৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ - ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম

এই পোস্টে ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ, ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম নিয়ে আলোচনা করা হবে। সুতারাং এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আল্লাহ তার মুমিন বান্দাদের জন্য ১ বা ২ টি নয়, বরং বড় বড় ৮টি জান্নাতের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সেখানে মুমিন বান্দা গণ চিরকাল জান্নাতের নিয়ামত ভোগ করবে। আপনি যদি ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ, ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম না জানেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ - ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম

জান্নাত মুমিন বান্দাদের জন্য ভোগ-বিলাসের জায়গা, জান্নাতীদের এখানে কোন মৃত্যু নেই, কোন রোগ নেই। দুনিয়ার জীবনে মুমিন বান্দাদের যে সকল আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় নি, জান্নাতে আল্লাহ তাদের সেকল আকঙক্ষা পূরণ করে দিবেন। জান্নাত হবে এমন একটি জায়গা যা দুনিয়ার মানুষ চোখে দেখেনি, কানে শুনেনি, কল্পনাও করতে পারে নি এরকম একটি জায়গা হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ - ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ

৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম

জান্নাতীরা অনন্তকাল জান্নাতে থাকবে ও জান্নাতের নিয়ামত গুলো ভোগ করতে থাকবে। আল্লাহ জান্নাত এমনভাবে তৈরি করেছে যা দুনিয়ার কোন চোখ তা দেখে নি, কল্পনাও করে নি। ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম কি তা অনেকেই জানে না। এখন আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

জান্নাতুল ফেরদাউসঃ এই জান্নাত আরশের নিকটে অবস্থিত। জান্নাতুল ফেরদাউস এর অর্থ হলো সুসজ্জিত বাগান। যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তাদেরকে এই জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআন মাজীদে বলা হয়েছে “ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদের আতিথেয়তার জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউস ” (সুরা কাহাফ: ১০৭)।

জান্নাতুন নাঈমঃ জান্নাতুন নাঈম অর্থ নেয়ামতপূর্ণ বাগান। মুত্তাকীদের জন্য আল্লাহ এই জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মাজীদে বলা আছে ‘নিশ্চয় মুত্তাকিদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত।’ (সুরা কলম: ৩৪)।

জান্নাতুল মাওয়াঃ যারা ইমান আনবে ও নেক আমল করবে তাদের জন্য এই জান্নাত। এই জান্নাতে নেককার ও শহীদের রুহগুলো থাকবে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মাজীদে বলা আছে  ‘আর যারা ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে তাদের জন্য তাদের আমলের প্রতিদানস্বরূপ রয়েছে জান্নাতুল মাওয়া।’ (সুরা সাজদাহ: ১৯)।

জান্নাতুল আদনঃ যার অর্থ অনন্ত সুখের বাগান‌। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মাজীদে বলা আছে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জান্নাতুল আদন, তারা তাতে প্রবেশ করবে, যার তলদেশে ঝরনাসমূহ বয়ে গিয়েছে। তাদের জন্য সেখানে তারা যা চাইবে তাই রয়েছে, এভাবেই আল্লাহ মুত্তাকিদের পুরস্কার দিয়ে থাকেন।’ (সুরা নাহল: ৩১)।

দারুস সালামঃ মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের রবের কাছে তাদের জন্য রয়েছে শান্তির আবাস এবং তারা যা করত তার জন্য তিনিই তাদের অভিভাবক।’ (সুরা আনআম: ১২৭)।

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ (দারুস সালাম) শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন সরল পথের দিকে।’ (সুরা ইউনুস: ২৫)।

দারুল খুলদঃ ধৈর্য্যশীলদের জন্য আল্লাহ এই জান্নাতের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন  ‘তোমরা তাতে শান্তির সঙ্গে প্রবেশ করো, এটাই (খুলদ) স্থায়িত্বের দিন।’ (সুরা কাফ: ৩৪)। 

আরও ইরশাদ হয়েছে “তারাই যাদের প্রতিদান হিসেবে দেওয়া হবে জান্নাতের সুউচ্চ কক্ষ, যেহেতু তারা ছিল ধৈর্যশীল। আর তারা প্রাপ্ত হবে সেখানে অভিবাদন ও সালাম” (সুরা ফুরকান: ৭৫)।

দারুল মাকামঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে (দারুল মাকাম) স্থায়ী নিবাসে স্থান দিয়েছেন, যেখানে কোনো কষ্ট আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং কোনো ক্লান্তিও আমাদেরকে স্পর্শ করে না।’ (সুরা ফাতির: ৩৫)।

দারুল কারারঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমার কওম, এ দুনিয়ার জীবন কেবল ক্ষণকালের ভোগ; আর নিশ্চয়ই আখেরাত হলো (দারুল কারার) স্থায়ী আবাস।’ (সুরা গাফির: ৩৯)।

সূত্রঃ https://dhakamail.com.

৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ

উপরের প্যারায় আমরা জেনেছি ৮টি জান্নাত সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ। মুসলমান হিসেবে এই জান্নাতের নামের অর্থ গুলো আমাদের জানা দরকার। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

১. জান্নাতুল ফেরদাউস যার অর্থ - স্বর্গের উদ্যান, জান্নাতের সর্বোচ্চ বাগান, সুসজ্জিত বাগান।

২. জান্নাতুন নাঈম যার অর্থ - সুখ স্বাচ্ছন্দ ও নেয়ামতের উদ্যান, নেয়ামত পূর্ণ কানন/বাগান।

৩. জান্নাতুল মাওয়া যার অর্থ - প্রকৃত আশ্রয়স্থল, বসবাসের জান্নাত।

৪. জান্নাতুল আদন যার অর্থ - স্থায়ী জান্নাত, অনন্ত সুখের বাগান‌।

৫.দারুস সালাম যার অর্থ - শান্তির নিবাস, শান্তির নীড়।

৬. দারুল খুলদ যার অর্থ - স্থায়ী শান্তি, চিরস্থায়ী বাগান।

৭. দারুল মাকাম যার অর্থ - স্থায়ী নিবাস, বাড়ি।

৮.দারুল কারার যার অর্থ - এমন আবাস যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই, আখেরাতের আলয়‌।

সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম কি

জান্নাত হলো ৮টি। তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম কি জানতে চান ? সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম হলো জান্নাতুল ফেরদাউস। যারা আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা, নবীদের দেখানো পথে যারা দুনিয়ার জীবন অতিবাহিত করেছে, যারা আল্লাহর জন্য জান-মাল কুরবানী করেছে, আল্লাহর জন্য ইবাদত করেছে, রোজা রেখেছে, যাকাত দিয়েছে, হজ্জ করেছে, জিহাদ করেছে, ভুলের জন্য তওবা করেছে আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে সুসংবাদ দিয়েছে। জান্নাতের মধ্যে সবচেয়ে বড় জান্নাত হলো জান্নাতুল ফেরদাউস। জান্নাতুল ফেরদাউস চাওয়ার জন্য নবী (সা) আমাদের উপদেশ দিয়েছেন। সম্মানিত পাঠক আপনি নিশ্চয় এতক্ষণে জেনে গেছেন সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম কি সেই বিষয়ে।

জান্নাতের ৮ টি দরজার নাম

আল্লাহ তার মুত্তাকী বান্দাদের জন্য তৈরি করেছেন ৮টি জান্নাত। মুত্তাকী বান্দা গণ জান্নাতে প্রবেশ করবে ৮টি দরজা দিয়ে। এই আটটি দরজার নাম সরাসরি এক জায়গায় পাওয়া না গেলেও কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই দরজা গুলোর নাম জানা যায়। মুত্তাকীগণ তাদের আমল অনুযায়ী সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আসুন জেনে নিই জান্নাতের ৮টি দরজার নামঃ

বাবুস আস-সালাহঃ যারা নিয়মিত নামাজ আদায় করে তাদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে বাবুস আস-সালাহ। নামাজী ব্যাক্তিরা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

বাবুল জিহাদঃ যারা আল্লাহর রাস্তায় জীবন দিয়ে, সম্পদ দিয়ে জিহাদ করবে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। মুজাহিদীনদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে বাবুল জিহাদ।

বাবুর-রাইয়ানঃ যারা রোজা রাখবে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এই দরজা দিয়ে যারা প্রবেশ করবে আজীবনের জন্য তাদের পানির পিপাসা মিটে যাবে। রোজাদারদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে বাবুর রাইয়ান।

বাবুস-সদকাঃ যারা আল্লাহর পথে টাকা পয়সা দান করবে, অভাবী মানুষদের টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্যে করবে তারা বাবুস-সদকা দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। দানশীল ব্যাক্তিদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে বাবুস-সদকা।

বাবুল আইমান/বাবুস শাফাআতও/বাবুল মুতাওয়াক্কিলিনওঃ যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে থাকার জায়গা পাবে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

বাবুল কাজিমিনাল গইজা ওয়াল আফিনা আনিন্নাসঃ যারা মানুষকে ক্ষমা করবে, নিজের ক্রোধ বা রাগ নিয়ন্ত্রণ করবে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

বাবুর-রাদ্বিনঃ যারা আল্লাহর যেকোন ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকে, আল্লাহও তাদের উপর রাজি বা খুশি থাকে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

বাবুত-তাওবাঃ যারা তাদের কৃত-কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, তওবা করে তারা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের সম্মানে এই দরজার নাম করা হয়েছে বাবুত-তাওবা।

উপসংহার

সম্মানিত পাঠক আশা করি পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে। এই পোস্টে ৮টি জান্নাতের নাম কি কি | ৮ টি বেহেশতের নাম, ৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ, সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতের নাম কি, জান্নাতের ৮ টি দরজার নাম, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পোস্টটি কেমন হয়েছে তা কমেন্ট বক্সে জানান। এরকম ইসলামিক তথ্য আরো পেতে এই লিংকে চাপ দিন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url