অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা - সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয় বিস্তারিত জানুন

আমরা অনেকেই অঙ্কুরিত ছোলা খেতে পছন্দ করি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে অঙ্কুরিত ছোলায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টি গুণাগুণ। যেমনঃ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কার্ব, প্রোটিন, পটাশিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার, ফোলেট ইত্যাদি সহ আরও অন্যান্য পুষ্টি গুণাগুণ। আমরা অঙ্কুরিত ছোলার উপকারের কথা শুনলেও অঙ্কুরিত ছোলা থেকে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা আমরা অনেকেই জানি না। এখন আমরা আলোচনা করবো অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা নিয়ে সাথে আরও জানব সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত। চলুন তাহলে আর দেরি না করে অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা ও সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয় সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

ছোলা আমাদের অতি পরিচিত একটি খাবার। যেকোন বয়সের মানুষ এই খাবার খেতে পছন্দ করে। এই খাবার সিদ্ধ অথবা ভাজা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। অনেকে সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয় তা জানতে গুগলে সার্চ করে তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সুতারাং আপনি যদি অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা ও সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয় তা না জানেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

পোস্ট সূচিপত্রঃ অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা - সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয়

খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা

ছোলার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সকলেই কম-বেশি অবগত। অনেকে নিয়ম করে প্রতিদিন খালি পেঁটে ছোলা খায়। অনেকে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই। তাদের জন্য এই প্যারাটি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ছোলাতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং ফ্যাটের পরিমান খুবই কম যা শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিদদের মতে, কাঁচা ছোলা উচ্চ রক্ত চাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া ইহা শরীরের হার্ট সুস্থ রাখতে ভীষণ কার্যকরী। খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা নিম্নরুপঃ-

বার্ধক্য জনিত সমস্যা রোধঃ- যারা অল্পতেই বার্ধক্যর সমস্যায় ভূগছেন তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খান। কাঁচা ছোলার ম্যাঙ্গানিজ বার্ধক্যজনিত সমস্যা রোধ করে। তাছাড়া বলিরেখা, ফাইন লাইনস কমাতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কাঁচা ছোলা রাখুন।

রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল দূরঃ- ছোলাতে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। ইহা উচ্চ রক্তচাপ কমায় ও খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে। তাছাড়া ছোলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানবদেহে ফুসফুসের ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

চুলের যত্নে ছোলাঃ ছোলাতে এমন বিশেষ কিছু উপাদান (যেমনঃ জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬) রয়েছে যা চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ভীষণ কার্যকরী। তাছাড়া ছোলা অকালে চুল ঝরে পড়া রোধ করে। এজন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ছোলা রাখুন।

হিমোগ্লোবিন তৈরিঃ ছোলাতে রয়েছে আয়রন যা হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাছাড়া যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ছোলা খান।

ওজন কমায়ঃ ছোলাতে উচ্চ পরিমাণে উপর প্রোটিন ও ফাইবার রয়েছে। এবং কম পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায়। ছোলা খেলে ক্ষুধা কমে যায় এবং পেট সব সময় ভরা থাকে। কেননা, ছোলাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ভেজা ছোলায় পাওয়া যায় ফাইবার, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট। যা দেহে হজম প্রক্রিয়ার ধীর করে এবং শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ভেজা ছোলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়। ছোলা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে।

গর্ভবতী নারীদের জন্যঃ গর্ভবতী নারী ও নবজাতকের মায়েদের দেহে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। আয়রনের ঘাটতি নিবারণের জন্য ছোলা খুবই উপকারী। এজন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ছোলা রাখুন।

ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়ঃ নিয়মিত ছোলা খেলে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর হয়। কোন জিনিস অতিরিক্ত ভালো নয়, কোন সময়, কতটুকু ছোলা খেলে আপনার শরীরের উপকারী আসবে সে বিষয়ে একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে জেনে নিবেন।

প্রোটিনের ভালো উৎসঃ যাদের দেহে প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে তারা নিয়ম ভেজানো ছোলা খান। কেননা, ইহা প্রোটিনের ভালে উৎস।

আয়রনের ঘাটতি দূরঃ যারা রক্তস্বল্পতায় ভূগছেন, যাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তারা নিয়মিত ভেজানো ছোলা খান। তাই আজ থেকে খাদ্য তালিকায় ছোলা রাখুন, ইহা আয়রনের ঘাটতি দূর করে, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করেঃ যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত ভেজানো ছোলা খান। কেননা, ছোলাতে রয়েছে ফাইবার যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। নিয়মিত ছোলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদ হজমের মত সমস্যাগুলো দূর হয়। ইহা শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিয়ে পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ করে।

হার্ট সুস্থ রাখতেঃ ছোলাতে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা রক্তনালীকে সুস্থ রাখে। রক্তে জমাট বাধা প্রতিহত করে।

শরীরে শক্তি যোগায়ঃ যারা শরীরে দুর্বলতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ভেজানো ছোলা খান। কেননা, আমরা সকলেই জানি ছোলা পুষ্টির ভালো উৎস। ইহা শরীরের দুর্বলতা দূর করে আপনাকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবে।

আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণঃ যাদের আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের ঘাটতি রয়েছে তারা তা পূরণের জন্য ভেজানোর ছোলার সঙ্গে আদা মিশিয়ে খান। আমিষ শরীরকে শক্তিশালী করে অন্যদিকে অ্যান্টিবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আর্টারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিঃ নিয়মিত ছোলা খেলে পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বাড়ে। অন্যদিকে যেসকল ব্যাক্তিদের স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে তাদের আর্টারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কেননা, এতে রয়েছে আইসোফ্লাবন ইস্কেমিক।

ছোলার অন্যান্য গুণাগুণঃ ছোলার ভিটামিন বি নামক উপাদান মেরুদন্ডের ব্যথা, স্নায়ু দুর্বলতা দূর করে। ছোলাতে বিদ্যমান সালফার নামক উপাদান হাত পায়ের জ্বালাপোড়া দূর করে।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা | কাঁচা ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা | কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারিতা

ছোলা কাঁচা ও সিদ্ধ দুই ভাবে খাওয়া যায়। ছোলার গুনাগুনের কথা আমরা উপরের প্যারাতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ছোলা বাঙালির অতি পরিচিত একটি খাদ্য অভ্যাস। রোজার মাস ব্যতীত বছরের অন্যান্য সময়ও আমরা বিকেলের নাস্তা হিসেবে ছোলা খেয়ে থাকি। তাছাড়া যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ছোলা খায়। তাছাড়া অনেকে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা | কাঁচা ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা | কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারিতা জানতে গুগলে অনুসন্ধান করে। তাদের জন্য এই পোস্টটি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

কাঁচা ছোলার যত উপকারিতাঃ কাঁচা ছোলার উপকারিতা গুলো নিম্নে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলোঃ-

শরীরে অস্থির ভাব দূরঃ যাদের শরীরে অস্থিরতার ভাব লেগেই থাকে তারা নিয়মিত কাঁচা ছোলা খান। কেননা, ছোলায় বিদ্যমান শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স পরিমাণ কম। তাই ইহা দ্রুত শরীরের অস্থিরতা ভাব দূর করতে সহায়তা করে।

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়ঃ ছোলাতে দুই ধরনের আঁশ পাওয়া যায়। যথাঃ ১) দ্রবনীয় ২) অদ্রবনীয়। আঁশ জাতীয় খাবারগুলো হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যঃ ছোলায় বিদ্যমান শর্করা দ্রুত গ্লুকোজ হয় না। যার কারণে গ্লুকোজ রক্তের সাথে দ্রুত মিশে না। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলা ভীষণ উপকারী।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ছোলা খাদ্যনালী থেকে ক্ষতিকর জীবাণু দূর করে মরণঘাতি ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দেয়।

কোলেস্টেরল দূরঃ যারা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ছোলা খান। ছোলা শরীরকে কোলেস্টেরল হাত থেকে রক্ষা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ ছোলাতে পুষ্টি উপাদান ফলিক এসিড রয়েছে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আর্টারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিঃ যেসকল ব্যাক্তিদের স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে তাদের আর্টারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কেননা, এতে রয়েছে আইসোফ্লাবন ইস্কেমিক।

শরীরের শক্তি যোগায়ঃ ছোলাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি। নিয়মিত ছোলা খেলে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি ইনপুট করতে পারবেন। যা শরীরকে শক্তিশালী করে তুলবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ ছোলাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ। যার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

যৌন শক্তি বৃদ্ধিঃ যাদের যৌন শক্তি কম, যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তারা নিয়মিত ছোলা খান। প্রতিদিন রাতে ৫/৭ টি ছোলা ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ভিজানো ছোলা খেয়ে নিন। এতে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

শরীরে জ্বালাপোড়া দূরঃ ছোলায় সালফার নামক উপাদান রয়েছে। যা শরীরে জ্বালাপোড়া দূর করতে সহায়তা করে।

কাঁচা ছোলার অপকারিতাঃ যেকোনো প্রকারের খাবার নিয়ম মেনে খেলেই তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হয়। কিন্তু সেটা যখন অনিয়ম মাফিক পর্যায়ে চলে যায় তখন সেটা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর বা ক্ষতিকর হয়। আমরা সকলেই ছোলার উপকারিতার কথা জানি। সেটা নির্ভর করে নিয়ম মেনে খাওয়ার উপর। যাদের বমির সমস্যা রয়েছে তাদের কাঁচা ছোলা খাওয়া মোটেও উচিত নয়। অনেকের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচা ছোলা কম খাবেন।এগুলো ছাড়াও যাদের রক্তে রক্তের ডায়ালসিস চলছে, যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, যাদের হজম শক্তি দুর্বল, যাদের দেহে কিটেনিন ও ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেশি তারা ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

সিদ্ধ ছোলা খেলে কি হয়

ছোলা দুইভাবে খাওয়া যায়। যথাঃ ১) কাঁচা ছোলা ২) সিদ্ধ ছোলা। যারা সিদ্ধ করে খেতে পছন্দ করেন তারা সিদ্ধ করে খাবেন আর যারা কাঁচা ছোলা খেতে পছন্দ করেন তারা কাঁচা ছোলা খাবেন। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে পাওয়া যায় ৩৭২ কিলোক্যালরি ও প্রোটিন ৬০ গ্রাম, ফ্যাট ৫.৬ গ্রাম পাওয় যায়। তাছাড়া রয়েছে ভরপুর ফাইবার। তাছাড়া রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন সমৃদ্ধ উপাদান। ছোলা আপনি যেভাবে খান না কেন, পুষ্টিবিদদের মতে রান্না করার ছোলার চাইতে সিদ্ধ বা কাঁচা ছোলা অনেক বেশি উপকারী।

  • যাদের কোলেস্টেরল সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ছোলা খুবই উপকারি।
  • হার্টের রোগীরা নিয়মিত ছোলা খান। কারণ, ছোলাতে রয়েছে ফাইবার। যা হার্টের ঝুঁকি হ্রাস করে।
  • রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে।
  • পুরুষদের যৌন শক্তি বাড়াতে সিদ্ধ ছোলা খুবই উপকারি।
  • যাদের রক্তের সমস্যা রয়েছে তারা সিদ্ধ ছোলা ও মধু একই সঙ্গে খান।
  • ভেজানো সিদ্ধ ছোলা ও মধু একই সঙ্গে খেলে কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত সিদ্ধ ছোলা খান।

অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা

অঙ্কুরিত ছোলায় রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা। শরীর স্বাস্থ্য গঠনে এই ছোলার গুণাগুণ অতুলনীয়। যারা শরীর চর্চা করে তারা এই ছোলা নিয়মিত খায়। অনেকে নিয়ম করে খাদ্য তালিকায় এই ছোলা রাখে। এই ছোলা থেকে পাওয়া যায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, মিনারেল সহ অন্যান্য উপাদান। আসুন জেনে নিই অঙ্কুরিত ছোলার উপকারিতা গুলোঃ-

পেশি গঠনঃ- এই ছোলায় প্রোটিনের ভাগ বেশি থাকে। যা পেশি গঠনে অত্যন্ত উপকারি। দেখবেন যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করে তারা নিয়ম করে এই ছোলা খায়।

হজমশক্তি বৃদ্ধিঃ- ছোলায় রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার। যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই যাদের হজম শক্তি দুর্বল তারা নিয়ম করে এই ছোলা খান।

হাড়, দাঁত মজবুতঃ- ছোলা থেকে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম। যাদের শরীরের হাড়, দাঁত দুর্বল তারা নিয়ম করে অঙ্কুরিত ছোলা খান। কেননা, ইহা হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে।

শরীর স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ- যারা শারীরিক ভাবে দুর্বল তারা রোজ অঙ্কুরিত ছোলা খান। কেননা, ইহা শরীর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে। এই ছোলায় ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফোলেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলো বিদ্যমান রয়েছে।

গর্ভবর্তী মহিলাদের জন্যঃ- সদ্য মা হওয়া অথবা গর্ভবর্তী মহিলাদের জন্য এই ছোলা খুবই উপকারি। এই ছোলা থেকে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়।

হাড় ও হার্টের উন্নতিঃ- হাড় ও হার্টের উন্নতিতে এই ছোলা অতুলনীয়। কেননা, এই ছোলা আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এর ভালো উৎস।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধঃ- নিয়মিত অঙ্কুরিত ছোলা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। রোজ সকালে নিয়ম করে এই ছোলা খেলে দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়বে।

ছোলার অন্যান্য গুণাগুণঃ- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে, হার্টের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।

পেটের সমস্যা দূরঃ- আমরা অনেকেই গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজম সহ পেটের একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। এই ছোলা থেকে পাওয়া যায় ইনসলিউবল ফাইবার। এই ফাইবার পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে সহায়তা করে। ফলে পেটের বদহজমসহ নানান ধরণের সমস্যা দূর হয়।

ওজন কমানোঃ- যারা শরীরের ওজন কামতে চান তারা অঙ্কুরিত ছোলা নিয়মিত খান। কেননা এতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম।

রক্তস্বল্পতা দূরঃ- অঙ্কুরিত ছোলা আয়রনের ভালো উৎস। ইহা রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম

কাঁচা ছোলা কিভাবে খাবে ? কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম কি তা জানতে অনেকে গুগলে অনুসন্ধান করে। তাদের জন্য এই প্যারাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কাঁচা ছোলা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা তো আমাদের সকলেরই জানা। কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম আমাদের সকলেরই জানা দরকার।

মশলা মিশিয়ে তরকারিঃ যারা তরকারি করে ছোলা খেতে চান তারা ছোলার সাথে মশলা মিশিয়ে খেতে পারেন। ছোলাতে রয়েছে উচ্চ ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি জোগায়।

ভেজানো ছোলাঃ প্রতিদিন রাতে ৫/৭ টি করে ছোলা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খান। এতে শরীরে যত পুষ্টি গুনাগুনের অভাব রয়েছে সেগুলো চাহিদা পূরণ হবে।

ছোলা ভেজেঃ আমরা রমজান মাসে যেভাবে ছোলা ভেজে খাই সেভাবে ছোলা ভেজে খেতে পারেন। এতে শরীরের পুষ্টি গুনাগুনের অভাব পূরণ হবে।

পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য যেভাবে খাবেন ছোলাঃ সিদ্ধ ছোলার সাথে শসা, টমেটো, সরিষার তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে খেতে পারেন। আবার ছোলার সাথে টক দই মিশিয়েও খেতে পারেন।

প্রতিদিন ছোলা খেলে কি হয়

ছোলাকে বলা হয় পুষ্টির ভান্ডার। যেকোন বয়সের মানুষের পছন্দের খাবার ছোলা। শারীরিক বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সমাধান এই ছোলার মধ্যে রয়েছে। ছোলা অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। ছোলা আপনি কাঁচা বা সিদ্ধ দুই ভাবে খেতে পারেন। প্রতিদিন ছোলা খেলে কি হয় তা জানতে অনেকে গুগলে সার্চ করে। প্রতিদিন ছোলা খেলে আপনি পাবেন নানান উপকারিতা। প্রতিদিন ছোলা খেলে কি হয় চলুন জেনে নেওয়া যাকঃ-

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ- ছোলায় রয়েছে কম পরিমাণে ক্যালরি, ছোলায় বিদ্যমান প্রোটিন ও ফাইবার ক্ষুধার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ধীরে ধীরে ইহা শরীরের ওজন কমিয়ে দেয়।

ব্যাথা উপশম করেঃ- ছোলায় বিদ্যমান ভিটামিন বি উপাদান দেহে বিদ্যমান ব্যাথা দূর করতে সহায়তা করে। ইহা মেরুদন্ডের ব্যাথা, স্নায়ু দুর্বলতা দূর করতে সহায়তা করে।

হজম সহায়কঃ- ছোলায় বিদ্যমান উচ্চ মাত্রার ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। ছোলায় বিদ্যমান ফাইবার দ্রবনীয়। যা পরিপাকতন্ত্রে জেলের মতো পদার্থ তৈরিতে সহায়তা করে। ইহা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়, অস্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া রোধ করে। ফলে হজম শক্তির উন্নতি ঘটে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় সহজে মলত্যাগ হয়।

অ্যাজমা রোগ প্রতিরোধঃ- ছোলায় বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অ্যাজমার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধঃ- নিয়মিত ছোলা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। রোজ সকালে নিয়ম করে এই ছোলা খেলে দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়বে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধিঃ যাদের যৌন শক্তি কম, যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তারা নিয়মিত ছোলা খান। প্রতিদিন রাতে ৫/৭ টি ছোলা ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ভিজানো ছোলা খেয়ে নিন। এতে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

আয়রনের ঘাটতি দূরঃ- যাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে, যাদের রক্তস্বল্পতা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ছোলা খান। ছোলায় রয়েছে উচ্চ মাত্রার আয়রন।

উপসংহার

সম্মানিত পাঠক আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। গুগলে বহুল আলোচিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি টপিকস ছোলা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। এ ধরণের হেলথ টিপস নিয়মিত পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আরও অন্যান্য হেলথ টিপস এই ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা হবে। আমাদের সাথেই থাকুন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url