নেটওয়ার্ক টপোলজি কি - টপোলজি কি কত প্রকার জেনে নিন

প্রায় পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে নেটওয়ার্ক টপোলজি কি ? টপোলজি কি কত প্রকার ? অনেকে গুগলে সার্চ করেছেন। আপনাদের জন্য এই পোস্টে নেটওয়ার্ক টপোলজি কি - টপোলজি কি কত প্রকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

নেটওয়ার্ক টপোলজি কি - টপোলজি কি কত প্রকার জেনে নিন

যেহেতু বর্তমানে সময়টা প্রযুক্তি নির্ভর। তাই প্রযুক্তি গত বিষয়ে আমাদের জ্ঞান থাকাটা দরকার। তার মধ্যে অন্যতম একটি অধ্যায় হলো নেটওয়ার্ক টপোলজি। চলুন তাহলে আর দেরি না করে নেটওয়ার্ক টপোলজি কি - টপোলজি কি কত প্রকার ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- নেটওয়ার্ক টপোলজি কি

নেটওয়ার্ক টপোলজি কি | নেটওয়ার্ক টপোলজি কাকে বলে

নেটওয়ার্ক টপোলজিঃ- যে টপোলজি নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল লে-আউট বর্ণনা করে থাকে তাকে নেটওয়ার্ক টপোলজি বলে। অন্যভাবে নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ফিজিক্যাল ডিভাইসকে ও নেটওয়ার্ক টপোলজি বলে। নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ফিজিক্যাল ডিভাইস হলোঃ- ক্যাবল, পিসি, রাউটার ইত্যাদি। 

স্টার টপোলজি কাকে বলে | স্টার টপোলজি কি

স্টার টপোলজিঃ- যে টপোলজিতে হোস্ট কম্পিউটারের সাথে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো যুক্ত করে নেটওয়ার্ক সিস্টেম গড়ে তোলা হয় তাকে স্টার টপোলজি বলে। স্টার টপোলজি বহুল ব্যবহৃত একটি টপোলজি। এই টপোলজি একই নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরণের ক্যাবল ব্যবহার সম্ভব।

স্টার টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা

স্টার টপোলজির সুবিধাঃ-

  • যেহেতু হোস্ট কম্পিউটারের অধীনে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো যুক্ত থাকে, তাই নেটওয়ার্কে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই নতুন কম্পিউটার যুক্ত করা যায়।
  • এখানে বিভিন্ন ধরণের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
  • এখানে কোন একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে সহজে তা অপসারণ করা যায় এতে নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কোন প্রভাব পড়ে না।
  • নেটওয়ার্কের কোন জায়গায় সমস্যা হয়েছে ইনটেলিজেন্ট হাব ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের কর্মকান্ড মনিটরিং করা যায়।

স্টার টপোলজির অসুবিধাঃ-

  • স্টার টপোলজিতে খরচ বেশি। কারণ এখানে বেশি ক্যাবল ব্যবহার হয়।
  • যদি অধিক সংখ্যক কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাহলে ডেটা ট্রান্সমিশন হার ক্রমাগত হ্রাস পায়।
  • হাবে ( কেন্দ্রীয় অবস্থায় থাকা ) কোন প্রকার জটিলতা তৈরি হলে তা পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেম কে অচল করে দেয়।

ট্রি টপোলজি কাকে বলে  | ট্রি টপোলজি

ট্রি টপোলজি কাকে বলেঃ- এই টপোলজিতে কম্পিউটার গুলো একে অপরের সাথে গাছের শাখা - প্রশাখার মতো বিন্যস্ত থাকে তাই একে ট্রি টপোলজি বলা হয়। এই কম্পিউটার গুলো হোস্ট কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে। ১ম স্তরের কম্পিউটার গুলো ২য় স্তরের কম্পিউটারের হোস্ট, ২য় স্তরের কম্পিউটার গুলো ৩য় স্তরের কম্পিউটার গুলোর হোস্ট, তয় স্তরের কম্পিউটার গুলো ৪র্থ স্তরের কম্পিউটার গুলোর হোস্ট, ৪র্থ স্তরের কম্পিউটার গুলো ৫ম স্তরের কম্পিউটার গুলোর হোস্ট এভাবে পর্যায়ক্রমে যেতে থাকে। অফিস ব্যবস্থাপনার কাজে ট্রি-টপোলজির ভূমিকা অপরিসীম। একাধিক হাব বা সুইচ ব্যবহার করে শাখা-প্রশাখা সৃষ্টির মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হয়।

টপোলজি কি কত প্রকার | টপোলজি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি

টপোলজিঃ- একটি নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল ডিভাইস ( রাউটার, পিসি, ক্যাবল ) যা নেটওয়ার্ক সিস্টেমে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে তাকে টপোলজি বলে।

টপোলজি ৬ প্রকার। যথাঃ-

  • রিং টপোলজি
  • বাস টপোলজি
  • ট্রি টপোলজি
  • স্টার টপোলজি
  • হাইব্রিড টপোলজি
  • মেশ টপোলজি

কোন টপোলজি সুবিধাজনক

যে টপোলজি সুবিধাজনকঃ- আমার ধারণা মতে, হাইব্রিড টপোলজি সব থেকে সুবিধাজনক। কোন টপোলজি সুবিধাজনক তা ক্লাসের শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিলে সব থেকে ভালো হয়।

হাইব্রিড টপোলজি কাকে বলে

হাইব্রিড টপোলজিঃ- মেশ, রিং, বাস, স্টার এই টপোলজি গুলোর সমন্বয়ে যে নেটওয়ার্ক সিস্টেম গড়ে তোলা হয় তাকে হাইব্রিড টপোলজি বলে। ইন্টারনেটকে হাইব্রিড টপোলজি বলে অভিহিত করা হয়। ইন্টারনেটের পরিসর বৃহৎ হওয়ায় এখানে বহু ধরণের টপোলজির মিশ্রণ দেখা যায়। হাইব্রিড টপোলজিতে প্রয়োজন মোতাবেক নেটওয়ার্ক সিস্টেম বাড়ানো যায় আবার কমানো যায়। নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কোন সমস্যা দেখা দিলে তা নির্ণয় করা যায়। এর একটি সুবিধা নেটওয়ার্কের কোন এক জায়গায় সমস্যা হলে পুরো নেটওয়ার্ক অচল হয় না।

হাইব্রিড টপোলজির সুবিধাঃ-

  • প্রয়োজন অনুযায়ী নেটওয়ার্ক সংখ্যা বাড়ানো যায়।
  • নেটওয়ার্কে কোন জটিলতা দেখা দিলে তা সহজে নির্ণয় করা যায়।
  • নেটওয়ার্কের কোন অংশ নষ্ট হলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেম অচল হয় না।

হাইব্রিড টপোলজির অসুবিধাঃ-

  • এই টপোলজিতে যে হাব ব্যবহার করা হয় তা সবসময় সচল রাখতে হয়।

মেশ টপোলজি কাকে বলে

মেশ টপোলজিঃ- নেটওয়ার্কভুক্ত একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটার গুলোর সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে তাকে মেশ টপোলজি বলে। একে হাইব্রিড মেশ টপোলজি বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এখানে অতিরিক্ত লিংক থাকায় ডেটা কমিউনিকেশনে নিশ্চয়তা থাকে। নেটওয়ার্ক সমস্যা গুলো দ্রুত নিরুপন করে,  সমাধান করা যায়।

মেশ টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা

মেশ টপোলজির সুবিধাঃ-

  • ডেটা কমিউনিকেশনে নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
  • নেটওয়ার্কের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়।
  • নেটওয়ার্ক সিস্টেমে বড় ধরণের জটিলতা তৈরি হয় না।
  • দ্রুত গতিতে ডেটা ট্রান্সমিশন হয়।

মেশ টপোলজির অসুবিধাঃ-

  • খরচ বেশি। কারণ, নেটওয়ার্কে অতিরিক্ত লিংক স্থাপন করতে হয়।
  • নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন, কনফিগারেশন জটিল।

বাস টপোলজি ও স্টার টপোলজির মধ্যে পার্থক্য

বাস টপোলজিঃ- যে টপোলজিতে একটি মূল তারের সাথে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো যুক্ত থাকে তাকে বাস টপোলজি বলে।

স্টার টপোলজিঃ- যে টপোলজিতে নিয়ন্ত্রণকারী কম্পিউটারের সাথে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো যুক্ত থাকে তাকে স্টার টপোলজি বলে।

রিং টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা

রিং টপোলজি কিঃ- এই টপোলজিতে কোন কেন্দ্রীয় কম্পিউটার থাকে না। এখানে একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সাথে রিং এর মতো করে সংযুক্ত থাকে। এজন্য একে রিং টপোলজি বলা হয়। এ ব্যবস্থায় একটি কম্পিউটার থেকে অন্য আরেকটি কম্পিউটারে ডেটা পাঠালে যতক্ষণ না প্রাপক কম্পিউটার ডেটা গ্রহণ করছে ঐ ডেটা বৃত্তাকার পথে কম্পিউটার গুলোর মধ্যে ঘুরতে থাকে। এ ব্যবস্থায় প্রতিটি কম্পিউটার ( প্রথম কম্পিউটার থেকে শেষ কম্পিউটার পর্যন্ত ) ধারাবাহিকভাবে বৃত্তাকারে সংযুক্ত থাকে এজন্য প্রতিটি কম্পিউটারের গুরুত্ব সমান।

রিং টপোলজির সুবিধাঃ-

  • এখানে কোন কেন্দ্রীয় কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় না।
  • নেটওয়ার্কের প্রতিটি কম্পিউটার সমান গুরুত্ব পায়।
  • আনলিমিটেড কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

রিং টপোলজির অসুবিধাঃ-

  • এই ব্যবস্থায় একটি কম্পিউটারে সমস্যা হলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেম অচল হয়ে যাবে।
  • নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কোথায় সমস্যা হয়েছে তার নিরুপন করা কঠিন।
  • নেটওয়ার্ক সিস্টেমে নতুন কোন কম্পিউটার যুক্ত করলে বা পুরনো কোন কম্পিউটার সরিয়ে নিলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেমের কাজ ব্যাহত হয়।

বাস টপোলজি ও রিং টপোলজির মধ্যে পার্থক্য

বাস টপোলজিঃ- যে টপোলজিতে একটি মূল তারের সাথে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো যুক্ত থাকে তাকে বাস টপোলজি বলে।

রিং টপোলজিঃ- কম্পিউটার গুলো তার পার্শ্ববর্তী কম্পিউটারের সাথে রিং এর মতো সংযুক্ত থাকে তাই একে রিং টপোলজি বলা হয়।

কোন টপোলজিতে একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটার থাকে

স্টার টপোলজিতে একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটার থাকে। এখানে কেন্দ্রীয় কম্পিউটার অন্যান্য কম্পিউটারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেম গড়ে তোলে। এখানে অন্যান্য কম্পিউটার গুলো কেন্দ্রীয় কম্পিউটারের সাহায্যে ডাটা আদান-প্রদান করে। এখানে একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কোন প্রভাব পড়ে না। সহজে ঐ নষ্ট কম্পিউটার অপসারণ করা যায়।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে টেক ব্লগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে নেটওয়ার্ক টপোলজি কি | নেটওয়ার্ক টপোলজি কাকে বলে, স্টার টপোলজি কাকে বলে | স্টার টপোলজি কি, ট্রি টপোলজি কাকে বলে | ট্রি টপোলজি, টপোলজি কি কত প্রকার | টপোলজি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, কোন টপোলজি সুবিধাজনক, হাইব্রিড টপোলজি কাকে বলে, মেশ টপোলজি কাকে বলে, মেশ টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা, স্টার টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা, বাস টপোলজি ও স্টার টপোলজির মধ্যে পার্থক্য, রিং টপোলজির সুবিধা ও অসুবিধা, বাস টপোলজি ও রিং টপোলজির মধ্যে পার্থক্য, কোন টপোলজিতে একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটার থাকে ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এই রকম টেক জাতীয় ব্লগ আরো পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের সাইটে প্রতিনিয়ত টেক জাতীয় ব্লগ পাবলিশ করা হয়। পরবর্তীতে আলোচনা হবে অন্য কোন ব্লগ পোস্ট নিয়ে সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url