ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

বর্তমানে সারা বিশ্ব জুড়ে ডায়াবেটিস মহামারির রুপ ধারণ করেছে। যুবক থেকে বৃদ্ধ কেউ এই রোগ থেকে মুক্ত নয়। ইহা এমন একটি রোগ যা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় না। তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনাকে ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা, কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সেই বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। সুতারাং আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা ও কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সেই বিষয়ে না জানেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

ডায়াবেটিস একটি ভয়ংকর ব্যাধি। ইহা ধীরে ধীরে লিভার, কিডনি বিকলাঙ্গ করে ফেলে। এজন্য ডায়াবেটিসকে কোনমতেই হালকা ভাবে নিবেন না। নিয়ম মাফিক জীবন যাপন, খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন তাহলে ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা, কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা 

কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে 

ডায়াবেটিস কতটা মারাত্নক রোগ যার একবার ডায়াবেটিস হয় সেই বুঝে। কারও ডায়াবেটিস হলে সেখান থেকে পরিপূর্ণ ভাবে সুস্থ হওয়া সহজ নয়। ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করতে হবে। এজন্য কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে বা নিয়ন্ত্রণে থাকে সেই বিষয়ে আপনাকে জানতে হবে। ডায়াবেটিসের রোগীদের সবসময় এটা মাথায় রাখতে হবে যে, খাবারে একটু অনিয়ম ঘটলেই ডায়াবেটিস বেড়ে যাবে। কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে আসুন জেনে নেওয়া যাকঃ-

ডিমের সাদা অংশঃ- ডিম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। কিন্তু ডায়াবেটিসের রোগীরা ডিমের কুসুম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডিমের সাদা অংশ থেকে কম মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, চর্বিহীন প্রোটিন পাওয়া যায়। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।

টক দইঃ- ইহা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য। টক দই রক্তের চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। টক দই ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।

সবুজ চাঃ- ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজন। ইহা রক্তে ইনসুলিনের মতো কাজ করে। এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, ইহা ডায়াবেটিসের রোগীদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা দরকার।

মাছঃ-  মাছ গ্লুকোজের ঘনত্ব কমায়, চর্বিহীন প্রোটিনের অন্যতম উৎস হলো মাছ। মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে ইনসুলিনের মতো কাজ করে। তাছাড়া ওয়াইল্ড স্যামন নামক এই সামুদ্রিক মাছটি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ঔষধি খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। সুতারাং বুঝতেই পারছেন মাছ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কতটা উপকারি। 

সবুজ শাকসবজিঃ- সবুজ শাকসবজির গুণাগুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে যে, নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ১৪ শতাংশ কমে যায়। সবুজ শাকসবজি তে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা কম। আমরা জানি ডায়াবেটিসের জন্য কার্বোহাইড্রেট দায়ী। সবুজ শাকসবজির মধ্যে অন্যতম হলোঃ- পাতা কপি, ফুল কপি, বাঁধা কপি, লেটুস পাতা, পালংশাক, শালগম অন্যতম। 

লেবু জাতীয় ফলঃ- ভিটামিন সি এর অন্যতম উৎস হলো লেবু জাতীয় ফল। গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভিটামিন সি এর অভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। ভিটামিন সি রোগ-প্রতিরোধ কারী উপাদান। লেবু, কমলা, জাম্বুরা এই জাতীয় ফল গুলো দেহে ইনসুলিনের মতে কাজ করে। সুতারাং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে লেবু জাতীয় ফল খাওয়া খুবই দরকার।

বাদামঃ- বাদামের বহু স্বাস্থ্য গুণাগুণ রয়েছে। এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে যে, বাদাম প্রায় ২১ শতাংশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম। বাদাম ডায়াবেটিসের পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ও হ্রাস করে।

শস্য দানাঃ- রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় শস্য দানা রাখুন।

মটরশুঁটিঃ- ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ঔষধি খাদ্য হলো মটরশুঁটি। মটরশুঁটি থেকে আঁশ, চর্বিহীন প্রোটিন পাওযা যায়। যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও হ্রাস করে। 

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খানঃ- যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে সেই খাবার গুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন। যেমনঃ- আপেল, কলা, নাশপতি, স্টবেরি, বিট, পেয়ারা, ব্ল্যাকবেরি, গাজর, ব্রুকলি, মুগডাল, মসুরডাল, ছোলা, ওটস, সয়াবিন, ফুলকপি, মিষ্টি আলু, বীজ জাতীয় খাবার, ভুট্টা ইত্যাদি। এগুলো রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

চিনি ছাড়া চা খানঃ- ডায়াবেটিসের রোগীদের চিনি খাওয়া বিপদজনক। চায়ের মধ্যে আপনি রং চা, গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি খেতে পারেন। চা থেকে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। তাছাড়া চা শরীরকে চাঙ্গা রাখে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

চিনি ছাড়া শরবতঃ- যদি শরবত খাওয়ার ইচ্ছে হয় তাহলে লেবুর শরবত সব থেকে ভালো হবে। যেহেতু ডায়াবেটিসের রোগীদের চিনি খাওয়া যাবে না, তাই চিনি ছাড়াই শরবত খেতে হবে। ভিটামিন-সি অন্যতম উৎস৷ হলো লেবু। 

চর্বিহীন বা সামান্য চর্বি জাতীয় খাবারঃ- ডায়াবেটিসের রোগীরা হালকা রোস্ট করা মুরগির মাংস, কোয়েলের মাংস, কবুতরের মাংস খেতে পারেন। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য লাল মাংস (গরুর মাংস) খাওয়া মোটেও উচিত নয়।

খেজুরঃ- অনেকে মনে করেন খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল, এটা খেলে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খেজুরের মধ্যে উপকারিতা রয়েছে।  খেজুরের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার। যা ডায়াবেটিস নিরাময়ে সহায়ক।

তুলসীঃ- তুলসীকে বলা হয় রোগের মহাঔষধ। তুলসী ডায়াবেটিসের রোগীদের দেহে ইনসুলিনের মতো কাজ করে। ইহা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা 

গোটা বিশ্ব জুড়ে হু হু করে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা, যা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় না, তবে ইহা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেজন্য প্রয়োজন জীবন যাত্রার মানে পরিবর্তন আনা। এজন্য প্রয়োজন মাফিক খাদ্যাভাস, শরীরচর্চা, নিয়মিত রূটিন মেনে জীবন যাপন করা। ডায়াবেটিসের কারণে লিভার, কিডনি বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন হরমোন নিঃসরণ হয় না, যায় কারণে দেহে কোষে গ্লুকোজ পৌছায় না, এতে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসের জন্য শর্করা যুক্ত খাবারও দায়ী। এজন্য আপনাকে ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে জানতে হবেঃ-

ক্ষতিকর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ত্যাগঃ- শরীর গঠনে প্রোটিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তবে লাল মাংস (গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস) এগুলো বিপদজনক। লাল মাংসের পরিবর্তে শিম, বাদাম থেকে প্রোটিন সংগ্রহ করতে পারেন।

দুগ্ধজাতীয় খাবার ত্যাগঃ- দুধ, দই, মাখন, পনির, সন্দেশ, দুধ দিয়ে তৈরি যেকোন প্রকার খাবার ডায়াবেটিসের রোগীদের ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

আলুঃ- একটি আলু থেকে ক্যালরি ১০০ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, আঁশ ৩ গ্রাম, শ্বেতসার ২২ গ্রাম পাওয়া যায়। আলু যদিও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তারপরেও আলু ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খাওয়া উচিত নয়। যদি একান্ত খেতেই হয় তবে সেটি পরিমিত পর্যায়ে খেতে হবে। কারণ, আলুতে থাকা বিদ্যমান উপাদান গুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

ভুট্টাঃ- ভুট্টা থেকে ভিটামিন, মিনারেল, আঁশ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। যদিও এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু ইহা অতিরিক্ত খেলে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

সাদা রুটি, সাদা পাস্তা ত্যাগঃ- এগুলোতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় শ্বেতসার। যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য বিপদজনক। তাই এগুলো ত্যাগ করতে হবে।

এনার্জি ড্রিংকস ত্যাগঃ- ডায়াবেটিসের রোগীদের এনার্জি ড্রিংকস খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এগুলোতে চিনির পরিমাণ বেশি। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের এনার্জি ড্রিংকস ত্যাগ করাটাই উত্তম।

কিশমিসঃ- কিশমিসে ক্যালরি ও চিনির পরিমাণ বেশি। যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। ইহা গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

চিনিযুক্ত খাবার ত্যাগঃ- ড্রিংকস, চকলেট, জ্যাম-জেলি, ফলের রস, চিনিযুক্ত চা, কফি, ভাজা পোড়া এই খাবার গুলো ত্যাগ করতে হবে। কেননা, এই খাবার গুলো ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

ক্যান্ডিঃ- ক্যান্ডি ইহা চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়, শুধু ক্যান্ডি নয় চিনির তৈরি  সিরাপ, পানীয়, কুকিস এগুলো ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কেননা, এই গুলো রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসঃ- ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য তেলে ভাজা খাবার খাওয়া মোটেও উচিত নয়। বিশেষ করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস এই গুলো অতিরিক্ত তেল দিয়ে ভাজা হয় যা রক্তে সুগারের মাত্রা নষ্ট করে, দেহের ওজন বাড়িয়ে দেয়, এগুলো দেহে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিসের রোগীকে আলুর চিপস, ডোনাটস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

লবণঃ- ইহা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে তাহলে আজ থেকে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন।

স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খানঃ- মাখন, ঘি, রেড মিট, দুধ এই খাবার গুলোতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের এই খাবার গুলো ত্যাগ করতে হবে।

নেশাজাতীয় দ্রব্য ত্যাগঃ- ধূমপান, অ্যালকোহল, মদ এই সমস্ত নেশাজাতীয় অখাদ্য গুলো ত্যাগ করতে হবে। নইলে এগুলো ডায়াবেটিস কে আরো বিপদ জনক পর্য়ায়ে নিয়ে যেতে পারে।

সফেদাঃ- সফেদা ফলে উচ্চ মাত্রায় শর্করা, কার্বোহাইড্রেট  রয়েছে। যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর তাই এই ফলটি এড়িয়ে চলাটা ভাল।

আমঃ- ফলের রাজা বলা হয় আমকে। এই আমে চিনির মাত্রা বেশি। যা রক্তে শর্করা ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। তাই এই ফলটি এড়িয়ে চলাটা ভাল।

আনারসঃ- অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল। কিন্তু ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য বিপদ জনক। এর মূল কারণ হলোঃ- আনারসে চিনির মাত্রা বেশি। যা রক্তে ব্ল্যাড সুগার লেভেলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা এটি এড়িয়ে চলবেন।

আঙ্গুরঃ- আঙ্গুর ফলে ফাইবার, ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস থাকলেও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকায় ডায়াবেটিসের রোগীদের আঙ্গুর ফল খাওয়া উচিত হবে না।

আঙ্গুর খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে 

আঙ্গুর খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে  ? উত্তরঃ- ডায়াবেটিসের রোগীদের আঙ্গুর ফল না খাওয়াটাই ভালো। কারণ আঙ্গুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। আঙ্গুরের মধ্যে ফাইবার, ভিটামিন, পলিফেনলস এবং ফ্লেবানাইডস, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস প্রচুর থাকে। যা দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যাদের ডায়াবেটিস ধরা পড়েনি তারা পুষ্টির জন্য আঙ্গুর খেতে পারে। কিন্তু যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্য আঙ্গুর খাওয়া উচিত নয়। এর কারণ আঙ্গুরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ বেশি অর্থ্যাৎ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫৩।

ডায়াবেটিসে মুড়ি খাওয়া যাবে কি 

ডায়াবেটিসে মুড়ি খাওয়া যাবে কি ?  উত্তরঃ- খাওয়া যাবে তবে সেটি পরিমিত পর্যায়ে। কেননা, মুড়ি ডায়াবেটিস নিরাময় করতে পারে না। প্রতি ১০০ গ্রাম মুড়ি থেকে ৯০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার ১.৭ গ্রাম পাওয়া যায়। মুড়িতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ ও বেশি। ডায়াবেটিসের রোগীদের ঐ সকল খাবার খেতে হবে যে খাবার গুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম। যে খাবার গুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ বেশি সেই খাবার গুলো পরিমিত পর্যায়ে অথবা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, এগুলো দ্রুত ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য বিপদজনক। আর মুড়িতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ বেশি।  তাই বলে কি ডায়াবেটিসের রোগীরা মুড়ি খাবেন না ! নিশ্চয় এমনটা না। ডায়াবেটিসের রোগীরা মুড়ির সাথে অঙ্কুরিত ছোলা, স্যালাড, ফল বা সবজি খেতে পারেন। মুড়ির কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার একত্রে যোগ হলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে  থাকে। তবে এই জায়গায় একটু খেয়াল রাখবেন, মুড়ির সাথে মিষ্টি খাবেন না। মিষ্টি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর বুঝতেই পারছেন। মুড়ি যেন নূনতা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কারণ নূনতা মুড়িতে বিদ্যমান সোডিয়াম ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য বিপদজনক। 

উপসংহার

সম্মানিত পাঠক পুরো পোস্ট জুড়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি টপিকস ডায়াবেটিস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে, ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা, আঙ্গুর খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে, ডায়াবেটিসে মুড়ি খাওয়া যাবে কি  ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এই রকম স্বাস্থ্য সম্পর্কিত টপিকস পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url