প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদকে এড়িয়ে চলি।
অল্প সময়ে দ্রুত ফায়দা পাওয়ার জন্য আমরা কৃত্রিম জিনিস/কৃত্রিম প্রোডাক্ট/কৃত্রিম ঔষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। যেগুলো সেবন করলে সাময়িক উপকার পাওয়া গেলেও বয়ে নিয়ে আনে অপূরণীয় ক্ষতি। নিয়ম করে ১ গ্লাস দুধে ৫-৬ চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, বয়স বাড়লেও দেখতে যুবকের মতো লাগবে, দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখবে, দাঁতের ক্ষয় রোধ করবে, চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে। থানকুনি পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায়, আপনি সরাসরি চিবিয়ে খান এতে উপকার মিলবে।
থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয়
থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয়ঃ- প্রায় সারা বছর ধরে গ্রামে গঞ্জে এই থানকুনি পাতা পাওয়া যায়। থানকুনি পাতার ঔষধি গুণাগুণ আপনাকে মুগ্ধ করবে। থানকুনি পাতা শরীরের জন্য কতটা উপকারি তা উপরের প্যারায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখন অনেকে প্রশ্ন করে থানকুনি পাতা কিভাবে খাবে ? থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম কি ? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নিয়ম-১ঃ- থানকুনি পাতা সরাসরি চিবিয়ে খেতে পারেন। চিবিয়ে খেলে এই পাতা হালকা থেতো স্বাদের মতো লাগবে। প্রতিদিনি ২/১টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে বাতের সমস্যা, আমাশয় নিরাময় হয়।
নিয়ম ২ঃ- থানকুনি পাতার সিদ্ধ পানি, ১ চিমটি লবণ একসাথে খেলে হজমের সমস্যা নিরাময় হয়।
নিয়ম ৩ঃ- সিদ্ধ থানকুনি পাতা, মধু একসঙ্গে খেলে আলসার নিরাময় হয়।
নিয়ম ৪ঃ- মধু + থানকুনি পাতার রস খেলে কাশি নিরাময় হয়, রক্ত বিশুদ্ধ হয়।
নিয়ম ৫ঃ- তুলসি, থানকুনি, গোল মরিচ এক সাথে খেলে দ্রুত জ্বর নিরাময় হয়।
নিয়ম ৬ঃ- থানকুনি পাতার রস, চিনি এক সাথে খেলে গলা ব্যথা, কাশি নিরাময় হয়।
নিয়ম ৭ঃ- থানকুনি পাতার রস, গরম পানি একসাথে খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের উপকার পাওয়া যায়।
নিয়ম ৮ঃ- কাঁচা দুধ + থানকুনি পাতা মিক্স করে খেলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি মেলে।
নিয়ম ৯ঃ- ১ চামচ থানকুনির রস, ৫/৬ ফোটা হলুদের রস, প্রয়োজন মতো মধু, চিনি মিশিয়ে খেলে লিভার ভালো থাকবে।
নিয়ম ১০ঃ- থানকুনি পাতা সবজি করে খেতে পারেন। যেমনঃ- ভর্তা বানিয়ে, অথবা ঝোল করে।
নিয়ম ১১ঃ- থানকুনি পাতার বড়া বানিয়ে খেতে পারেন।
নিয়ম ১২ঃ- থানকুনি পাতা জুস করে খেতে পারেন। স্বাদ বাড়ানোর জন্য পরিমাণ মতো মধু, চিনি মিশাতে পারেন।
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতাঃ- থানকুনি পাতা এমন এক ভেষজ উদ্ভিদ যা চুলের যত্নে খুবই উপকারি। অকালে চুল ঝরে পড়া রোধে থানকুনি বিশেষভাবে উপকারি। থানকুনি পাতা চুলের ফলিকগুলিকে উদ্দীপিত করে, মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। চুলের যত্নে থানকুনি পাতা বিশেষভাবে উপকারি। সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রাখে এতে করে স্কাল্পের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়। থানকুনির অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান স্কাল্পের সংক্রমণ কমায়। থানকুনি পাতার রস চুলে লাগালে চুলের গোড়া মজবুত হয়। থানকুনি পাতার পুষ্টিগুণ চুলের খুশকি নিরাময় করে। এই পাতা চুলের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্নি থেকে চুলকে রক্ষা করবে।
ব্যবহারের নিয়মঃ- থানকুনির রস চুলে লাগানোর ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করুন। এভাবে সপ্তাহে ১/২ বার ব্যবহার করুন। থানকুনি পাতা থেঁতো করে তার সাথে তুলসি পাতা, আমলা দিয়ে সুন্দর করে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর তা মাথায় মাখুন। ৩০ মিনিটের পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।
থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয় | থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয়
অনেকে গুগলে সার্চ করে থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়, থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয তা জানতে চেয়েছেন। ত্বকের সৌন্দর্যের জন্য আপনি থানকুনি পাতার ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জল হবে, ত্বকে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে, ত্বক হবে উজ্জল, কোমল, মসৃণ। ত্বকে জন্য থানকুনি পাতার গুণাগুণঃ-
ত্বক সতেজ ও কোমলঃ- ত্বকে উচ্চ মানের অ্যামাইনো এসিড ত্বক রাখবে ভিতর থেকে সতেজ, কোমল, প্রাণবন্ত, উজ্জল।
ব্রণ দূরঃ- থানকুনির অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের ব্রণ দূর করবে। ব্রণের দাগ গুলো দ্রুত নিরাময় করবে।
ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধঃ- থানকুনির পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদান রয়েছে। যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নি থেকে ত্বককে রক্ষা করে, অকালে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। ইহা ত্বকের বলিরেখা রোধ করে, ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
ত্বকের জ্বালাপোড়া দূরঃ- থানকুনির ম্যাডেকাসসাইড উপাদান ত্বকের ক্ষত সরাতে সাহায্যে করে। ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করে। ত্বককে রাখে ভিতর থেকে ঠান্ডা, সতেজ।
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখেঃ- থানকুনির অ্যামাইনো এসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ত্বকের বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিরাময় করে।
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতাঃ- অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, গ্যাস্ট্রিক, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেটে নানান সমস্যা দেখা যায়। এই সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে ছোট্ট এই থানকুনি পাতার মধ্যে। পেটের বিভিন্ন সমস্যার জন্য এই থানকুনি পাতা শ্রেষ্ট প্রতিষেধক। যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, সহজে খাবার হজম হয় না তারা থানকুনি পাতা খেলে হজম শক্তি বাড়ে, যাদের টয়লেট কষা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা থানকুনি পাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। থানকুনি পাতার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান পেটের আলসার নিরাময় করে। থানকুনি পাতা খেলে ডায়রিয়া, আমাশয়, হাঁপানি, এগজিমা থেকে মুক্তি মেলে। ইহা লিভার, কিডনি সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
থানকুনি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম
থানকুনি পাতার বৈজ্ঞানিক নামঃ- বহুবর্ষজীবী লতানো উদ্ভিদ থানকুনি পাতা। বাংলাদেশ সহ উপমহাদেশ জুড়ে এর ব্যপক বিস্তৃতি রয়েছে। ইহা নদী/পুকুর/জলাশয় ধারে জন্মে। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলোঃ- Centella asiatica. এর বৈজ্ঞানিক পরিবারের নাম হলোঃ- ম্যাকিনলেয়াসি, যাকে এপিকেসি পরিবারের উপ পরিবার বলে চিহ্নিত করা হয়।
থানকুনি পাতার ব্যবহার
থানকুনি পাতার ব্যবহারঃ- চুলের যত্নে, ত্বকের যত্নে, পেটের সমস্যা নিরাময়ে থানকুনি পাতা বিশেষভাবে উপকারি। থানকুনি পাতার রস পেটের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। থানকুনির পেষ্ট ফেসপ্যাক, টোনার, ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া থানকুনি পাতা ভিটামিন সি উপাদান দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, গলা-ব্যথা, সর্দি, কাশি, মুখের ঘা দূর করতে সাহায্যে করে। পেটের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় থানকুনি পাতা।
যেমনঃ- হজম শক্তি বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর, পেটের আলসার নিরাময়, ডায়ারিয়া, আমাশয়, হাঁপানি, একজিমা থেকে মুক্তি দেয় এই থানকুনি পাতা। চুলের যত্নেও থানকুনি বিশেষভাবে উপকারি। যেমনঃ- চুল পড়া রোধ, চুলের খুশকি দূর, চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে, অকালে চুল পেঁকে যাওয়া রোধ করে। ত্বকের নানান সমস্যা যেমনঃ- ব্রণ দূর করে. ত্বকের দাগ-ছোপ দূর করে, ত্বকের বার্ধক্য নিরাময় করে এক কথায় ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে থানকুনি পাতা খেলে।
লেখকের মন্তব্য
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আরো আলোচনা করা হয়েছেঃ- যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা, থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয়, চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা, থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়, পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা, থানকুনি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম, থানকুনি পাতার ব্যবহার, থানকুনি পাতা মুখে দিলে কি হয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি পোস্টটি পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন। এইরকম তথ্যবহুল আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। কেননা, আমাদের সাইটে এইরকম তথ্যবহুল পোস্ট নিয়মিত পাবলিশ করা হয়। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।
পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url