কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম - কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

আপনি কি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় নাজেহাল ? এই কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা যেকোন বয়সের মানুষের হতে পারে। মূলত তেলে-ভাজা খাবার বেশি খাওয়া, পানি কম খাওয়া, খাবারের প্রতি অনিয়ম, স্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দিয়ে মুখরোচক খাবারের প্রতি যাদের ঝোঁক বেশি তাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই পোস্টে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম নিয়ে আলোচনা করা হবে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় কী সেটি নিয়েও বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় না জানেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম -  কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, শৃঙ্খলাহীন জীবনযাপন কোষ্ঠকাঠিন্যর জন্য দায়ী। সপ্তাহে ৩ বারের কম টয়লেট হলে চিকিৎসকদের ভাষায় সেটি কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণ। যখন টয়লেট অনিয়মিত হয়, মল শক্ত ও শুষ্ক হয় সেটিই কোষ্ঠকাঠিন্য। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে চিন্তার কোন কারণ নেই। কেননা এই পোস্টে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় ? কারণ কী ? আমরা যদি কারণ না জানি তাহলে তাহলে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো না। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ আমাদের প্রথমে অনুসন্ধান করতে হবে। শারীরিক যতগুলো সাধারণ সমস্যা আছে তার মধ্যে একটি হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি বৃহৎ আকারে দেখা দেয়। এই আলোচনা থেকে আমরা জানব কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় সেই বিষয়ে।

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা। যখন শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়, তখন মল শক্ত হয়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
  • ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবারের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • শারীরিক ব্যায়াম না করলে বা কায়িক শ্রম না করলে, মানসিক দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • টয়লেটের চাপ লাগলে টয়লেট না করার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এজন্য যখনই টয়লেট লাগবে সঙ্গে সঙ্গে টয়লেট সেরে নিতে হবে।
  • ঠিকঠাক টয়লেট ক্লিনার না হলে এ ধরণের সমস্যা হয়।
  • সময়মতো খাবার না খাওয়া। খাবারে অনিয়মের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • মানসিক চাপ, অবসাদ, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
  • শরীরের পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
  • নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনের কারণে অথবা চা, কফি পান করলে এ ধরণের সমস্যা লক্ষ্য করা যায়।

সম্মানিত পাঠক, কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় ? কারণ কী ? এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। উপরোক্ত এই কারণ গুলো যদি আপনার মাঝে থাকে তাহলে এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী আলোচনা থেকে আশা করি তা জানতে পারছেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণ

আগে জেনেছি কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ সম্পর্কে। এখন আমরা জানব কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ সম্পর্কে। কি কি লক্ষণ থাকলে বুঝা যাবে এটা কোষ্ঠকাঠিন্য সে সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান থাকা দরকার। কারও ক্ষেত্রে এটি সাধারণ সমস্যা, কারও ক্ষেত্রে এটি জটিল সমস্যা। যেকোন বয়সের মানুষের এই সমস্যা হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ গুলো হলোঃ

  • মূল এবং প্রধান লক্ষণ হলো মল শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • ঠিকমতো টয়লেট না হওয়া।
  • টয়লেট করতে অনেক সময় লাগে।
  • খাবারে অরুচি দেখা দেয়।
  • সবসময় পেট ভরা থাকে।
  • পেট ফোলা থাকে।
  • তলপেটে ব্যথা অনুভব হওয়া।
  • মলদ্বারের স্থানে ব্যথা অনুভব হওয়া।
  • সাপোজিটরি, আঙুল, কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমের সাহায্যে টয়লেট করা।
  • একটু পর পর বায়ু ছাড়া।

সম্মানিত পাঠক, আপনি নিশ্চয় এতক্ষণে কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। উপরোক্ত এই সমস্যা গুলোর কোন একটি আপনার হলে আপনি অনুমান করতে পারেন ইহা কোষ্ঠকাঠিন্যে কারণে হয়েছে। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলুন। ঘরোয়া উপায় গুলো নিচের প্যারায় বর্ণনা করা হয়েছে।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যা হয়

কোষ্ঠকাঠিন্যকে আমরা যতটা সাধারণ সমস্যার মধ্যে ফেলেছি এটা ততটা সাধারণ সমস্যা নয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে টয়লেট করতে অনেক কষ্ঠ হয়। মলদ্বার ছিড়ে রক্ত বের হওয়া আশংকা থাকে। যার কারণে পরবর্তীতে টয়লেট করতে ভয় লাগে। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে টয়লেট কষা হয়ে যায়। টয়লেট সারতে অনেক সময় লাগে। ঘন ঘন কোষ্ঠকাঠিন্য যদি হয় তাহলে এটি অন্য রোগের লক্ষণও হতে পারে। যেমনঃ ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, কোলন ক্যান্সার, অ্যাপেনডিসাইটিস,  স্নায়বিক ব্যাধি  এবং গ্যাস্ট্রোপেরেসিস, প্যানক্রিয়াটাইটিস, কোলেসিস্টাইটিস ইত্যাদি এই ধরণের সমস্যা হতে পারে। আশা করি আলোচনা থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যা হয় তা জানতে পারছেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় কী

অনেকের ভাবনা এরকম যে ওষুধ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু ঘরোয়া উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায় আমরা অনেকেই তা জানি না। কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যেকোন বয়সের মানুষের এই সমস্যা হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দৈনন্দিন যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। খাদ্যাভ্যাসের অনিয়মের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চললে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই ঘরোয়া উপায় গুলো হলোঃ

কলাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কলা ভীষণ কার্যকরী। কলাতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। কলা হজমশক্তি আরোও গতিশীল করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে নিয়মিত কলা খান।

কলমি শাকঃ কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। যা হজম, পরিপাক, বিপাকের কাজে সহায়তা করে। তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত কলমি শাক রাখার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এত ব্যস্ততা যে পানি পান করার সময় নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেখা যায়। তাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি দৈনিক ৩ লিটার পানি পান করুন।

লেবুঃ হালকা কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস, আধা চামচ লবণ, সামান্য মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খান। ইহা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের মধু খাওয়া উচিত নয়।

মধুঃ মধুতে রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ। ইহা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এজন্য আপনি দিনে দুই চামচ করে তিনবার মধু খেতে পারেন। এতে ফল পাওয়া যায়। তাছাড়া হালকা গরম পানির সাথে পরিমাণমতো মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের মধু খাওয়া উচিত নয়।

আঙ্গুরঃ প্রতিদিন আঙ্গুর বা আঙ্গুরের জুস খান। যদি আঙ্গুর সহজলভ্য না হয় বা বাসায় না থাকে তাহলে ১০-১৫টি কিসমিস রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সকালে খালি পেটে খান আশা করা যায় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।

পালংশাকঃ এটি হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে। পালংশাক রান্না করে অথবা যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে পালংশাকের রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২ বার করে খেতে পারেন।

ক্যাস্টর অয়েলঃ এটি সকালে খালি পেটে ১/২ চামচ অথবা ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে খান। তবে এটি দীর্ঘদিন খাবেন না। কেননা, এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।

কমলাঃ কমলা পেট নরম করে। তাই কমলার ‍জুস খাওয়ার চেয়ে কমলা খাওয়াটাই শ্রেয়। কমলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে অত্যন্ত সহায়ক।

বেরি জাতীয় ফলঃ বেরি জাতীয় ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে।

গমের আটাঃ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা গমের আটার তৈরি রুটি নিয়মিত খেতে পারেন। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্যে করে।

নাশপাতিঃ একটি নাশপাতি ২২ শতাংশ আঁশের চাহিদা পূরণ করে। তাই নাশপাতি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

ইসবগুলের ভুসিঃ ইহা মল নরম করে। এটাতে রয়েছে অদ্রবনীয় আঁশ যা প্রচুর পানি শোষণ করে। ইসবগুলের ভুসি সকালে খালি পেটে ও রাতে ঘুমানো আগে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খান। তবে ইসবগুলের ভুসি খেলে প্রচুর পানি পান করতে হবে নইলে মলত্যাগ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

তাছাড়া আরও অন্যান্য ফল যেমনঃ পেয়ারা, শসা, আপেল,দই খেতে পারেন এতে উপকার পাওয়া যাবে।

দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকাঃ খাদ্য অভ্যাসের পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মানতে হবে যেমনঃ দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা।

ব্যায়াম করাঃ নিয়মিত ব্যায়াম বা হাটা চলা করলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

টয়লেট চেপে না রাখাঃ যখনই টয়লেট লাগবে সঙ্গে সঙ্গে টয়লেট করতে হবে। টয়লেট চেপে রাখার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা গুলো তৈরি হয়।

খাদ্য পরিবর্তন করাঃ যেসকল খাবার যেমন- তেলেভাজা, ফাস্ড ফুড, মুখরোচক খাবার কিন্তু অস্বাস্থ্যকর সেসব খাবার খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। তাই সেই খাবার গুলো পরিহার করতে হবে।

সম্মানিত পাঠক এই প্যারায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস শেয়ার করা হয়েছে। এই টিপস এন্ড ট্রিকস গুলো মেনে চললে আশা করা যায় কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম

শুরুতে জানিয়ে রাখা ভাল, যেকোন ধরনের সিরাপ গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কেননা, আমরা তো জানি না আপনার শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য কোন সিরাপটি উপযুক্ত হবে। আর ঔষধ/সিরাপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেগুলো না বুঝে খাওয়ার কারণে হিতের বিপরীত হতে পারে। আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম বলে দিতে পারি কিন্তু আপনার উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই ঔষধের সিরাপ গুলো সেবন করা। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ গুলো হলোঃ

মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়াঃ বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, পেট ফাপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট খারাপ এর জন্য মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া এই সিরাপটি সেবন করা যেতে পারে। আমি শুরুতেই বলেছি যেকোন সিরাপ/ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিবেন। তারা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে আপনাকে একটি ভালো পরামর্শ দিবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভূগছেন তারা মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া এই সিরাপটি সেবন করতে পারেন। কুসুম গরম পানির সাথে সিরাপটি ৪ চা চামচ গুলিয়ে খান।  মল নরম হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে। প্রাপ্ত বয়স্করা ঘুমানোর আগে বা নাস্তার আগে ১৫-৩০ মি.লি। ৭ বছরের উপরে শিশুরা ৭.৫-১৫ মি.লি। ৩-৭ বছরের শিশুরা ৫-১০ মি.লি।

এ্যাভোলাকঃ এই সিরাপে থাকা জোলাপ শক্ত টয়লেটকে নরম করতে সহায়তা করে। আমরা যখন এই সিরাপ সেবন করি তখন এটা শরীরের ভিতর পানি উৎপন্ন করে তখন শক্ত টয়লেট আপনা আপনি নরম হয়ে যাবে। সিরাপটি সেবনের কিছুক্ষণের মধ্যে টয়লেট হয়।

ক্রিমাপিন প্লাস সিরাপঃ এই সিরাপটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খুবই কার্যকরী। এই সিরাপটি সেবন করলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে পেট ক্লিয়ার হয়ে যাবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার আরও অন্যান্য সিরাপঃ ডি ল্যাক সিরাপ (Dlac syrup), ইজিফিল সিরাপ (Ezyfeel), ডালকোফ্লেক্স সিরাপ (Dulcoflex), ল্যাকটুলুজ সিরাপ (Lactulose syrup) ইত্যাদি।

সতর্ক বার্তাঃ যেকোন ঔষধ বা সিরাপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকাটা স্বাভাবিক। এই সিরাপ গুলো সেবনের পরে ডায়রিয়া, বমি, ঘুম ঘুম ভাব দেখা দিতে পারে। উপরের যতগুলো সিরাপের কথা বলা হয়েছে সব সিরাপ সবার জন্য উপযুক্ত নয়। তাই সিরাপ গুলো খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। নইলে হিতের বিপরীত হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য ওষুধ

এখন আমি আলোচনা করব কোষ্ঠকাঠিন্য ওষুধ নিয়ে। সব ওষুধ সবার শরীরের জন্য উপযুক্ত নয়। এজন্য যেকোন ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। তারা আপনার শরীর চেকআপ করে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ বের করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের কোন ওষুধ আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত হবে তারা আপনাকে তা জানিয়ে দিবে। যেহেতু প্রশ্ন ছিলো কোষ্ঠকাঠিন্য ওষুধ নিয়ে তাই আমি আপনাকে ওষুধের নাম গুলো বলে দিচ্ছি।

Lactulose (Cephulac,Constulose, Duphalac, Enulose, Kristalose)ঃ এই ওষধটি অন্ত্রে জল টেনে নিয়ে শক্ত ও শুষ্ক মলকে নরম করে দেয়। এই ওষুধ সেবনের পরে গ্যাস, পেট ব্যথা, পেট খারাপ, বমি, ডায়রিয়া হতে পারে।

Linaclotide (Linzess)ঃ এই ক্যাপসুলটি দিনে একবার করে খেতে হয়। যারা দীর্ঘদিন ধরে পেটের সমস্যায় ভূগছেন ও দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভূগছেন তাদের জন্য এই ওষুধটি। এই ওষধটি অন্ত্রে জল টেনে নিয়ে পায়খানা নরম করে। এই ওষধটি সেবনে ডায়রিয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।

Polyethylene glycol (PEG) (Golytely, Nulytely)ঃ এটি একটি পাউডার যেটা পানির সাথে মিস্ক করে পান করতে হয়। যখন আপনি এটা পান করবেন তখন কোলনে এটি পানি সরবরাহ করে। মলকে নরম করে দেয়। পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি বমি ভাব, ফোলাভাব দেখা যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য আরও অন্যান্য ওষুধঃ Lubiprostone (Amitiza), Plecanatide (Trulance), Prucalopride (Motegrity) ইত্যাদি।

সতর্ক বার্তাঃ কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক সেবন করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবনের পরে যদি ‍ওষুধের অসহনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

উপসংহার

সম্মানিত পাঠক এই পোস্টে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিকস কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আলোচনা করা হয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণ, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যা হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় কী,  কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম, কোষ্ঠকাঠিন্য ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি আপনার উপকারে এসেছে। এ রকম স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পোস্ট আরো পেতে এই লিংকে চাপ দিন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url