টিউমার ও ক্যান্সার এর মধ্যকার পার্থক্যসমূহ জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আপনি কি টিউমার ও ক্যান্সার এর মধ্যকার পার্থক্য জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে টিউমার ও ক্যান্সার পার্থক্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কোন প্রকার স্কিপ না করে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এতে আপনি উপকৃত হবেন।

টিউমার ও ক্যান্সার মধ্যকার পার্থক্য সমূহ জানুন

অনেকে মনে করে টিউমার ও ক্যান্সার একই জিনিস। না, এটা ভুল ধারণা। টিউমার আবার ক্যান্সার রুপান্তর হতে পারে। সব টিউমার ক্যান্সার নয়। টিউমার বলতে কিছু অস্বাভাবিক টিস্যুর সমষ্টিকে বুঝায়। যেগুলো পিন্ড বা নিওপ্লাজম নামে পরিচিত।

পোস্টসূচিপত্রঃ টিউমার ও ক্যান্সার মধ্যকার পার্থক্য

টিউমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

টিউমারকে প্রধানত দুটো ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা যেতে পারে। একটি হলো বিনাইন টিউমার অন্যটি হলো ম্যালিগ্যান্ট টিউমার। বিনাইন টিউমারকে ক্যান্সার বলে না। বিনাইন টিউমার এর বৈশিষ্ট্য হলো এটি শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত ছড়ায় না। অন্যদিকে ম্যালিগ্যান্ট টিউমারকে ক্যান্সারে টিউমার বলে । ম্যালিগ্যান্ট টিউমার এর বৈশিষ্ট্য হলো এটি শরীরের একস্থান থেকে অন্যস্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রি-ক্যান্সার টিউমার শরীরের যেকোন অংশে দেখা দিতে পারে। যেমনঃ ত্বক,শ্বাসযন্ত্র, বা শরীরের অন্যান্য অংশে। প্রি-ক্যান্সার টিউমার শুরুতে শনাক্ত করা জরুরী যাতে টিউমারটি ক্যান্সারে রুপান্তর হওয়ার আগেই চিকিৎসা করা যায়।

আরো পড়ুনঃ ক্যান্সার কি-ক্যান্সার রোগের কারণ ও লক্ষণসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের টিউমার আছে। যেমনঃনিম্ফোনাস,সারকোমাস,জীবানু কোষের টিউমার এবং আরও অনেক কিছু। প্রত্যেকটি টিউমারের নিজস্ব কিছু স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যাহা একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে থাকে। সঠিকভাবে টিউমারের পার্থক্য বুঝাটা জরুরী যাতে সঠিকভাবে চিকিৎসা করা যায়। তাই বলা যায় সকল টিউমার ক্যান্সার নয়। টিউমার ও ক্যান্সার এর মধ্যকার পার্থক্য বুঝাটা জরুরী।

ক্যান্সার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ক্যান্সার হলো এমন এক ধরনের রোগের গ্রুপ যার েদ্বারা সৃষ্ট অস্বাভাবিক কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিভাবে বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ম্যালিগ্যান্ট টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়। কিছু অতি পরিচিত ক্যান্সারের নাম যেমন ব্লাড ক্যান্সার, পাকস্থলী ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার  ইত্যাদি। প্রত্যেকটি ক্যান্সার এর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং প্রতিটি ক্যান্সার এর   জন্য পৃথক পৃথক চিকিৎসা করা হয়। ক্যান্সার রোগ দ্রুত শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। যখন টিউমারের কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে তখন সেটা ক্যান্সারে রূপান্তর হওয়ার সম্ভাবণা বেশী থাকে। তাইা বলা যায় টিউমার ও ক্যান্সার দুটো ভিন্ন বিষয়।

টিউমার ও ক্যান্সার এর মধ্যকার পার্থক্য জেনে নিন

অনেকে টিউমার ও ক্যান্সার কে গুলিয়ে ফেলে। এর মধ্যে যে একটা পার্থক্য আছে তা অনেকে জানে না। বিনাইন টিউমারকে ক্যান্সার বলে না তবে ম্যালিগ্যান্ট টিউমারকে ক্যান্সার বলে।নিচে টিউমার ও ক্যান্সার এর পার্থক্য সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হলোঃ

বিনাইন টিউমারঃ

  • এই টিউমার ম্যালিগ্যান্ট টিউমারের মতো ক্ষতিকর নয়।
  • শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত ছড়ায় না।
  • এটা ধীরে ধীরে বাড়ে।
  • এই টিউমারে তেমন কোন উপসর্গ লক্ষ করা যায় না যতক্ষন না্ ত্বকে অনুভব করা যায়।
  • এটা যদি অস্বস্থির কারণ হয় তাহলে তা অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে নির্মূল করা যায়।
  • এটা অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে একবার নির্মূল করা হলে তা পূনরাবৃত্তি হয়ে আর ফিরে আসে না।
ম্যালিগ্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সারঃ
  • ম্যালিগ্যান্ট ‍টিউমার মারাত্নক। যা ক্যান্সার নামে পরিচিত।
  • এটা শরীরের এক অংশ থেকে অন্য অংশে দ্রুত ছড়ায় ।
  • ম্যালিগ্যান্ট টিউমার গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। যেমনঃব্যাথা, ক্ল্যান্তি,অবসাদ,ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। যদি চিকিৎসা করা না হয় তাহলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরের অন্যান্য অংশে।
  • ম্যালিগ্যান্ট টিউমার অবশ্যই চিকিৎসা করতে হবে  কেমোথেরাপি বা রেডিশন থেরাপি ‍দিয়ে যাতে  ছড়িয়ে পড়া দ্রুত রোধ করা যায়।
  • ম্যালিগ্যান্ট ‍ টিউমার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতার কারণে চিকিৎসা করার পরও শরীরে পুনরাবৃত্তির উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। 
প্রিয় পাঠক টিউমার ও ক্যান্সার এক নয় তা উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি। আশা করি আজকের পর থেকে এ নিয়ে আপনি আর দ্বিধার মধ্যে থাকবেন না। টিউমার ক্যান্সার হতে পারে কিন্তু সকল টিউমার ক্যান্সার নয় বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সঠিক চিকিৎসার জন্য টিউমার ও ক্যান্সার এর অবস্থান বুঝা জরুরী। আমরা ক্যান্সার প্রতিরাধে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। ক্যান্সার বা বিনাইন টিউমারগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। তাছাড়া ইমেজিং কৌশলসমূহ যেমনঃ X-RAY, MRI SCAN, BIOPSY পরীক্ষার  মাধ্যমে এই সকল প্রক্রিয়ায় টিউমার আকার, আকূতি, শরীরের টিউমারের অবস্থান নির্ণয়ে সাহায্য করে। আপনার সচেতনতার মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। টিউমার ও ক্যান্সারের মধ্যকার পার্থক্যটি আপনি বুঝতে পেরেছেন। চলুন আমরা এ বিষয়ে  সমাজের  সকলকে সচেতন করি।আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরণের সুন্দর সুন্দর ব্লগ পোস্ট করা হয়।  আপনার সুস্থতা কামনা করি আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url