বিট ফল খাওয়ার নিয়ম - বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়
বিট ফল অনেকের কাছে পরিচিত আবার অনেকের কাছে পরিচিত নয়। এই ফল নিয়ে মানুষের কৌতূহলের কমতি নেই। বিট ফল কি, বিট ফল কিভাবে খেতে হয়, বিট ফল খাওয়ার নিয়ম কি, বিট কি কাঁচা খাওয়া যায় ইত্যাদি নানান প্রশ্ন দিয়ে মানুষ গুগলে অনুসন্ধান করে। এককথায় বিট হচ্ছে সুপার ন্যাচারাল ফুড। বহু উপকার রয়েছে এই ফলের মধ্যে। তবুও সবার জন্য এই ফল উপযুক্ত নাও হতে পারে। এই ফল কাদের জন্য নয় সেই বিষয়ে বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা এই প্যারাতে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছি। সুতারাং আপনি যদি বিট ফল খাওয়ার নিয়ম, বিট কি কাঁচা খাওয়া যায় তা না জানেন তাহলে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ুন।
অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের কারণে আমরা নানান ধরণের শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। যেমনঃ- কারো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, কারো কোলেস্টেরলের সমস্যা, কারো রক্তস্বল্পতার সমস্যা, কারো হজমের সমস্যা, কারো লিভারের সমস্যা, কারো পেটের সমস্যা এমন অনেক সমস্যার সমাধান মিলতে পারে এই বিট ফলে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে বিট ফল খাওয়ার নিয়ম - বিট কি কাঁচা খাওয়া যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- বিট ফল খাওয়ার নিয়ম । বিটরুট কিভাবে খায়
- বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা | বিট খাওয়ার অপকারিতা | বিট ফল এর উপকারিতা
- বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়
- বিট ফল খাওয়ার নিয়ম । বিটরুট কিভাবে খায়
- বিটের রসের উপকারিতা
- বিটের জুস রেসিপি
- উপসংহার
বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা | বিট খাওয়ার অপকারিতা | বিট ফল এর উপকারিতা
অন্যান্য দেশে এই বিট ফল পরিচিতি লাভ করলেও আমাদের দেশে এখনও তেমন পরিচিতি পায় নি। পুষ্টি গুণের দিক দিয়ে এই ফল অনন্য। তাছাড়া এই ফলে রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ। মূলত এই ফলটি শীতকালীন ফল হিসেবে পরিচিত। বিটে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমনঃ- ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইত্যাদি। আপনাদের অনেকে বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা, বিট খাওয়ার অপকারিতা, বিট ফল এর উপকারিতা লিখে গুগলে সার্চ করেন। সুতারাং আপনাদের এই প্যারাটি তৈরি করা হলোঃ-
বিটের উপকারিতাঃ- বিটে এমন কিছু উপকারিতা রয়েছে যা জানলে আপনি অবাক হবেন। চলুন তাহলে বিটের উপকারিতা গুলো জেনে নিইঃ-
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ- আমাদের অনেকের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে। বিট ব্লাড প্রেসারের ঝুঁকি হ্রাস করে। যারা রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভূগছেন তাদের জন্য বিট অত্যন্ত কার্যকরী। বিটে রয়েছে নাইট্রেটস উপাদান যা রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া বিট রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
- চোখের সমস্যা হ্রাসঃ- একটু বয়স হলেই আমাদের চোখের সমস্যা দেখা দেয়। চোখের সমস্যার জন্য বিট ফল অত্যন্ত উপকারি। বিটে লুটেইন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। তাছাড়া বিটের ফাইটোকেমিক্যাল চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
- হজমশক্তি বৃদ্ধিঃ- বিটে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা হজমশক্তি উন্নতি করে এবং ইহা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
- প্রদাহজনিত সমস্যা দূরঃ- দেহে বিপাক ক্রিয়ার ফলে ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হয়। যার দ্বারা দেহে জ্বালা, যন্ত্রণা, প্রদাহ সৃষ্টি করে। বিটের টালাইন উপাদান যা দেহে প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে।
- উপকারি ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করেঃ- ইহা দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন করে যেগুলো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেক দেহকে সুরক্ষা দেয়।
- রক্তস্বল্পতা দূরঃ- যাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য বিট খুবই উপকারি। মূলত আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তস্বল্পতা জনিত সমস্যা দেখা দেয়। বিটে রয়েছে প্রচুর আয়রন যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে রক্তের ঘাটতি পূরণ করে।
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়ঃ- বয়সের সাথে সাথে অথবা নানামুখী চাপ, টেনশনের কারণে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। বিট মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া বিট অক্সিজেনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে আমরা সচ্ছন্দে কাজ করতে পারি।
- ক্যান্সার প্রতিরোধঃ- ক্যান্সার কতটা ভয়াবহ তা আমাদের সকলেরই জানা। বিট ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- শরীরের টক্সিন দূরঃ- বিট শরীরের টক্সিন দূর করে শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলে। দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- কোলেস্টেরল দূরঃ- কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক সহ নানান ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। বিট কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।
- চর্বি কমায়ঃ- বিট ফলে বিটেইন নামক পদার্থ থাকায় দেহে চর্বি কমাতে সহায়তা করে। ইহা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।
- বার্ধক্য দূরঃ- আমাদের অনেকের অল্প বয়সে চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ে যায়। দেখতে বুড়ো বুড়ো লাগে। বিট ফল বার্ধক্যের ছাপ দূর করে এবং চেহারাকে সতেজ, সুন্দর, প্রাণবন্ত করে তোলে।
- এনার্জি বুস্ট করেঃ- বিভিন্ন কারণে আমাদের শারীরিক দূর্বলতা আসে। সেই শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে বিট খুবই কার্যকরী। বিট শরীরে দূর্বলতা দূর করে, শরীরে এনার্জি বুস্ট করে।
- রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখেঃ- রক্ত সঞ্চালন ঠিকভাবে না হলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিটের নাইট্রেট উপাদান রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে, স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
- পেটের সমস্যা দূরঃ- বিট পেটের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। যেমনঃ- ডায়রিয়া, জন্ডিস, কলেরা সহ আরও অন্যান্য সমস্যা দূর করে। তাছাড়া বিট খেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
- বার্ধক্যজনিত মানসিক সমস্যা দূরঃ- বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দেয় যেমনঃ ডিমেনশিয়া, স্মৃতিভ্রংশ ইত্যাদি। মূলত মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের অভাবে এই সমস্যা হয়। বিটের নাইট্রেট উপাদান মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে ডিমেনশিয়া, স্মৃতিভ্রংশ ইত্যাদি সহ নানান ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
- লিভার সুস্থ রাখেঃ- বিট লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। বিটের ফাইবার শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।
- ডায়াবেটিসের রোগীরাঃ- বিটে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা বেশি। যেসকল খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা বেশি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য তা অনুপযুক্ত। কেননা, এগুলো রক্তে শর্করা মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
- কিডনিতে পাথরঃ- যাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভূগছেন তাদের জন্য বিট উপযুক্ত নয়। কেননা, এতে অক্সালেট বেশি থাকে। তাই কিডনিতে পাথরের রোগীরা বিট এড়িয়ে চলুন।
- অ্যালার্জির সমস্যাঃ- অনেকের বিট খেলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে ত্বকে চুলকানি, খুশকি, জ্বালাপোড়া এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। সুতারাং অ্যালার্জির রোগীদের জন্য বিট অনুপযুক্ত।
- নিম্ন রক্তচাপজনিত সমস্যাঃ- যাদের নিম্ন রক্তচাপজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য বিট উপযুক্ত নয়। কেননা ইহা রক্তচাপের মাত্রা আরও কমিয়ে দিতে পারে। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য বিট উপকারি।
- প্রস্রাবের রং পরিবর্তনঃ- বিট বেশি খেলে প্রস্রাবের রং গোলাপী বর্ণের হতে পারে। একে বলে বিটুরিয়া।
- পেট খারাপ হওয়াঃ- বিট বেশি খাওয়ার কারণে অনকের পেট খারাপ হওয়ার আশংকা থাকে।
- গর্ভবর্তী নারীরাঃ- বিট খেলে গর্ভবর্তী নারীদের মাথা ঘোরা, ক্লান্তি সহ নানান ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নারীরা প্রেগন্যান্সি কালীন সময়ে বিট এড়িয়ে চলুন।
বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়
বিট ফল আপনি ২ ভাবে খেতে পারেন। যথাঃ- ১) রান্না করে ২) কাঁচা। তবে কাঁচা খেলে এই ফল থেকে বেশি ফায়দা পাওয়া যায়। আমরা যেমন শসা, গাজর, টমেটো কাঁচা খায় অনুরুপভাবে বিট ফল কাঁচা খাওয়া যায়।তাছাড়া আপনি বিটের জুস, সালাদ করে খেতে পারেন।
বিট ফল খাওয়ার নিয়ম। বিটরুট কিভাবে খায়
বিট ফলকে বলা হয় সুপার ফুড। পুষ্টি গুণের দিক দিয়ে এই ফল অনন্য। শীতকালে এই ফলটির বেশি ফলন হয়। যদিও আমাদের বাংলাদেশে এই ফল তেমন পরিচিত নয়। অনেকে বিট ফল খাওয়ার নিয়ম জানে না। অনেক ভাবেই এই ফলটি খাওয়া যায় যেমনঃ-
জুস করেঃ- অধিকাংশ মানুষ বিট ফলের জুস খেতে পছন্দ করে। এই ফলের জুস খুবই সুস্বাদু। ব্লেন্ডারে করে এই ফলের জুস তৈরি করুন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে সুন্দর করে ছেঁকে ফেলুন। এতে করে বিট ফলের আঁশ ও জুস আলাদা হয়ে যাবে। ব্যস, হয়ে গেল সুস্বাদু বিট ফলের জুস।
সালাদ করেঃ- আমরা যেমন টমেটো, শসা, গাজরের সালাদ বানিয়ে খাই অনুরূপ ভাবে এই ফলেরও সালাদ বানিয়ে খাওয়া যায়। বিট ফলের সালাদও খুব সুস্বাদু।
সবজি করেঃ- বিট ফল আপনি ঝোল করা সবজি হিসেবে অথবা ভাজি হিসেবে খেতে পারেন। অন্যান্য সবজি যেমন আমরা রান্না করে, ভাজি করে খাই বিট ফলও ঠিক সেভাবে খাওয়া যায়।
বিটের রসের উপকারিতা
শরীরের সুস্থতার জন্য বিটের রসে কোন তুলনা হয় না। এই ফলটি যেমন খেতে সুস্বাদু, তেমনি এই ফলে রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ। এই ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য উপাদান। বিটের রসের উপকারিতা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। চলুন তাহলে বিটের রসের কি কি উপকারিতা আছে তা জেনে নেওয়া যাকঃ-
রক্তচাপ কমায়ঃ- বিটের রসের নাইট্রেটস উপাদান উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
ব্যায়ামের স্ট্যামিনা উন্নত হয়ঃ- নিয়মিত বিটের রস খেলে প্লাজমা নাইট্রেটের মাত্রা বাড়ে, শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
হার্টের উন্নতি ঘটায়ঃ- বিট খেলে হার্টের উন্নতি ঘটে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিটের রস পান করার পর হার্টের রোগীদের পেশীর কার্যক্ষমতা ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
ডিমেনশিয়া রোধঃ- বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের স্মরণ শক্তি কম যায়। বিটের রসের নাইট্রেট উপাদান মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে সহায়তা করে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ডিমেনশিয়া রোধ হয়।
সঠিক ওজন বজায় রাখাঃ- নিয়মিত বিটের রস সেবন করলে শরীরের ওজন স্থিতিশীল রাখে। বিটের রসে ক্যালরির পরিমাণ কম এবং চর্বি নেই বললেই চলে। বিটের রস পান করলে হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
ক্যান্সার প্রতিরোধকঃ- বিটের রসের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
লিভারকে রক্ষা করেঃ- বিটের রসের বিটাইন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লিভারে চর্বি জমতে দেয় না। এতে লিভার সুরক্ষিত থাকে।
বিটের রসের পুষ্টি উপাদানঃ- বীটের পটাসিয়াম পেশীগুলোকে সচল রাখতে সহায়তা করে। বিটের রসে অন্যান্য খনিজ উপাদান যেমনঃ- সোডিয়াম, লোহা, তামা, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় বিটের জুসঃ- বিটের রসের ফোলেট উপাদান গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি রোধ করে। এজন্য গর্ভাবস্থায় বিটের জুস খাওয়ার অভ্যাস করুন।
রক্তের ঘাটতি দূরঃ- বিটের জুসের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন। এই আয়রন হিমোগ্লোবিন ও লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। সুতারাং রক্তের ঘাটতি পূরণে বিটের জুস খুবই কার্যকরী।
কোলেস্টেরল কমায়ঃ- বিটের জুসের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান কোলেস্টেরল কমায়। সুতারাং কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য বিটের জুস খুবই উপকারি।
ত্বকের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখেঃ- অনেকের অল্প বয়সে ত্বক বুড়োর দেখায়। ত্বকের বার্ধ্যকের ছাপ দূর করে, ত্বকের দাগ দূর করে, বলিরেখা মতো সমস্যা গুলো দূর হয় নিয়মিত বিটের জুস খেলে।
ট্যানের জম বিটঃ- ত্বকে একটু রোদ লাগলেই চামড়ায় ট্যান পড়ে যায়। ত্বকের ট্যান কমাতে বিটের জুস খুবই উপকারি। এছাড়া বিটের রসের ফেসপ্যাক মাখলেও বেশ সুফল পাওয়া যায়।
বিটের জুসের অন্যান্য উপকারিতাঃ- বিটের জুস মুখের বলি রেখা দূর করে। কেননা, বিটের জুসে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফোলেট, ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা বলি রেখা দূর করতে সহায়তা করে। তাছাড়া বিটের জুস ত্বকের কালো ছাপ দূর করে। বিটের জুস ত্বকের অয়েল ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণ করে। কেননা, বিটের জুসের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। বিটের জুস ত্বকের শুষ্কতা কমাতে সহায়তা করে। ত্বকের ব্রুণের মতো সমস্যা গুলোও দূর করে।
বিটের জুস রেসিপি
এমনিতেই বিটের জুস খেতে সুস্বাদু, বিটের জুসের অনন্য মাত্রা যোগ করতে বিভিন্ন উপকরণ যুক্ত করা হয়। বিটের জুস রেসিপি তৈরি করা খুবই সহজ। চলুন তাহলে বিটের জুস রেসিপি কিভাবে তৈরি করা হয় জেনে নেওয়া যাকঃ-
বিট ও আপেলের জুস রেসিপিঃ- বিট ও আপেল দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। বিট ও আপেলের জুস তৈরি করলে এর স্বাদ অনন্য মাত্রায় পৌছে যায়।
- উপকরণঃ- ২ কাপ আপেল, ১ কাপ বিট, গোল মরিচের গুড়া, লবণ, দারুচিনি ইত্যাদি।
- জুস তৈরির নিয়মঃ- এবার সবগুলো উপকরণ একসাথে ব্লেন্ড করুন। এবার ছাঁকনি দিয়ে তা ছেঁকে ফেলুন। এই জুসের স্বাদ বাড়াতে বিট লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
বিট ও গাজরের জুস রেসিপিঃ- গাজর ও বিটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার আছে। যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- উপকরণঃ- ২ কাপ বিট, ২ কাপ গাজর, ১/২ কাপ পানি, ৫ টেবিল চামচ লেবুর রস, পরিমাণ মতো লবণ, পুদিনা পাতা ইত্যাদি।
- জুস তৈরির নিয়মঃ- প্রথমে গাজর, বিট, পুদিনা পাতা ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। যেন জুসের মতো করে খাওয়া যায় সেজন্য লেবুর রস, লবণ, পানি ভালো করে মিশিয়ে নিন।
বিট ও টমেটো জুস রেসিপিঃ- বিট ও টমেটো থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা দেহে রক্ত সঞ্চালনে উন্নতি ঘটায়।
- উপকরণঃ- ২ কাপ বিট, ১.৫ কাপ টমেটো, ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস, পরিমাণমতো লবণ।
- জুস তৈরির নিয়মঃ- প্রথমে বিট, টমেটো সুন্দর করে ব্লেড করে নিন। এরপর লেবুর রস, লবণ মিশিয়ে নিন। হয়ে গেল বিট ও টমেটো জুস রেসিপি।
বিট ও ডালিমের জুস রেসিপিঃ- বিট ও ডালিম রক্তস্বল্পতা দূর করে। কেননা, ইহা আয়রনের ভালো উৎস।
- উপকরণঃ- ২ কাপ বিট, ১ কাপ ডালিমের বীজ, লবণ, ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস।
- জুস তৈরির নিয়মঃ- বিট ও ডালিম ব্লেড করুন। এরপর লবণ, লেবুর রস মিশিয়ে নিন। হয়ে গেল সুস্বাদু বিট ও ডালিমের জুস রেসিপি।
বিটের স্পেশাল জুসঃ- প্রথমে বিট ফল সুন্দর করে কুচি কুচি করে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। ব্লেন্ডারের ঢাকনা খুলে ২ চামচ টক দই, ২ চামচ মধু, ১ চামচ লেবুর রস দিয়ে পুনরায় ব্লেন্ড করুন। হয়ে গেল সুস্বাদু বিটের জুস।
উপসংহার
সম্মানিত পাঠক এই পোস্টে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি টপিকস বিট ফল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা | বিট খাওয়ার অপকারিতা | বিট ফল এর উপকারিতা, বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়, বিট ফল খাওয়ার নিয়ম । বিটরুট কিভাবে খায়, বিটের রসের উপকারিতা, বিটের জুস রেসিপি ইত্যাদি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এই রকম তথ্যবহুল আরোও পোস্ট পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।
পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url