মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ - মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ

দাম্পত্য জীবনের যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো বন্ধ্যাত্ব। বন্ধ্যাত্বর সমস্যা নারী পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। ডাক্তারি ভাষায়, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া ২ বছর বা তার অধিক সময় ধরে গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে তাকে বন্ধ্যা বলে। সম্মানিত পাঠক আপনারা অনেকে গুগলে অনুসন্ধান করে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ ও মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানতে চেয়েছেন। সুতারাং আপনি যদি  মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ ও মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ না জানেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ - মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ

গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৮ জনই বন্ধ্যাত্বে শিকার হয়। বন্ধ্যাত্বের কারণে একজন পুরুষ অথবা নারীকে নানান কটু কথা শুনতে হয়। বিশেষ করে বন্ধ্যাত্বের জন্য নারীরা একটু বেশি হয়রানির শিকার হয়। চলুন তাহলে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ ও মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ

বন্ধ্যাত্ব কেন হয়

বন্ধ্যাত্ব এমন একটি সমস্যা যা দাম্পত্য জীবনের দূরত্ব তৈরি করে। নানান কারণে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হতে পারে। সাধারণত গর্ভধারণ করতে প্রয়োজন হয়ঃ সবল বীর্য, নরমাল ইউটেরাস বা জরায়ু, সুস্থ ওভাম (ডিম), নরমাল পেলভিক এ্যানাটমি। প্রাথমিকভাবে গর্ভধারণ না হওয়ার বা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার তিনটি কারণ শনাক্ত করা যায়। সেগুলো হলোঃ-

  • ডিম্বনালী বা জরায়ু সমস্যা।
  • এনুভলেশন সমস্যা ( ডিম্বাশয় থেকে ডিম নিঃসরন না হয় )
  • পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা।

ডিম্বনালী বা জরায়ু সমস্যাঃ যে সকল কারণে ডিম্বনালী বা জরায়ু সমস্যা হয় তা নিম্নরুপঃ-

  • বন্ধ্যাত্বের যতগুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো এন্ডোমেত্রিওসিস রোগ। এ রোগের কারণে মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং পেট ব্যাথা হয়।
  • জরায়ুতে টিউমার বন্ধ্যাত্বের আরেকটি কারণ। এডিনোমায়োসিস, ফাইব্রয়েড বা পলিপ এগুলো জরায়ুর টিউমার।
  • যেকোন ইনফেকশন অথবা পি আই ডি (পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ) কারণে ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে ওভাম এবং শুক্রাণু নিষিক্তকরণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বন্ধ্যা হয়ে যায়।
  • ইনফেকশন বা এন্ডোমেত্রিওসিস কারণে জরায়ু অথবা তার আশেপাশের অঙ্গ প্রত্যঙ্গে স্বাভাবিক এনাটমি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বন্ধ্যাত্ব তৈরি হয়। 

এনুভলেশন সমস্যাঃ যে সকল কারণে এনুভলেশন সমস্যা হয়ঃ-

  • অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে এনুভলেশনের সমস্যা হয়। যার কারনে বন্ধ্যাত্ব ঘটায়।
  • শরীরের ওজন স্বাভাবিক এর চাইতে কম অথবা বেশি হলে এনুভলেশনের সমস্যা হয়। 
  • নেশাজাতীয় দ্রব্য যেমনঃ ধূমপান, মদ্যপান সেবনের কারণে।
  • কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি এনুভলেশনের কারণ ঘটায়। ফলে ওভারি সাময়িক বা পরোপুরিভাবে অকার্যকর হয়ে যায়। 
  • যখন হরমোন (থাইরয়েড হরমোন, পিটুইটারি FSH, LH হরমোন ) অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ হয়। তখন এনুভলেশনের সমস্যা হয়।
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম অথবা প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর ঘটলে এনুভলেশনের সমস্যা হয়।
  • ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা এগুলোও এনুভলেশনের কারণ ঘটায়।

পুরুষ সঙ্গীর সমস্যাঃ পুরুষ সঙ্গীর যে সকল সমস্যার কারণে বন্ধ্যাত্ব ঘটেঃ-

  • বীর্য অস্বাভাবিক গঠন বা গতিশীল না হলে বন্ধ্যাত্বের কারন ঘটায়। 
  • শুক্রাণু তৈরী ব্যাহত হওয়ার কারণে বন্ধ্যাত্বের কারন ঘটায়। বিভিন্ন কারণে শুক্রাণু তৈরী ব্যাহত হয় যেমনঃ- ইনফেকশন, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, জিনগত ত্রুটি, টেস্টিসের টিউমার, ভেরিকোসেলি ইত্যাদি।

সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই সন্তান জন্মদিনের হার কমে যায়। মেয়েদের এনুভলেশনের হার কমে যায়, আর পুরুষদের শুক্রাণুর কার্যকারিতা কমে যায়। তাই গর্ভধারণের সমস্যা দেখা দিলে বিলম্ব না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয়

সম্মানিত পাঠক গুগলে অনুসন্ধান করে আপনারা বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয় তা জানতে চেয়েছেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চাপ, টেনশন, হতাশা, যন্ত্রণা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উপর প্রভাব ফেলে। যার প্রভাব আমাদের যৌন জীবনে গিয়ে পড়ে। পুরুষের একটি যৌন রোগ হলোঃ-ইরেকটাইল ডিসফাংশন। মূলত এটি ভিটামিন ডি এর অভাবে হয়। এই রোগের কারণে শুধু পুরুষের যৌন ক্ষমতা কমে না বরং প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার ও সম্ভাবনা রয়েছে।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন এই রোগের কারণে যৌন মিলনের সময়ে যৌন অঙ্গে উৎসাহ পায় না। ফলে যৌন সম্পর্কিত হাজারো সমস্যার উত্থান ঘটে। দেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা হ্রাস পায়। বিভিন্ন কারণে ইরেকটাইল ডিসফাংশন সমস্যা হয় যেমনঃ- হতাশা, মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, কিডনির রোগ, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি। ভিটামিন ডি রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা ঠিক রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি এর অভাবে ইরেকটাইল ডিসফাংশন সমস্যা হয়।

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ

বন্ধ্যাত্বের কারণে একটি জনপদে প্রজন্মের ঘাটতি পড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৪০ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী। বন্ধ্যাত্ব এমন একটি সমস্যা যা দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরিয়ে দেয়। নারীদের জন্য বন্ধ্যাত্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মহিলাদের বন্ধ্যাত্বে ৪ টি কারণ উল্লেখ করেছে যথাঃ-

  • ফ্যালোপিয়ান টিউবে ক্ষতি
  • এন্ডোমেট্রিওসিস 
  • নিরোধক ব্যাধি 
  • জরায়ু সমস্যা

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসার মাধ্যমেও বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর করা যায়। বহু দম্পতি চিকিৎসার মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে। যেকোন রোগের চিকিৎসার পূর্বে সেই রোগের উপসর্গ বা লক্ষণ জানা আবশ্যক। চলুন তাহলে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ গুলো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাকঃ-

অনিয়মিত পিরিয়ডঃ- অনিয়মিতি পিরিয়ড বন্ধ্যাত্ব ঘটায়। অনিয়মিত মাসিকের কারনে নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন বাধাগ্রস্থ হয়। ডিম্বস্ফোটন বাধাগ্রস্থ হওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছেঃ- ওজন কম, থাইরয়েডের সমস্যা, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস), স্থূলতা।

এন্ডোমেট্রিওসিসঃ- এমন একটি সমস্যা যার কারণে জরায়ু ভিতরে একটি টিস্যু বৃদ্ধি পায় এবং সেটি জরায়ুর বাহিরে ছড়িয়ে পড়ে। এই টিস্যু ছড়িয়ে পড়ে ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব, এবং জরায়ুর বাহিরের অংশে। এন্ডোমেট্রিওসিস সমস্যা থাকলে পিরিয়ড়ের সময় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়। এন্ডোমেট্রিওসিস কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে যেমনঃ- 

  • সহবাসের সময় ব্যথা
  • অনিয়মিত পিরিয়ড
  • অন্ত্রের অতিক্রমের সময় ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • যৌনতা
  • পিঠে ব্যথা
  • ক্লান্তি
  • অন্ত্রের নড়াচড়ায় ব্যথা
  • গর্ভাবস্থা

হরমোন জনিত সমস্যাঃ- হরমোনজনিত সমস্যা নারীদের বন্ধ্যাত্ব ঘটায়। হরমোনজনিত সমস্যার বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছেঃ-

  • মাথার চুল পাতলা হওয়া
  • মুখের চুল বৃদ্ধি
  • যৌন কামনা কমে যাওয়া
  • ব্রণ, ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদি।

সেক্সের সময় ব্যথা অনুভবঃ- সেক্সের সময় ব্যথা নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। সেক্সের সময় ব্যথা হওয়ার পিছনে যেসকল বিষয় দায়ীঃ- ফাইব্রয়েড, এন্ডোমেট্রিওসিস, সংক্রমণ ইত্যাদি।

মাসিক ব্লাডঃ- মাসিকের ব্লাড যদি স্বাভাবিকের চেয়ে হালকা হয় তবে এটি বন্ধ্যাত্বে লক্ষণ।

অতিরিক্ত মেদঃ- যেসকল মহিলারা মোটা তাদের গর্ভধারণের সক্ষমতা কম যা বন্ধ্যাত্বে অন্যতম কারণ।

অন্যান্য সমস্যাঃ- এন্ডোমেট্রিওসিস, ফ্যালোপিয়ান টিউবের ক্ষতি, ক্যান্সার, PCOS যা বন্ধ্যাত্বের কারণ ঘটায়।

স্বাভাবিক জীবনযাপনের অভাবঃ- অ্যালকোহল, অতিরিক্ত কফি পান, ধূমপান, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ওজন যা বন্ধ্যাত্বের কারণ ঘটায়।

মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া ১ বা ২ বছরের মধ্যে যদি সন্তান জন্ম দিতে ব্যর্থ হয় তখন তাকে বন্ধ্যাত্ব বলে। বন্ধ্যাত্ব নারী - পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। বন্ধ্যাত্ব ২ ধরণের হয়ে থাকে যথাঃ-

  • প্রাইমারি বন্ধ্যাত্বঃ যারা সন্তান জন্ম দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ।
  • সেকেন্ডারি বন্ধ্যাত্বঃ যারা আগে সন্তান জন্ম দিয়েছে কিন্তু পরে আর সন্তান জন্ম দিতে পারছে না।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিয়ের প্রথম বছরে গর্ভধারণে সক্ষম হয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ দম্পতি, বিয়ের ২য় বছরে গর্ভধারণে সক্ষম হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ দম্পতি, আর প্রায় ১০ শতাংশ দম্পতির গর্ভধারণে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী করা হয় প্রায় ৪০ শতাংশ পুরুষ, ৪০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ নারী-পুরুষ উভয়কে। এখন আমরা জানব মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব কেন হয়, মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ কী সেগুলো বিষয়ে বিস্তারিত ঃ-

  • হরমোন জনিত সমস্যার কারণে বহু নারীর গর্ভধারণে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে ২টি হরমোনের নাম হলোঃ-থাইরয়েডের সমস্যা, প্রোল্যাকটিন হরমোন সমস্যা।
  • যেসকল নারীদের পলিসিস্টিক ওভারি সমস্যা রয়েছে তাদের ডিম্বাণু ওভারি থেকে নিঃসৃত হয় না যার কারণে নারীরা বন্ধ্যা হয়ে যায়।
  • যৌনবাহিত রোগ যেগুলো নারীদের প্রজনন অঙ্গে ক্ষতি করে গর্ভধারণে বাধা তৈরি করে।
  • এন্ডোমেট্রিওসিস ও চকলেট সিস্ট এই রোগ গুলো নারীদের বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়।
  • তাছাড়া বিশেষ কিছু ত্রুটি যেমনঃ ডিম্বাশয় ছোট থাকা, জরায়ু না থাকা, জন্মগতভাবে ডিম্বাণু না থাকা বা কম থাকা, অপরিপক্ব থাকা এই ত্রুটি গুলো নারীদের বন্ধ্যাত্ব ঘটায়।
  • অন্যান্য কমন সমস্যা যেমনঃ- মানসিক চাপ, খাদ্যাভাস, পরিবেশগত প্রভাব, ক্যান্সার সহ ইত্যাদি নানান কারণে ডিম্বানুর সংখ্যা কমে যাওয়ায় নারীরা বন্ধ্যা হয়ে যায়।

বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উপায়

দাম্পত্য জীবনের পূর্ণতা পায় সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে। আমরা বন্ধ্যাত্ব  বলতে নিঃসন্তানকে বুঝে থাকি। বন্ধ্যাত্ব কতটা কষ্টকর যারা বন্ধ্যাত্বের শিকার হয়েছে তারাই বুঝে। চিকিৎসার পরেও অনেক সময় বন্ধ্যাত্বে সুনিদিৃষ্ট কারণ পাওয়া যায় না। তাই বন্ধ্যাত্ব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক খাদ্যাভাসের পাশাপাশি সঠিক ভাবে জীবনযাপনের প্রয়োজন। এখন আমরা আলোচনা করব বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে বিস্তারিতঃ-

  • এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খানঃ- এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেগুলো পুরুষের শুক্রানু ও মহিলার ডিম্বানুকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বলতে আমরা বুঝে থাকি ভিটামিন এ, সি, ই এবং ফোলেটকে বুঝে থাকি। মৌসুমী ফল, বীজ জাতীয় খাবার যেমনঃ- কুমড়োর বীজ, ব্ল্যাক চকলেট, শাকসবজি, বাদাম এগুলো এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার এগুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন।
  • আঁশযুক্ত খাবারঃ- যেগুলো রক্তে শর্করা ব্যালেন্স ঠিক রাখবে এবং হরমোন চলাচলে সহজ করবে। আমরা জানি বন্ধ্যাত্বের অন্যতম একটি কারণ হরমোনজনিত সমস্যা। মটরশুটি, শিমের বিচি, ছোলা, মটর, খোসাজাতীয় ফল যেমনঃ-পেয়ারা, বরই, শাকসবজি, লাল চালের ভাত, লাল চালের রুটি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন।
  • দুধের তৈরি খাবারঃ- গরুর দুধ, ছানা, পনির, দই এগুলো খান। মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব দূর করতে নিয়ম করে এক গ্লাস দুধ পান করুন।
  • প্রাণিজ প্রোটিনঃ- মাছ, মাংস এগুলো খান। যা বন্ধ্যাত্ব দূর করতে সহায়তা করবে। 
  • উদ্ভিজ প্রোটিনঃ-  ডাল, বাদাম, মটর, ছোলা, বীচি জাতীয় খাবার এগুলো নিয়মিত খান। এগুলো বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে।
  • ডিমঃ- সকলের প্রিয় একটি খাবার। শরীরে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি করতে নিয়মিত ডিম খান।
  • টমেটোঃ- টমেটো থেকে পাওয়া যায় লাইকোপেন। যা পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করতে সহায়তা করে। টমেটো সালাদ করে, রান্না করে খান। তাছাড়া কমলা, আনার, মাল্টা, আখরোট ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন।

যেসকল খাবার ত্যাগ করবেনঃ- বন্ধ্যাত্ব দূর করতে যেসকল খাবার ত্যাগ করা দরকারঃ-

  • মিষ্টি জাতীয় খাবার, কোল্ড ড্রিংকস, বিস্কুট, সাদা চালের ভাত, রুটি এগুলো পরিহার করবেন। কারণ এই খাবার রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যার কারণে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম তৈরি হয় হয় যা বন্ধ্যাত্বের কারণ ঘটায়।
  • চিকেন জাতীয় খাবার, ডালডা, তেলে ভাজার খাবার, মুখরোচক খাবার এগুলো পরিহার করবেন।
  • নেশাজাতীয় দ্রব্যঃ- মদ, ধূমপান, অ্যালকোহল ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। কারণ তা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক।

অন্যান্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসঃ- পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ওজন কম রাখা, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা, বেশি করে পানি পান এগুলোকে জীবনযাপনের অভ্যাস বানিয়ে নিন।

মাল্টিভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারঃ- ভিটামিন ই, ভিটামিন বি৬, গ্রীন টি  এগুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন।

উপসংহার

সম্মানিত পাঠক পুরো পোস্ট জুড়ে প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি টপিকস বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে বন্ধ্যাত্ব কেন হয়, বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয়, মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ, মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের কারণ, বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এই রকম স্বাস্থ্য সম্পর্কিত টপিকস নিয়মিত পেতে আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url