টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনি কি টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই কোন প্রকার স্ক্রিপ না করে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। এতে আপনারই উপকার হবে।
টাইফয়েড জ্বর অতি পরিচিত রোগগুলোর মধ্যে একটি। যে কোন বয়সের মানুষের এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগ হলে সময়মতো চিকিৎসা করা অতীব জরুরী। সময় মত চিকিৎসা করার না হলে এ রোগ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত
- টাইফয়েড জ্বর
- কারা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে
- টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সমূহ
- টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা পদ্ধতি
- টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে করণীয়
টাইফয়েড জ্বর
মূলত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের দ্বারা টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে। এই জ্বর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের অন্যান্য অঙ্গকে আক্রান্ত করে। দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে এই জ্বর গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। এই জ্বর সৃষ্টি হয় ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা। সে ব্যাকটেরিয়ার নাম হলো সালমোনেলা টাইপি। টাইফয়েড অত্যন্ত সংক্রামক। এটা ছোঁয়াচে একটি রোগ। এ রোগ এক ব্যক্তির দেহ থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে সহজে প্রবেশ করতে পারে। যদি কেউ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্য বা পানি পান করে তাহলে সুস্থ ব্যক্তির এই রোগ হতে পারে। সাধারণত অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং দূষিত পানি পান করলে এই জ্বর হতে পারে।
কারা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে
যেকোনো বয়সের মানুষের এ টাইফয়েড জ্বর হতে পারে। কারা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে তার সুনির্দিষ্ট ভাবে বলা মুশকিল। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এ রোগ হতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। স্বাভাবিকভাবে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, বা গুরুতর রোগে আক্রান্ত এমন ব্যক্তি টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। তাই সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা করা জরুরি।
টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সমূহ
অন্যান্য রোগের মত টাইফয়েড জ্বরের কিছু সুনিদিৃষ্ট লক্ষণ রয়েছে। টাইফয়েড জ্বরের তাপমাত্রা কখনো কম বা কখনো বেশি হয়ে থাকে। তবে একেবারে তা নির্মূল হয় না। টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ গুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- দীর্ঘায়িত উচ্চচর জ্বর জ্বর
- ক্লান্তি
- মাথা ব্যাথা
- বমি বমি ভাব
- পেটে ব্যথা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- ডায়রিয়া হওয়া
এ রোগ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বর নিশ্চিত করা যায়।
টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা পদ্ধতি
টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা পদ্ধতির ভূমিকা ব্যাপক। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে এ জ্বর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সাধারণত এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এর জ্বরের চিকিৎসা করা হয়। এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার পরও জ্বর কমতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে এ রোগ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। এ সময় রোগীকে বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ানো জরুরী। কারণ দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা ডায়েরিয়ার কারণে রোগী শরীরে পানির পরিমাণ কমে যেতে পারে। টাইফয়েড রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামের মধ্যে রাখতে হবে। রোগীর শরীরে বেশ গরম হলে ভেজা গামছা দিয়ে ঘা মুছে দিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার গুলো বেশি করে খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে যতদিন না রোগী সুস্থ হচ্ছে।
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে করণীয়
যে কোন রোগ চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করার চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা অবলম্বন করা উত্তম। অনেকে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টীকা গ্রহণ করে। তবে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধের টিকা গ্রহণ যথেষ্ট না। অন্যান্য স্বাস্থ্য পদ্ধতি মেনে চলা উত্তম। সাধারণত দূষিত খাবার ও দূষিত পানি গ্রহণের গ্রহণের দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগ প্রতিরোধে করণীয়গুলো তুলে ধরা হলোঃ
- শাক সবজি, ফলমূল রান্নার পূর্বে ভালোভাবে ধুয়ে জীবানু মুক্ত করে নিতে হবে।
- শাকসবজি অবশ্যই ভালোভাবে রান্না করতে হবে।
- থালা-বাসন এগুলো সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- খাবার- খাওয়ার পূর্বে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে যাতে জীবাণু না থাকে।
- খাবার পানি অবশ্যই জীবাণুমুক্ত হতে হবে।
- আপনার বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করা যাবে না।
- টয়লেট করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধৌত করতে হবে।
উপরোক্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে এ ধরনের রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এবং হাসিখুশি জীবন পরিচালনা করা যায়।
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন টাইফয়েড জ্বর এর লক্ষণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে এ ধরনের সুন্দর সুন্দর ব্লগ পোস্ট করা হয়। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।
পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url